
নতুন-পুরাতনের মেলবন্ধনে পরিবহন মার্কেট বা টুকিটাকি চত্বর মুখরিত হয়ে থাকে প্রতিমুহূর্ত।
আনন্দ, আড্ডা বা শিল্প-সাহিত্যে ঘেরা জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় জমে উঠা আসর, কখনো বা প্রেম- ভালোবাসা- দ্রোহের জটিল সমীকরণ- সবগুলোই যেনো ক্যাম্পাস জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ। কখনো গানে গানে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণোচ্ছল উন্মাদনা, কখনো বা ছোটখাটো খেলায় মেতে ওঠে তারুণ্যভরা সবুজ প্রাণ। যেখানে থাকে না কোন দেনাপাওনা-ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার হিসেব।
‘অপরিচিত কিছু মানুষের সাথে পরিবার হয়ে ওঠা এবং সময়ের পরিক্রমায় পরিবার থেকে পুরাতন মুখগুলোর বিদায় নেওয়া’- এই যেনো ক্যাম্পাস জীবনের চিরাচরিত নিয়ম। তবে মতিহারের এই সবুজ চত্ত্বর কখনো থেমে থাকে না। যুগ যুগ ধরে হাজারো স্মৃতির সন্নিবেশে যেনো আরো শক্তিশালী হয়ে ছুটে চলে মতিহারের সবুজ এই উদ্যান।
নতুন-পুরাতনের মেলবন্ধনে সেই পরিবহন মার্কেট বা টুকিটাকি চত্বর মুখরিত হয়ে থাকে প্রতিমুহূর্ত। নতুন সব স্বপ্ন নিয়ে আড্ডা, কখনো বা দলবেঁধে গলা ছেড়ে গাওয়া গানের আসরে চিরজাগ্রত থাকে এসব স্থান।
পরিবহনে বসে গিটার নিয়ে সবাই একসঙ্গে গলা ছেড়ে গান গাওয়া, একটু খুনসুটি, হাসি-ঠাট্টা এ সবকিছুর মধ্যে রয়েছে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আর ভালোবাসার মোহ। চায়ের কাপের সঙ্গে শুরু হয়ে যায় আড্ডা। একঘেয়ে জীবনের ধারায় আড্ডা যে নিদারুণ আবহের সূচনা করে তার ছাপ পড়ে ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণায়।
এমনি কি ছুটির দিনের অবসরেও পুরো ক্যাম্পাসে প্রাণের সঞ্চয় করে এসব স্থান। কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী, সাংবাদিক, সংস্কৃতি কর্মীদের এখানে আড্ডা যেনো এক রুটিন বাঁধা বিষয়। সারাদিনের ব্যস্ততা ফেলে যে যেখানেই থাকুক সন্ধ্যা হলে নিদিষ্ট সময়ে পরিবহনে একে একে জড়ো হয় সবাই। প্রাণ খুলে হাসি তামাশা অথবা গুরুগম্ভীর আলাপচারিতা সবকিছুই চলতে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। আড্ডা বা আলোচনা যেনো এখানকার এক নিত্যনৈমেন্তিক ব্যাপার।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই এনামুল ভাইয়ের দোকানে বসে চা-কফির আসর, সঙ্গে সিগারেট। এখানে প্রখর রোদ, অথবা ঝুম বৃষ্টি, আড্ডা চলে বহমান নদীর মতোই। রাজনৈতিক নেতাদের চলতে থাকে আলাপ আলোচনা। কখনো বা মুখরিত হয়ে উঠে রাজনৈতিক স্লোগানে।
এভাবেই চলে যায় মিনিট-ঘন্টা-সেকেন্ড। বছর ফুরিয়ে আসে। পুরান মুখগুলো বিদায় নেয়। নতুনমুখ দখল করে নেয় পরিবহন চত্বর।