Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

পরিবারের সুখের চাবি ‘ভারসাম্য’

Icon

আফরোজা চৈতী

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১৫

পরিবারের সুখের চাবি ‘ভারসাম্য’

সুখি পরিবার। প্রতীকী ছবি

পরিবার- বিশ্বাস, আস্থা , নির্ভরতা ও ভালোবাসার নাম। দিনশেষে যত ঝড়ঝাপটাই আসুক পরিবারের মানুষগুলোর ভালোবাসা আর মমতার কাছে সেগুলো পরাজিত হয়। কিন্তু যদি পরিবারে নেমে আসে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, তা হলে এর ফল কখনো ভালো হয় না।

সম্পর্কের গুরুত্ব যার কাছে কম তার হাতেই বেশি ক্ষমতা চলে আসে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গাটা শুধু একজনের দখলে থেকে যায়। তবে দীর্ঘদিন এভাবে চলা নিশ্চয়ই সম্ভব নয়। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙবেই। নিজেকে কেউ গুরুত্বহীন করে রাখতে পারে কত দিন। 

বাংলাদেশের অনেক যৌথ পরিবারেই ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার কারণে নারীকে মানবেতর জীবন কাটাতে হয়। যদি সে মোটা বেতনে চাকরি করে সংসারে অর্থের জোগান দিতে পারে তবে সে ক্ষেত্রে তার প্রতি পরিবার কিছুটা নমনীয় থাকে। তার মানে কী দাঁড়াচ্ছে? পরিবারে ক্ষমতার ভারসাম্য অনেকটাই নির্ভর করে আর্থিক সক্ষমতার উপর। 

তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কারণে নারী অর্থ আয় করলেও তাকেই ঘরের কাজের দায়িত্বটাও পালন করতে হয় অথবা সবার মন জুগিয়েও চলতে হয়। সাধারণত পরিবারের পুরুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেখানে নারীর সিদ্ধান্ত ও ক্ষমতা গৃহস্থালি নানা কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পরিবারের বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় থাকেন ক্ষমতাবান কর্তা। তবে আধুনিক একক পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দুজনই যেখানে উপার্জন করেন সেখানে তারা একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেন। 

ক্ষমতা যার হাতেই থাকুক পরিবারে তার সমতার প্রয়োজন। যাতে অন্য কোনো সদস্য নিজেকে হেয় বা কম যোগ্যতাসম্পন্ন বা কম গুরুত্বপূর্ণ না মনে করেন। দিন শেষে যিনি ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকেন তিনি অন্যের মতামত ও জীবনাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন।

কেননা পরিবার একটি গাছের মতো সেখানে প্রতিটি ডাল, পাতা, ফুল ও ফলের নিজস্বতা রয়েছে। একটি বৃক্ষের ফল ও ফুল উৎপাদনের জন্য যেমন সঠিক জল, হাওয়া ও রোদের প্রয়োজন ঠিক তেমনি পরিবারে সবার মতামত ও গুরুত্বকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে বিবেচনায় আনাটা জরুরি। পারিবারিক ক্ষমতার সমতা থাকা প্রয়োজন। আর এ ক্ষেত্রে এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি যিনি অবদান রাখতে পারেন তিনি হলেন বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি। 

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, পারিবারিক ক্ষমতা যখন নির্দিষ্টভাবে কিছু সদস্যদের সুবিধা ও অসুবিধাকে প্রাধান্য দেয় ও অন্যদের সেখানে কোনো ভূমিকা না থাকে তখন তারা হীনমন্যতায় ভোগেন। তারা তখন পরিবারের সুবিধাবলয় থেকে বের হয়ে নিজের মতো জীবনযাপনকে বেছে নেন। সেটা সেই পরিবারের ভাঙনের জন্য অনেকখানিই দায়ী।

পরিবার একটি ভালোবাসা ও মমতার আশ্রয়; কিন্তু সেই আশ্রয়টি যখন অবহেলা, তাচ্ছিল্য, দুর্ব্যবহার ও অসম্মান দ্বারা কোনো সদস্যের জন্য টর্চার সেলে পরিণত হয়, তখন সেটা আর আশ্রয় থাকে না। তাই পরিবারে ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে শুরু করে সব জায়গায় ভারসাম্য জরুরি। কারণ মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তো শুধু ক্ষমতায় সীমাবদ্ধ নয়। তবে বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, সম্মান এই সবের কাছেই হেরে যাবে ক্ষমতার লড়াই।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫