
প্রতীকী ছবি
ঘুরতে যাওয়া মানেই একরাশ খুশি, নতুন উদ্যম নিয়ে কাজে ফেরা। এতে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। তবে ঘুরতে যাওয়ার আগে মন থেকে সব ধরনের ভয়-চিন্তা বাদ দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুরতে যাওয়া উচিত। পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে ঘুরতে যাওয়া এক রকম, আর একা ঘুরতে যাওয়ার মজা সম্পূর্ণ আলাদা। একটা আলাদা উত্তেজনা থাকে। নিজেকে অনেকটা বেশি সময় দেওয়া যায়, চেনা যায়।
বিদেশে একা ঘুরতে যাওয়ার চল থাকলেও আমাদের দেশে আগে একা কোথাও যাওয়ার নাম শুনলেই আঁতকে উঠতেন সবাই। একটা সময় পর্যন্ত ঘোরার সংজ্ঞাটা অন্য রকম ছিল। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে, নিজেকে চিনতে নতুন প্রজন্ম ইদানীং ‘একলা চলো’ পন্থাই বেছে নিচ্ছে। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে তা কতটা নিরাপদ, বা একা কোথাও ঘুরতে গেলে কোন কোন বিষয়ে পারদর্শী হওয়া জরুরি- সে সব কিছু আগে থেকে জেনে রাখাই ভালো।
- ঘুরতে গিয়ে নানা পোশাক পরে, মানানসই সাজগোজ করে ছবি তুলবেন। কিন্তু তার জন্য একগাদা জিনিস ব্যাগে পুরে নিলে বইতে হবে নিজেকেই। ওই ভারী ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পাহাড়ে উঠতে বা নামতে কষ্ট হতে পারে। ট্রলি বা স্যুটকেস না নিয়ে, দুই কাঁধে নেওয়া যায় এমন ব্যাগ নিলেই ভালো।
যেখানেই যান না কেন, আপনার আশপাশে কারা ঘোরাফেরা করছে, সেই সম্পর্কে সচেতন থাকুন। খুব বেশি বন্ধুসুলভ বা একেবারেই কথা বলেন না এমন সহযাত্রীদের এড়িয়ে চলাই ভালো। ট্রেনে বা বাসে যাতায়াতের সময় নিজের জিনিসপত্র রেখে অন্য কোথাও যাবেন না। শৌচাগারে গেলেও টাকার ব্যাগ বা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সঙ্গে রাখার চেষ্টা করুন।
দেশ বা বিদেশে, যেখানেই ঘুরতে যান না কেন সেই জায়গা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তবেই ঘুরতে যান। বিশেষত সেখানকার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা করতে গেলে ওই অঞ্চলের ইতিহাস জেনে যাওয়া জরুরি। এ ছাড়াও সেখানে দেখার বা ঘোরার কি জায়গা আছে, সে সব জেনে নিয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন।
বাইরে ঘুরতে গেলে পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতেই হবে। সঙ্গে প্রতিটি নথির ফটোকপি করে রাখা ভালো। হোটেল, বিমান বা ট্রেনের টিকিটেরও কপি সঙ্গে রাখুন এবং বাড়িতে একটি রেখে আসতে পারেন।
কোথায় ঘুরতে যাচ্ছেন বা কী করবেন, তার বিস্তারিত বিবরণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে না ধরাই ভালো। ঘুরতে গিয়ে কারও সঙ্গে নতুন আলাপ হলেও তার সঙ্গে নিজের খুঁটিনাটি তথ্য জানাবেন না। ভ্রমণ বিষয়ে অবশ্যই বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের জানাবেন এবং ফোন, ভিডিও চ্যাট বা ইমেলের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবেন।
প্রথম সোলো ট্রিপে খুব বেশি দূরে যাবেন না। কাছাকাছি কোথাও এবং ৩-৪ দিনের প্ল্যান দিয়েই সোলো ট্রিপ শুরু করুন। ক্রমে এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে বড় ট্রিপ প্ল্যান করবেন।
যতই ভালো করে প্ল্যান করুন, দেখা যায় যতটা ভেবেছিলেন তার থেকে বেশি খরচ হচ্ছে। তাই টাকার ঘাটতি যাতে না হয় সে জন্য সঙ্গে ইমার্জেন্সি ফান্ড রাখুন। কেবল টাকা ফুরিয়ে গেলে তবেই সেখান থেকে টাকা নেবেন।
বর্তমান সময়ে ঘরে-বাইরে নারীরা কাটান ব্যস্ত সময়, সঙ্গে থাকে হাজার দায়িত্ব। তাই কয়েক দিন ছুটির সময় হোক নির্ভেজাল ছুটির জন্যই। ল্যাপটপ, মোবাইল স্ক্রিন থেকে চোখ আর মন দুইই থাকুক অনেক দূরে। তাহলেই সোলো ট্রিপ এনে দেবে প্রশান্তি ও আনন্দ।