Logo
×

Follow Us

চিঠি

কত অবহেলা সইবে সাত কলেজ?

Icon

মো. সায়েদ আফ্রিদী

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২১, ১৮:৪২

কত অবহেলা সইবে সাত কলেজ?

কত অবহেলা সইবে সাত কলেজ?

শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হচ্ছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। কলেজগুলোর শিক্ষার মান বরাবরই ভালো ছিল। কিন্তু অধিভুক্ত হওয়ার পরেই শুরু হয় শিক্ষার্থীদের হতাশা। কারণ তীব্র সেশনজটসহ নানান সমস্যা।

সাত কলেজের আর্থিক সমস্ত বিষয় ঢাবির অধীনে, কিন্তু ঢাবি থেকে কোনো রকম সার্ভিস দেওয়া হয় না বরং তার বদলে জোটে অবহেলা। সেশনজট ছাড়াও প্রশ্ন তৈরিতে অনিয়ম, ফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা এবং যে কোনো সমস্যা সমাধানে সুনির্দিষ্ট উত্তর না পাওয়াসহ আরো সমস্যার সম্মুখীন আমরা। ফলে বহু শিক্ষার্থী প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চলে গিয়েছে, নয়তো পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

করোনাকালীন এ দুঃসময়ে সাত কলেজ সবচেয়ে পিছিয়ে। পুরো শিক্ষাব্যবস্থা স্থবির হয়ে আছে। কোনো বিভাগের পরীক্ষা হচ্ছে না। একেক বর্ষে শিক্ষার্থীরা তিন-চার বছর ধরে আটকে আছে। ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীর এখন অনার্স শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করে বসে আছে। এ বিষয়ে ঢাবির কোনো উত্তর নেই। নেই পরিকল্পনা। করোনাকালে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী চায় অ্যাসাইনমেন্ট অথবা অনলাইনে তাদের পরীক্ষা হোক। অন্তত তাদের বর্ষ পরিবর্তন হোক। যেখানে এসএসসি-এইচএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো অটোপ্রমোশন দেওয়া যায়, সেখানে অনার্সে একজন শিক্ষার্থী কেন আটকে থাকবে?

একজন শিক্ষার্থীর সামনে আরো কয়েকটা বর্ষ থাকবে। মূল্যায়ন করার মতো অনেক সুযোগ পাবেন শিক্ষক তথা ডিপার্টমেন্ট, কিন্তু সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষীয় কোনো পরিকল্পনা নেই। যদিও সাত কলেজের কোনো কার্যকলাপ এখন পর্যন্ত পরিকল্পনামাফিক হয়নি। সর্বশেষ, সারা দেশের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সেখানেও সাত কলেজের ২৩ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীর কোনো পাত্তা নেই। কেউ নিতে চায় না তাদের দায়িত্ব। এখন পর্যন্ত কেউ তালিকা নেয়নি। ইউজিসি বলে তাদের এ সুযোগ দেওয়ার এখতিয়ার নেই। ঢাবির বক্তব্য—প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান তাদের টিকা ম্যানেজ করে নেবে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে থেকেও কোনো আশার বাণী পাওয়া যায়নি। আর সাত কলেজের সমন্বয়ক বলেন আলোচনা চলছে। আদৌ টিকা পাবে কি না সেটা সাত কলেজ প্রশাসনও জানে না এখন অব্দি।

বলা হয় অধিভুক্তর পর শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়েছে। এমন কথা একদমই নৈতিকতা বিবর্জিত কথা বলে মনে করি। সেইসঙ্গে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কাছে নিজেকে হেয় প্রতিপন্ন ছাড়া আর কী ? শিক্ষকরা কিসের আশায় ঢাবির এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন না? তাঁরা তো ছাত্রদের যৌক্তিক দাবিতে তাদের পাশে থাকতে পারেন। মিডিয়ার সাত কলেজের সংকট নিয়ে কথা বলতে পারেন? তাঁরাও যদি শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়ান, তাহলে ধরে নিতে হবে সাত কলেজের কোনো অভিভাবক নেই এবং সাত কলেজের শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের ভালো চান না।

এভাবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে, ঠিক তেমনি শিক্ষার্থীরাও হারায় তাদের মনোবল। অবিলম্বে সাত কলেজের সমস্ত সমস্যা দূর হোক এবং শিক্ষার্থীরা ন্যায্য অধিকার হোক প্রতিষ্ঠিত।

-শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫