Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

গরমে ঘোল খান

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ২১:১৫

গরমে ঘোল খান

ঘোল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলায় ‘ঘোল খাওয়া’র অর্থ যতই নেতিবাচক হোক না কেন এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত ভাল ও উপকারী একটি পানীয়। নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর ঘোল গরমে আমাদের দেহকে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে। ঘোলকে ইংরেজিতে বলে ‘বাটারমিল্ক’। 

ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ভিটামিন বি-১২ সমৃদ্ধ ঘোলে আছে ল্যাক্টিক অ্যাসিড। ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল’ উপাদান থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

ঘোল প্রোটিনের খুব ভালো উৎস যা দেহের পেশি গঠন, ত্বক ও হাড়ের জন্য ভালো কাজ করে। এতে দুধের চেয়ে ক্যালরির মাত্রা কম। আর দিনের যে কোনো সময়ে গ্রহণ করা যায়।

অ্যাসিডিটি কমায়: প্রতিবেলার খাওয়ার পরে অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুগে থাকলে নিয়মিত ঘোল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে উপকার পাওয়া যায়।

ঘোল মূলত দই নির্ভর পানীয় যা অ্যাসিডি কমাতে খুব ভালো কাজ করে।

এতে সামান্য আদা, জিরা গুঁড়া ও ধনে পাতা যোগ করে পেটের অস্বস্তি কমানো যায়।

হজমে সহায়তা করে: ঘোল হজম সমস্যার সমাধান করতে পারে। কারণ এতে থাকে স্বাস্থ্যকর ব্যাক্টেরিয়া ও ল্যাক্টেক অ্যাসিড যা হজমে সহায়তা করে ও বিপাক বাড়ায়।

দেহ ঠাণ্ডা রাখে বলে ঘোল খাওয়া শরীরের তাপমাত্রা কমায়। পুদিনা পাতা সমৃদ্ধ ঘোল খাওয়া পেট পরিষ্কার করতে সহায়তা ক। আর উষ্ণতার কারণে হওয়া ক্লান্তিভাব কমাতে পারে।

হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখে: ঘোলে আছে ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড় মজবুত রাখতে সহায়তা করে। শরীর, হৃদর ও পেশি সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন।

ক্যালসিয়াম পেশিটান কমাতে ও শক্তি বাড়াতে খুব ভালো কাজ করে। প্রতিদিন এক গ্লাস ঘোল খাওয়া দেহের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করে।

এক গ্লাস বা ১০০ মি.লি. ঘোলে সাধারণত ১১৬ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম থাকে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: ‘মিল্ক ফ্যাট গ্লোবিউল মেম্ব্রেন (এমএফজিএম)’ ঘোল থেকে ননী কাটার সময় নিঃসৃত হয়। এটা উচ্চ মাত্রায় বায়ো অ্যাক্টিভ প্রোটিন সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।

এমএফজিএম’য়ে রয়েছে ক্যান্সার ও উচ্চ রক্তচাপরোধী উপাদান। নিয়মিত ঘোল খাওয়া হজমে সহায়তা করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। চাইলে সংরক্ষক ছাড়া ভেষজ ঘোলও খাওয়া যেতে পারে।

পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে: দই ও পানি দিয়ে তৈরি করা হয় ঘোল। এটা পটাসিয়ামের মতো ইলেক্ট্রোলাইট ও ৯০ শতাংশ পানি সমৃদ্ধ। যা দেহের আর্দ্রতার মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে।

গরমের হাত থেকে বাঁচতে ও শরীর ঠাণ্ডা করে কিছুটা স্বস্তি পেতে পুদিনা যোগ করে ঘোল খাওয়া যেতে পারে।

বিষাক্ততা দূর করতে: ঘোলে আছে রিভোফ্লাভিন, যা খাবারকে ভেঙে শক্তি যোগায়। এটা রক্তের লোহিত কণিকা বৃদ্ধি করে। ঘোলে থাকা রিভোফ্লাবিন হজম সহায়ক হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। ফলে যকৃতের কার্যকারিতা বাড়ে, যা দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: ঘোল ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন ও অন্যান্য খনিজ উপাদানে ভরপুর। এতে চর্বি ও ক্যালরির মাত্রা কম। খাবারের আগে বা পরে যে কোনো সময়েই ঘোল খাবার তালিকায় যোগ করা যায়।

ঘোলের পুষ্টিগুণ: ঘোলে রয়েছে প্রোটিন যা ত্বক ভালো রাখে, পেশি গঠন করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

এক কাপ বা ২৫৪ মি.লি. ঘোলে থাকে ৮ গ্রাম প্রোটিন, তিন গ্রাম চর্বি, ৯৮ কি.লো ক্যালোরি, শূন্য আঁশ ও ১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেইট।

এছাড়াও, বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন ঘোলে রয়েছে পটাসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, প্রোবায়োটিক্স ও ফসফরাস।

ঘোল তৈরির পন্থা

উপকরণ: দুই কাপ দই, চার কাপ পানি, সরিষা বীজ এক চা-চামচ, ১০-১২টি কারিপাতা বা পুদিনা পাতা, দুতিনটা কাঁচা মরিচ কুচি, এক চা-চামচ আদা কুচি, স্বাদ মতো লবণ।

পদ্ধতি: একটা পাত্রে দই ও পানি নিয়ে ভালো মতো মিশিয়ে নিতে হবে। একটা পাত্রে তেল গরম করে তাতে সরিষার বীজ ভেজে নিন।

এখন এতে কারি বা পুদিনা পাতা, কাঁচা মরিচ ও আদা যোগ করে ঘ্রাণ বের হওয়ায় জন্য ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত তাপ প্রয়োগ করতে হবে।

এরপরে এটা দই-পানির মিশ্রণে মিশিয়ে স্বাদ মতো লবণ যোগ করে পরিবেশন করতে পারেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫