Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

হেসে উঠুক নতুন দেয়াল পর্দায়-আলোয়

Icon

রুবানা শারমীন

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:৪৩

হেসে উঠুক নতুন দেয়াল পর্দায়-আলোয়

ছবি: ইন্টারনেট

আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা অনুযায়ী যে কোনো উৎসব-পার্বণে সবার পক্ষে ঘরের আসবাব, পর্দা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে উৎসবে বৈচিত্র্য আনতে আসবাব স্থানান্তরের দিকে মনোযোগ দেওয়া যায়। ডিভানকে অন্যপাশে সরিয়ে দেয়ালের দিকে অথবা সোফা সরিয়ে ম্যাট ও কুশনের ব্যবস্থা করলে নতুন লুক আসবে। পর্দায় ভিন্ন পেলমেটের ব্যবস্থা করা গেলে দারুণ পরিবর্তন আসবে ঘরে। কাতান বা জামদানি কাপড় পালমেটের মতো করে ঝুলিয়ে দিলে বেশ ভালো লাগবে দেখতে।

তবে মনে রাখতে হবে গাছ ও ফুল খুবই প্রয়োজন। নইলে উৎসবের সাজ একদমই হবে না। এ ছাড়া যোগ হতে পারে লাইটিং। পরিকল্পনামাফিক লাইটের শেড ঘরকে বদলে দেবে। 

আর যদি দেখেন দেয়ালটা যাচ্ছেতাইভাবে ময়লা হয়ে গেছে তবে এটাই সুযোগ, অন্য দিকের বাজেট কমিয়ে হলেও দেয়ালটা সাজাতে পারেন নতুন রূপে। তাতে আপনার ঘরের দেয়ালও বাঁচবে, আবার উৎসবও রঙিন হবে শতগুণে। 

দেয়ালের সাজ বদল 

ঘরের দেয়ালটা কি যাচ্ছেতাই ঠেকছে? বেশ অনেকদিন হলো এদিকটায় নজর দিচ্ছেন না? শুধু ঘরের আসবাব আর ‍চাদর-কুশন পাল্টালেই তো হয় না! কিন্তু নতুন রঙ করাও বেশ খরচসাপেক্ষ ব্যাপার। তাই কম খরচে মুশকিল আসান হতে পারে ওয়ালপেপার। দেখতেও রঙের থেকে কোনো অংশে কম নয়। আর তাই চলুন জেনে নেই ঘরকে নতুন রূপে সাজানোর আর কত তরিকা আছে।

ঘরের যে দেয়ালটা বেশি ময়লা হয়েছে বা বাচ্চাদের আঁকিবুঁকির ‘রাফখাতা’ হয়ে গেছে সেখানে ওয়ালপেপার লাগিয়ে সহজেই ঘরের হারানো জৌলুস ফিরে পেতে পারেন। দেয়ালের রঙ বুঝে বাছতে হবে ওয়ালপেপার। অন্য দেয়ালের রঙ সাদা বা অফহোয়াইট হলে একটি দেয়ালে সাদা-কালো বা সাদার সঙ্গে ভিন্ন রঙের নকশাদার ওয়ালপেপার ব্যবহার করলে ভালো দেখাবে। 

ড্রয়িং রুম বা ফ্যামিলি লিভিং 

এই ঘরের দেয়াল হাইলাইট করতে চাইলে লাল বা কমলা রঙের নকশাদার ওয়ালপেপার বেছে নিতে পারেন। তাতে থাকতে পারে গোলাপি বা নীলের নকশাকাটাও। ঘর ছোট হলে হিজিবিজি নকশা এড়িয়ে যাবেন। বরং ঘর বড় দেখাতে সাদা বা হালকা কোন রঙের ওপরে ছিমছাম নকশার ওয়ালপেপার ব্যবহার করুন। বড় ঘরে কমলা ও হলুদের মাঝামাঝি কোন রঙ বেছে নিন। 

আবার ঘরের সাজের থিমের সঙ্গেও সামঞ্জস্য থাকতে পারে ওয়ালপেপারের। সেক্ষেত্রে সোফা, পর্দা বা আসবাব যে কোনোটির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বাছবেন ওয়ালপেপারের রঙ। যেমন পুরো ঘরের সাজে অল্প সবুজ রঙের ছোঁয়া থাকলে গাঢ় সবুজ রঙের ওয়ালপেপার ভালো দেখাবে। দেয়ালে নকশাদার ডিজাইন চাইলে ফুলেল নকশার টেক্সচার বা এমবোস ওয়ালপেপার বাছাই করুন। অন্যান্য আসবাবের সঙ্গে মানিয়ে গেলে জ্যামিতিক নকশাও থাকতে পারে দেয়ালে।

বেড রুম 

শোবার ঘরে খাটের মাথার দিকটায় নকশাদার ওয়ালপেপার লাগাতে পারেন। সাধারণত এই ঘরে হালকা ও কম নকশার ওয়ালপেপার লাগানোই ভালো। প্রকৃতির দৃশ্য আছে এমন ওয়ালপেপার বেছে নিতে পারেন; এতে সজীব একটা আবহ আসবে ঘরে। 

ছেলেমেয়ের ঘর

আপনার সন্তানের বয়স ও পছন্দভেদে তাদের ঘরের দেয়ালজুড়ে থাকতে পারে কার্টুন, আকাশ, জ্যোস্না, গাড়ি, বাদ্যযন্ত্রের নকশা। 

ডাইনিং রুম 

খাবার ঘরের একটা দেয়াল ফোকাস করতে নকশাদার ওয়ালপেপার লাগানো যেতে পারে। তবে নকশা যেন জবরজং না হয়। এই ঘরে হালকা কমলা, নীল, সি গ্রিন রঙের ফ্লোরাল ওয়ালপেপার লাগাতে পারেন। ওয়ালপেপারে নকশা থাকলে দেয়ালে আলাদা করে পেইন্টিং ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই।

বাজারে টেক্সচার, এমবোস নানা ধরনের ওয়ালপেপার পাওয়া যায়। এই কাগজগুলো হাত দিয়ে স্পর্শ করলে উঁচু-নিচু ও খসখসে বোধ হয়, যা দেখতে বেশ আধুনিক। এ ছাড়া প্রিন্টেড বা একরঙা ছিমছামও পাবেন। বিভিন্ন ধরনের প্রিন্ট করে ওয়ালপেপারে নকশা করা হয়। এর মধ্যে সারফেইজ, গ্রাভিওর, সিল্কস্ক্রিন, রোটানি ও ডিজিটাল প্রিন্ট জনপ্রিয়। ওয়ালপেপার বড় রোলের মতো করে পেঁচিয়ে রাখা হয়, যাতে দেয়ালের ওপর থেকে সহজেই লম্বাভাবে ঝুলিয়ে দেওয়া যায়। দেয়ালের মাপ অনুযায়ী গজ হিসেবে ওয়ালপেপার বিক্রি হয়। তাই ওয়ালপেপার কিনতে যাওয়ার আগে দেয়ালে মাপ জেনে যাওয়া ভালো।

নতুন আলোয় ভরা ঘর

নতুন দেয়াল ও পর্দায় অতিথিদের তাক লাগিয়ে দেওয়ার পর এবার রাতের পালা। রাতের উৎসবে ঘর আলো-আঁধারিতে সাজিয়ে অদ্ভুত আবেশে ভরিয়ে দিন অতিথি ও পরিবার-পরিজনদের মনকে। 

গৃহসজ্জায় নকশাদার ডিমলাইট

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অনেকেই ঘরে ডিমলাইট জ্বালিয়ে রাখেন, যা ঘরে হালকা আলো দেয়। এই আলোয় চোখের আরাম তো বটেই, রাতে উঠে যে কোনো কাজও সেরে নেওয়া যায়। বিদ্যুৎও সাশ্রয় হয়। আবার সব সময় ভারি আলোয় থাকতে না চাইলে ডিমলাইট মনে স্নিগ্ধ একটা অনুভ‚তি নিয়ে আসে। এ জন্য সিলিংয়ে, দেয়ালে বা ঘরের কোণে কয়েক জায়গায় একাধিক আলোর ব্যবস্থা করলে পর্যাপ্ত আলো পাওয়া যাবে। তবে কোন ঘরে কেমন ডিমলাইট হবে, তার নকশা কেমন হওয়া উচিত, তা জেনে রাখা ভালো।

করিডোর 

ঘরে প্রবেশের মূল দরজার পাশে করিডোরটা সাজিয়ে দিন ডিমলাইটের হালকা আলোয়। এতে ঘরে ঢুকতেই ভারি আলোর ধাক্কা চোখে লাগবে না। বাতি সরাসরি সিলিংয়ে ব্যবহার না করে ল্যাম্পশেড আকারে ব্যবহার করতে পারেন, যাতে হালকা আলোয় সব দেখা যায়। করিডোরের ওপর থেকে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। এই ল্যাম্পের শেড ও বাতির রঙে বৈচিত্র্য রাখতে পারেন। তবে হলুদ, লালের মতো উষ্ণ রং বেছে নেওয়াই ভালো। আর ল্যাম্পের সেইপ হিসেবে রাইন্ড বল, স্কয়ার, ট্রায়াঙ্গেল কিংবা মনের মতো আকৃতি বেছে নিতে পারেন।

ড্রয়িংরুম

দিনের সব সময় যে ড্রয়িংরুম কোলাহলপূর্ণ থাকে, তা নয়। উজ্জ্বল আলোর প্রয়োজনও হয় না অনেক সময়। যেমন টিভি দেখার সময়। তাই ঘরে হালকা আলোর নকশাদার ডিমলাইট রাখতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও আলোর পর্যাপ্ততা দুটিই মিলবে। ঘরের এক কোণে তিনটি রঙিন ডিমলাইট বা ল্যাম্প রাখতে পারেন। তা সিলিং থেকেও নামতে পারে আবার স্ট্যান্ড আকারেও নিচে রাখতে পারেন। তবে তিনটি লেয়ারে রাখতে হবে। প্রথমটি এক ফিট, দ্বিতীয়টি দেড় ফিট ও তৃতীয়টি দুই ফিট পর্যন্ত নামবে। একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব হবে ছয় ইঞ্চি। সব বাতিই হবে জিরো পাওয়ারের। ল্যাম্পের শেড হবে আসবাব আর পর্দার সঙ্গে ম্যাচিং করে। ঘরের আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে রিকশা পেইন্ট, বেত, টেরাকোটা বা মাটির পটারিকে শেড হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আবার যদি পর্দা গ্রামীণ চেকের হয়, তাহলে ল্যাম্পেও তাই রাখতে পারেন। বাতির রঙ হিসেবে বেছে নিতে পারেন লাল-কমলা-নীল। আবার বড় ক্রিস্টাল বোলে পানি, ফুলের পাপড়ি ও মোমবাতি রেখে মৃদু আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন। 


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫