গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতি 'পান্তা ভাতে ঘি ঢালা'র মতো

সৈয়দ শাহাদাত হোসাইন
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:০০

সৈয়দ শাহাদাত হোসাইন। সহকারি অধ্যাপক, বাকলিয়া শহিদ এন এম এম জে ডিগ্রি কলেজ, চট্টগ্রাম।
আমদের দেশে শিক্ষার জন্য টেবিলে বসে অনেক কিছুর সিদ্বান্ত হয় কিন্ত বাস্তবে তার কতোটুকু প্রয়োগ হলো সেটা আর খুঁজে দেখা হয় না। কমিটি হয়, মিটিং হয়, অর্থের অপচয় হয় কিন্ত সঠিকভাবে তার বিস্তরণ হয় না। ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষ হতে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীর জন্য গণিত বিষয়ে সৃজনশীল চালু করার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ।
যারা এ বিষয়ে পাঠদান করবেন তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে সৃজনশীল চালুর অনেকদিন পর। যারা গণিত পড়াবেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেই মানের শিক্ষক নাই বললেই চলে। শিক্ষক ছাত্রকে পাঠদান করিয়ে তার ফলাফল নেয়ার একটি যুগোপযোগী মাধ্যম সৃজনশীল পদ্ধতি। কিন্ত সিলেবাস এবং পাঠদানের সাথে অসংগতি রেখে গণিতের সৃজণশীল চালু করা পান্থা ভাতে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো অবস্থা।
নির্দেশনা অনুযায়ী, ২৫ নম্বরের নৈর্বাচনিক প্রশ্নে প্রতিটির জন্য যেখানে একমিনিট বরাদ্দ সেখানে তারা অংকের উত্তর মিলিয়ে দেখার জন্য কোন রাফ কাগজের ব্যবস্থা থাকবে কিনা তারও কোন নির্দেশনা নেই। একজন ছাত্রের কি তাহলে তার অংকের উত্তর মুখস্ত থাকবে আর পরীক্ষার হলে গিয়ে গদগদ করে সঠিক উত্তরে বৃত্ত ভরাট করবেন, এটি কোন্ যুক্তিতে পরে জানি না।
তাত্ত্বিক প্রশ্ন ৪০ নম্বরের জন্য মাত্র চারটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে তার জন্য ছাত্রছাত্রী কমপক্ষে ২০টি অধ্যায় পড়তে হবে। সেখানে সিলেবাস কি আরো কমিয়ে দেয়া যায় না? একজন ছাত্র বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজ জীবনে পা রাখলো তার জন্য সিলেবাসের এত বড় বোঝা চাপিয়ে দেয়াটা কি যুক্তিযুক্ত হয়েছে?
গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতি করাটা হচ্ছে পান্তা ভাতে ঘি ঢালার মত অবস্থা। ভবিষ্যৎ বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য এটি একটি অন্যতম বাঁধা হিসেবে কাজ করবে বলে অনেকের ধারণা। প্রিয় পাঠক আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখছি- গণিতের সৃজনশীল থাকাটা কতোটুকু যুক্তিযুক্ত। ভবিষ্যতে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে উচ্চতর গণিত বিষয়ে সৃজনশীল পদ্বতি থাকবে কি, থাকবে না তার সিদ্বান্তে উপনিত হওয়া এখন সময়ের দাবি।
লেখক: সৈয়দ শাহাদাত হোসাইন।
সহকারি অধ্যাপক,
বাকলিয়া শহিদ এন এম এম জে ডিগ্রি কলেজ, চট্টগ্রাম।