
আমাদের দেশে শিশুদের দুগ্ধপান পূর্ণ দু বছর করা হয়ে থাকে ঐতিহ্যগতভাবে। নারীরা প্রতিদিনই বিভিন্ন কাজে কখনো একা কখনো শিশুকে নিয়ে দীর্ঘসময় বাইরে থাকছেন।
ব্রেস্ট ফিডিং কর্নারের অপ্রতুলতায় মায়েরা উন্মুক্ত স্থানে, মার্কেটে, শপিং মলে শিশুকে দুধপান করানো থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হচ্ছেন, যার ফলস্বরূপ শিশুকে শারীরিক ও মানসিক নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
নিয়মিতভাবে দুধপান করালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে গিয়ে প্রসব পরবর্তী সময়ে মায়েরা যে অবসাদে ভোগেন, তা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারেন। আর শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য যে মায়ের দুধের বিকল্প নেই তা আমরা কমবেশি সবাই জানি।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উন্মুক্ত পরিসরে ব্রেস্ট ফিডিংয়ের সামাজিক ও আইনগত দিকটি একেক রকম। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে চাইল্ড ব্রেস্ট ফিডিং আইন আছে। সেখানে পাবলিক শৌচাগারের সঙ্গে থাকে স্বল্প পরিসরে ডায়াপার পরিবর্তনের জায়গা ও ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থা। সম্প্রতি ভারতেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেও সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সীমিত আকারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের কর্তৃপক্ষগণ যে কোনো উদ্যোগ গ্রহণের সময় যদি নতুন মায়েদের এই চাহিদাকে আমলে নিয়ে নগর ও ভবন পরিকল্পনা করতেন, তবে একজন মাকে তার শিশুকে দুধপান করাতে দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। এক্ষেত্রে অন্য একটি বিষয়ও মনে রাখা জরুরি যে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে মায়েরা যাতে নিরাপদে দুধপান করাতে পারেন সেটাও নিশ্চিত করা। কেননা মাতৃদুগ্ধ মানেই হচ্ছে শিশুর সুস্থতা আর সুস্থ শিশু মানেই সুস্থ আগামী প্রজন্ম।
ছৈয়দ আহমদ তানশীর উদ্দীন
নার্সিং কর্মকর্তা, জেলা সদর হাসপাতাল, কক্সবাজার।