
প্রতীকী ছবি
গরমে শরীর ঠান্ডা রাখা খুব জরুরি। এই সময়ের তাপপ্রবাহ শরীরের ভীষণ ক্ষতি করে। গরমে স্বস্তি পেতে এসির জুড়ি নেই। গরমে শীতল হাওয়ার প্রশান্তির ছোঁয়া এনে দেয়। গরম থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই বাসায় এসি ব্যবহার করে থাকেন। অনেকেই এসি কেনার কথা ভাবছেন কিন্তু তবে এসি ব্যবহারের কারণে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসা নিয়ে সবার মনে ভয় থাকে।
কিছু নিয়ম মেনে যদি এসি ব্যবহার করা হয় তবে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে। যেমন:
১. ইনভার্টার এসি ব্যবহার করতে হবে। ইনভার্টার এসি ব্যবহারে বিল কম আসে। ইনভার্টার এসির বড় সুবিধা হচ্ছে ইনভার্টার এসির কমপ্রেসর মোটরটি প্রয়োজনমতো নিজস্ব চলার গতি পরিবর্তন করতে পারে। ইনভার্টার এসিতে এমন একটি সেন্সর থাকে, যা ঘরের তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে কমপ্রেসর পুরোপুরি বন্ধ না করে, মোটরটির চলার গতি কমিয়ে দেয়। এতে বিদ্যুৎ খরচ কম আসে। পিক আওয়ারে (বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা) বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে অফ-পিক আওয়ারে যেকোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার বিল কমানোর একটি কার্যকর কৌশল।
২. এসি চালানোর আগে অল্প কিছু সময়ের জন্য ঘরের দরজা-জানলা খুলে রাখতে হবে এবং পাখাটাও চালিয়ে দিতে হবে। এই দুটি কাজ করে রাখলে, ঘরের ভেন্টিলেশন প্রক্রিয়া আরও ভাল হবে এবং গরমে যে ঘর তেতে থাকে, সেই হিটও বেরিয়ে যেতে পারবে। পাশাপাশি এই কাজ করে রাখলে, এসি তার কুলিং সিস্টেম তাড়াতাড়ি চালু করতে সক্ষম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০ মিনিট ধরে ঘরের জানলা-দরজা খুলে, পাখা চালিয়ে রাখুন। পরে যখন দরজা-জানলা বন্ধ করে আবার এসি চালাবেন, তখন ঘরটি ঠান্ডা করতে আপনার এসি মাত্র আধ ঘণ্টা বা তারও কম সময় নেবে।
৩. এসি অন করে তার তাপমাত্রা অন্তত ২০ মিনিটের জন্য ১৬ ডিগ্রিতে কুইক কুল মোডে রেখে তারপরে সেটিকে ২৪ ডিগ্রিতে সেট করতে হবে। এর ফলে ইলেকট্রিক বিল কম আসবে।
ব্যুরো অফ এনার্জি এফিশিয়েন্সি-র একটি গবেষণা অনুযায়ী, এসি-র তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রিতে রাখা সবথেকে ভাল। কারণ, এই তাপমাত্রা মানব শরীরের জন্য স্বস্তিদায়ক। শুধু তাই নয়। রিসার্চে আরও বলা হচ্ছে, এসি-র তাপমাত্রা যত বাড়ানো হয়, প্রতি ডিগ্রিতে ৬ শতাংশ করে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। তাই আপনার এসি ১৮ ডিগ্রির পরিবর্তে ২৪ ডিগ্রিতে চালিয়ে রাখলে ইলেকট্রিক বিল অনেকটাই বাঁচাতে পারবেন।
৪. প্রায় সব এসি মডেলেই রয়েছে টাইমার সেট করে রাখার সুবিধা। টাইমার সেট করে রাখলে নির্দিষ্ট সময়ে এসির স্যুইচ অফ করে দিতে পারে। এতে বিদ্যুৎ খরচ সামান্য হলেও কম করা যায়। অনেকেই আছেন যারা রাতে ঘুমানোর সময় এসি চালিয়ে টাইমার সেট করে রাখেন, যাতে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে মেশিনের কম্প্রেসর বন্ধ হয়ে যায় এবং ইলেকট্রিক বিলও কম করা যায়।
৫. ঘরে টিভি, ফ্রিজ ও অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থাকলে তা থেকে তাপ নির্গত হয়। রাতে এসি চালানোর আগে এই ধরনের ডিভাইস বন্ধ করে রাখলে কম বিদ্যুৎ খরচ হবে।
৬. দুই থেকে তিন মাস অন্তর এসি সার্ভিসিং করানো অত্যন্ত জরুরি। এতে এসি যেমন ঠান্ডা ভাল হবে, তেমনই আবার ইলেকট্রিক বিলও একটু সাশ্রয় করতে পারবেন। এসি খুব বেশি পুরনো হয়ে গেলে তা চালানো ঠিক নয়। কারণ পুরনো এসিগুলো নতুনের মত খুব বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয় না।
৭. অনেক দিন ধরে ব্যবহার করার ফলে এসি-র ফিল্টারে অনেক ময়লা, ঝুল জমে থাকে। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে ফিল্টার পরিষ্কার রাখা জরুরি। ১০ দিন অন্তর অন্তর করলে খুব ভাল হয়।
৮. ঘরের তাপমাত্রা যত বেশি হবে কুলার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ঘর ঠান্ডা করতে তত বেশি সময় নেবে। সে ক্ষেত্রে বেশি সময় ধরে এসি চালানোর প্রয়োজন পড়ে। বিলও বাড়তে থাকে চড়চড় করে। ঘরে মোটা পর্দা লাগালে বাইরের গরম হাওয়া ও আলো কম আসবে। ফলে ঘরও তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হবে।