
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ফাইল ছবি
সরকারি চাকরির আবেদনে সনদ সত্যায়নের প্রয়োজন নেই বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব কমিটির সুপারিশ সাত বছরেও কেন বাস্তবায়ন হয়নি, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর মিলছে না।
গত ১১ জুন জাতীয় একটি দৈনিকের খবর থেকে জানা যায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব কমিটি ২০১৫ সালের সুপারিশে বলেছিল, সরকারি চাকরির আবেদনে সত্যায়ন থাকবে না। এছাড়া ধীরে ধীরে ভর্তি, ঋণ গ্রহণ, ব্যাংক হিসাব খোলাসহ বিভিন্ন কাজে সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়নের বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার কথাও সে সময় ভাবা হয়েছিল।
সেই ভাবনা এখনো ভাবনার মধ্যে আছে। বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যখন সরকারের সব কাজকর্ম খাতাপত্রে সম্পাদিত হতো, তখন সত্যায়নের প্রয়োজন ছিল। কোনো অফিসে চাকরির আবেদন করলে শিক্ষা বা অন্য সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হতো। কিন্তু যখন ডিজিটাল বাংলাদেশে উত্তরণের কথা সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে আমরা অহরহ শুনে আসছি, তখন এর যৌক্তিকতা থাকার কোনো কারণ নেই। সত্যায়নের পক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় যে নকল সনদ দেখিয়েও অনেকে আবেদন করে থাকেন। এই ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য তা বলা যাবে না। কিন্তু যখন অর্থের বিনিময়ে ভুয়া সিল মেরে সনদ ও কাগজপত্র সত্যায়ন করা হয় এবং তা দিয়ে কাজ হয়, তখন সত্যায়ন বিষয়টি নিছক আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আর কিছু বিবেচনা করার সুযোগ নেই।
নীলক্ষেতে সামান্য অর্থের বিনিময়ে যেহেতু যেকোনো সনদ সত্যায়ন করা যায়, তাই অনেকেই এখন আর যথাযথ সত্যায়নের পথ ধরেন না। সরকার চাইলেই প্রত্যেক নাগরিকের সব তথ্য ডেটাবেজে ধারণ করতে পারে এবং আবেদনপত্রে দেওয়া তার তথ্য কর্তৃপক্ষ সহজে যাচাই-বাছাই করে নিতে পারে।
আমরা আশা করব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব কমিটির সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন করবে। সরকারিভাবে আবেদনের সাথে সনদের সত্যায়িত কপির বিষয়টি বাদ দিলে বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে সেই নীতি অনুসরণ করতে তাগিদ দেওয়া যাবে। কেবল শিক্ষাসনদ নয়, জীবনের সব সনদের ক্ষেত্রে অভিন্ন রীতি চালু হওয়া প্রয়োজন। কেবল মুখে বললেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে না, কাজেই তার প্রমাণ দিতে হবে।
জাফরুল ইসলাম, শিক্ষার্থী ঢাকা