
ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। ফাইল ছবি
চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বন্ধের উপায় খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এখনো তা বন্ধ করা যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, এ কাজ করছে মূলত নেশাগ্রস্ত কেউ। এছাড়া কোনো কোনো শিশু-কিশোর খেলার ছলেই এ নির্মম কাজে অংশ নিচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় আহত ব্যক্তির দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। বস্তুত এ ধরনের ঘটনার পর আহত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার কাজটি বেশ জটিল। এজন্য এমন ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব জমি এবং এর আশপাশের প্রতি ইঞ্চি জায়গা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের একক প্রচেষ্টায় নজরদারিতে রাখার কাজটি কঠিন। ঢিল ছোড়া হয় পার্শ্ববর্তী কোনো জায়গা থেকে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কাজে অংশগ্রহণ না করলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় অপরাধীকে শনাক্ত করার কাজটি বেশ কঠিন।
জানা যায়, পাথরের আঘাতে ট্রেনের যে ক্ষতি হয় তা সারাতেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বিপুল অর্থ খরচ করতে হয়। রেললাইনের দুপাশে কিছু অংশে যে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা ১৪৪ ধারা জারি থাকে, তা সবাইকে জানাতে পদক্ষেপ নিতে হবে। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ফলে অপরাধীকে কী শাস্তি ভোগ করতে হবে, তা-ও জনগণকে বিস্তারিত জানানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ কাজে ভূমিকা রাখতে হবে।
একসময় মানুষ উৎসবের আমেজে ট্রেনে যাতায়াত করত। ট্রেনকে ঘিরে কিছু অসাধু চক্রের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পালটে গেছে সেই দৃশ্যপট। দেশের মানুষ আগের তুলনায় সচেতন হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এরপরও ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বাড়ছে কেন? হঠাৎ মানুষের মধ্যে এমন সহিংস আচরণের পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীরা এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। মানুষকে এমন আচরণ থেকে নিবৃত্ত করতে এ বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আমরা আশা করব, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের রহস্য খুঁজে বের করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শরিফুল হক
আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম