
গরমেও থাকুন স্টাইলিশ লুকে। ছবি: সংগৃহীত
গরম মানেই রোদ আর ঘামের ভয়। তবু প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয় সবাইকে। গরমে জীবন যখন অতিষ্ঠ তখন একটু শান্তির জন্য আরামদায়ক পোশাকের বিকল্প নেই। তবে আরামদায়ক পোশাক পরার পাশাপাশি ফ্যাশনের সঙ্গেও তাল মিলিয়ে চলতে চায় সবাই। গরমের কথা মাথায় রেখে ছেলেরাও এখন ওয়েস্টার্ন পোশাককে প্রাধান্য দেয় এই সময়টাতে। তবে ওয়েস্টার্ন মানেই যে দৃষ্টিকটু কিছু তা কিন্তু নয়। কারণ নিজেকে স্টাইলিশ লুকে দেখতে সবাই পছন্দ করে।
তবে গরমে রঙের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে পোশাকের কাপড়ের ওপর। ছেলেরা যেহেতু দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটান তাই আরামদায়ক ফেব্রিকের কথা মাথায় রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে সুতির চেয়ে আরামদায়ক আর কিছুই হতে পারে না। সুতি বা তাঁতে তৈরি কাপড়ের পোশাক হতে পারে স্বস্তিদায়ক সঙ্গী।
এছাড়া যারা চাকরি করেন এই গরমে পোশাকের ব্যাপারে তাদের মাথায় রাখতে হবে অনেক কিছুই! পোশাক হতে হবে এমন যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা যায় আবার ক্লায়েন্টও অস্বস্তিবোধ না করে। পরা যায় হাফহাতা সুতি বা ব্লকের শার্ট, পোলো শার্ট অথবা ফতুয়া, সঙ্গে স্ট্রেইট কাটের জিন্স। কিন্তু অফিস যদি ক্যাজুয়াল লুক মানতে না চায়, তাহলে পরতে হবে ফরমাল পোশাকই! তবে খেয়াল রাখুন শার্টের কাটিং যেন তা আরামদায়ক হয়। প্যান্টের বেলায় বেছে নিতে পারেন গাঢ় ধূসর, হালকা ধূসর, অফহোয়াইট, বাদামি বা বিস্কিট রং। এই রঙের প্যান্টগুলো পরা যায় যে কোনো শার্টের সঙ্গে। শার্ট হতে পারে একরঙা বা সুতির চেক। বেশকিছু ফ্যাশন হাউসে চেক শার্ট পাওয়া যায়। চেক শার্টেও আছে ভিন্নতা। কারো হালকা চেক পছন্দ, আবার কারো গাঢ়। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ডিজাইনাররাও সেভাবে পোশাক তৈরি করেন।
তীব্র তাপপ্রবাহে শরীরে স্বস্তি জোগাতে এই গরমে হাফ শার্টের বিকল্প আর কী বা হতে পারে। হাল ফ্যাশনেও হাফ শার্টের চাহিদা এখন সবার পছন্দের শীর্ষে। গরমে আরামদায়ক পোশাক হিসেবে বেছে নিতে পারেন ক্যাজুয়াল হাফ শার্ট। এ সময় ক্যাজুয়াল হাফ শার্টে যেমন ফুটে উঠবে ফ্যাশনেবল লুক, তেমনি পাওয়া যাবে স্বস্তি। হাল ফ্যাশনে ক্যাজুয়াল হাফ শার্টের কলারে বৈচিত্র্য রয়েছে। এক সময়ের চওড়া কলারের বদলে এখন সবাই সরু কলারের শার্ট পছন্দ করছে। সাধারণ ও ন্যারো কলারের পাশাপাশি চলছে ব্যান্ড কলার ও টিউনিক ব্যান্ড কলারও। খাটো হাতা ও থ্রি কোয়ার্টার হাতায় ফোল্ডিং বেশ কিছুদিন ধরে চললেও এখনো বেশ জনপ্রিয়। নিচের দিকে রাউন্ড লেয়ার, ডিশ লেয়ার কাট শার্ট এখন তরুণদের বেশ পছন্দ। ছেলেরা এখন স্লিম কাটের দিকে বেশি ঝুঁকছে। হাতা লম্বা হোক বা ছোট-গুটিয়ে পরতেই পছন্দ করছে এখন ফ্যাশন সচেতন তরুণরা।
নরম কাপড়ে প্রিন্টের কাজসহ রংবেরঙের শার্টও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাল ফ্যাশনে। এর মধ্যে কিছু শার্টের নকশায় রয়েছে পুরো বডি একরঙা আর কলার ও হাতের কাফগুলো অন্য রঙে সাজানো। নান্দনিকতা বৃদ্ধিতে উপস্থাপন করা হয়েছে স্ট্রাইপ দিয়েও। গ্রাফিক হাফ শার্ট ও ভি-নেক হাফ শার্টও এখন বেশ জনপ্রিয়। পকেটেও এসেছে নানা ধরনের বৈচিত্র্য। কোনোটায় থাকছে এক বা একাধিক পকেট, কোনোটা আবার পকেট ছাড়া।
তবে গরমে সবার আরামের প্রিয় পোশাক টি-শার্ট। বিগত কয়েক বছরে এ পোশাকের আদি চেহারায় বেশ পরিবর্তন এসেছে। মূলত টি-শার্ট প্রথম তৈরি হয় আন্ডারগার্মেন্ট হিসেবে শার্টের নিচে পরার জন্য। ঘাম থেকে কাপড় বাঁচাতে এবং অ্যালার্জি হতে পারে এমন কাপড় যেন ত্বকে সমস্যা না করে তারই সমাধান ছিল টি-শার্ট বানানোর কারণ। ক্রমেই টি-শার্ট মূল পোশাকের চেহারা পেয়েছে। এর আরামদায়ক বৈশিষ্ট্য, জনপ্রিয়তা ও চাহিদা আজকের টি-শার্টের চেহারা দিয়েছে। তরুণদের চাহিদার কথা ভেবে বাজারে এসেছে ক্যাজুয়াল টি-শার্ট, পোলো টি-শার্ট।
আরামের পাশাপাশি ফ্যাশনে বৈচিত্র্য আনতে টি-শার্টের নকশা ও কাপড়ে এসেছে ভ্যারিয়েশন। টি-শার্টের কাপড় সম্পূর্ণ সুতি হওয়া ভালো। হালকা রঙের সুতার নিটেড টি-শার্ট বা পোলো টি-শার্ট বেছে নেওয়া উচিত। সিনথেটিক কাপড় বা কালো রং বর্জনীয়। কারণ এ ধরনের পোশাক উত্তাপ বাড়ায়। সুতি কাপড় হলে তা হবে যেমন আরামদায়ক তেমনি তাপ নিরোধক।
গরমে টি-শার্ট যেমন আরামদায়ক পোশাক তেমনি বাহারি রং, ব্লক, বাটিক প্রিন্টসহ প্রতিটি শার্ট, টি-শার্ট যেন ডিজাইনারের রং-তুলির ক্যানভাস। শার্ট, টি-শার্টও অনেক বেশি আরামদায়ক এবং ফ্যাশনেবল। পাশাপাশি টি-শার্টে রয়েছে যেমন ডিজাইন-বৈচিত্র্য তেমনি রঙের ছড়াছড়ি। টি-শার্টের সঙ্গে জিনসের প্যান্ট মানানসই। টি-শার্টের ওপরে শার্ট পরে ফ্যাশনে নতুন মাত্রা সংযোজন করা যায়।