Logo
×

Follow Us

চিঠি

ঐক্যের অভাবে শিক্ষকদের আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ

Icon

সৈয়দ শাহাদাত হোসাইন

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৪

ঐক্যের অভাবে শিক্ষকদের আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ

দেশের বৃহত্তর পেশাজীবী আন্দোলন বেসরকারি শিক্ষকদের আন্দোলন। তবে দাবি আদায়ের যেকোনো আন্দোলন সার্থক করতে হলে এর মূলমন্ত্র হলো ঐক্য। যেটা বেসরকারি শিক্ষকদের আন্দোলনে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। 

সাধারণত মিল ফ্যাক্টরি কিংবা কারখানা শ্রমিকদের মধ্যে যে ঐক্য দেখা যায়, মোটরযান শ্রমিকদের মধ্যে যে ঐক্য দেখা যায় সেই অনুপাতে শিক্ষকদের মধ্যে খুব একটা ঐক্য দেখা যায় না। তাই আন্দোলনেও শিক্ষকদের ঐক্য নাই বললেই চলে। এরমধ্যে অনেক শিক্ষক মাঠে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ না করে ঘরে বসে আন্দোলনের ফল ভোগ করতে চায়। তারা মনে করে সুযোগ-সুবিধা সবাই পাইলে তারাও পাবেন। কিন্তু তার ভুলে গেছেন যে আন্দোলনের মাঠে সবার দাবি এক না। কারণ, অনেক শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠান এমপিওয়ের জন্য আন্দোলন করছে। অনেকে ডিগ্রি-অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ে এমপিওর আন্দোলন করছে। কেউ পুরো শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের আন্দোলন করছে। আবার অনেকেই চাকরি জাতীয়করণের আন্দোলন করছে। কেউ কেউ আবার বাড়ি ভাড়া এবং মেডিকেল ভাতাসহ যাবতীয় ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছে। 

আন্দোলনের মাঠে বিশাল জনশক্তি থাকার পরেও নানা রকম দাবির কারণে শুধুমাত্র একটি দাবিতে এখনো ঐক্যেবদ্ধ হতে পারেনি শিক্ষকরা সম্ভাবত পারবেও না। আর এ সুযোগে শিক্ষকদের এসব গ্রুপ ভিত্তিক আন্দোলনের সুযোগ নিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে গঠিত সরকার ও আমলারা। 

বেতন স্কেলের পঞ্চাশ ভাগ থেকে সত্তর ভাগ, সত্তর হতে আশি ভাগ পরবর্তিতে বেতন স্কেলের শতভাগ অর্জন করেছিলো অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। একশো টাকা মেডিকেল ভাতা পাঁচ গুণ বাড়িয়ে পাঁচশো টাকা, দুইশো টাকা বাড়ি ভাড়া তাও পাঁচ গুণ বাড়িয়ে একহাজার টাকা করা হয়েছে। এটি বর্তমান যুগে হাস্যকর ছাড়া আর কি? 

অনৈক্যের সুযোগে বেসরকারি শিক্ষকদের অধিকার আদায় মাঝপথে ভেস্তে গেছে অনেকবার। কিছু সরকারি মদদপুষ্ট শিক্ষক নেতাও ছিলেন যারা আতাঁত করে অন্যায়ভাবে শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিগুলোকে অন্ধকারে রেখে তাদের ব্যাক্তিগত সুযোগ-সুবিধা হাসিলের পাঁয়তারা করেছেন। সাধারণ শিক্ষকগণ তাদের কর্মকাণ্ড চিহ্নিত করে রেখেছেন। আন্দোলনের মাঠে শিক্ষকদের দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য গ্রহণযোগ্য শিক্ষক সংগঠন এখনো খুঁজে পায়নি। কারণ, অনেক শিক্ষক সংগঠনের মূল নেতৃত্ব অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত। অবসর শিক্ষকগণ নিজেরাও বুঝতে চান না মাঠে তাদের কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই।

সারা দেশের পাঁচ লাখেরও অধিক বেসরকারি শিক্ষকগণ যদি দাবি নিয়ে মাঠে নেমে আসে তাহলে সরকার দাবি মেনে নিতে বাধ্য। সাধারণ শিক্ষকদের অন্তত নিজেদের জন্য এই আন্দোলনে শরিক হওয়া খুবই জরুরি। বর্তমানে বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন শিক্ষার ক্ষেত্রে আরো বৈষম্য বাড়াবে বলে আমি মনে করি। একযোগে জাতীয়করণের দাবিতে সব মতের ঊর্ধ্বে এসে দেশের সকল শিক্ষক সংগঠনকে অভিন্ন কর্মসূচি দিতে হবে, তাহলে কেবল বেসরকারি শিক্ষকদের আন্দোলন সফল হবে। না হলে এই আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। 

লেখক: সৈয়দ শাহাদাত হোসাইন
সহকারী অধ্যাপক,
বাকলিয়া শহিদ এন এম এম জে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫