
প্রতীকী ছবি।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততা। দৈনন্দিন কাজকর্ম করে আপনজনদের জন্য আলাদা সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার হয়েছে বহুদিন হলো। সেটিও ধীরে ধীরে এক বা বড়জোর দুই সদস্যের পরিবারে এসে দাঁড়িয়েছে। ছেলেমেয়ের লেখাপড়া, ভবিষ্যৎ নিয়ে বেড়েছে প্রতিযোগিতা। সন্তানকে জীবনের সব পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকা মা-বাবাও ভুলে যাচ্ছেন মানুষ হওয়ার পরীক্ষায় পাস করাটাই মুখ্য, বাকি সব গৌণ। শৈশব থেকে কেবল ছুটতে থাকা সন্তান তো থামতে শেখেনি, শেখেনি প্রিয় স্বজনদের শেষ দিনগুলোয় শক্তভাবে তাদের জড়িয়ে ধরে পাশে থাকার আশ্বাস জোগাতে। নিজেদের স্বনির্ভরতা, স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন কারণে বৃদ্ধ মা-বাবার কাছ থেকে দূরে থাকেন সন্তানেরা। তাই শেষ বয়সে মেনে নিতে হয় একাকিত্বকে, ভুগতে হয় বিষণ্ণতা আর অবসাদে। বার্ধক্যের কারণে কখনো কখনো অপরের সাহায্য দরকার হয়। কখনো আবার কর্মক্ষমতা থাকার পরও কোনো কাজ না থাকায় জীবনে আসে অসাড়তা। মৃত্যুর পথে চেয়ে থেকে তখন যেন কেবলই দিন, মাস কিংবা বছর গোনা।
‘পিতা-মাতা যা উপার্জন করেন তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করতে হয়। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করেন, ফ্যামিলিকে দেওয়ার চেষ্টা করেন; কিন্তু ফ্যামিলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। পৃথিবীতে আপনি আপনার। ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী কেউ আপনার নয়। আজ আপনি আপনার ফ্যামিলিকে যেভাবে মেইনটেইন করেন, কাল সেভাবে না করলে পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হবে। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না...। আমি ক্যানসার আক্রান্ত, ব্যবসা বন্ধ; বাসায় একাই থাকি। আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। তাই ভয় করে যে, আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না’, ফেসবুক লাইভে এসে ধীরস্থির, শান্তভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আবু মহসিন খান। এর পর লাইভে থেকেই মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে নিজেকে হত্যা করেছিলেন ৫৮ বছরের এ বাবা, যিনি ঢালিউডের জনপ্রিয় এক চিত্রনায়কের শ্বশুর।
নানা দিক থেকে নানা সম্পর্কের মানুষের প্রতারণা, স্ত্রী-সন্তানদের দূরে থাকা, ক্যানসারের মতো কঠিন ব্যাধির যন্ত্রণা, ব্যবসায় লোকসান, সর্বোপরি একাকিত্ব পর্যুদস্ত করে ফেলেছিল তাকে। নিয়মিত খবরটুকু নেওয়ারও সময় ছিল না কাছের মানুষগুলোর। তাই বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা তাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। তবে অতীতে নিজের কিছুটা সময় যদি ভবিষ্যতের জন্য তিনি ব্যাংকে সঞ্চয় করে রাখতেন, হয়তো তাকে এভাবে চলে যেতে হতো না! হ্যাঁ, সত্যিই পড়ছেন; ব্যাংকে সময় জমিয়ে রাখা যায়, প্রয়োজনে আবার তা উঠিয়েও নেওয়া যাবে।
টাকা জমিয়ে রাখার জন্য সব দেশেই রয়েছে বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক। এমনকি প্রয়োজনীয় রক্তের জন্য আছে ব্লাড ব্যাংকও। তেমনি সময় জমিয়ে রাখার ব্যাংকও আছে। মানুষ চাইলে যেখানে ভবিষ্যতের জন্য সময় জমিয়ে রাখতে পারেন, যার নাম ‘টাইম ব্যাংক’। একত্রে শুনতে নতুন মনে হলেও আলাদা করে এ শব্দ দুটির সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত। টাইম বা সময় এ পার্থিব জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময় গেলে সাধন হবে না। সময়ের কাজ কেবলই সামনে বয়ে চলা। আর ব্যাংক, একবিংশ শতাব্দীতে যাকে ছাড়া প্রায় অচল। ব্যাংক টাকা ও সম্পদ জমা রাখে, রক্ষণাবেক্ষণ করে। যখন প্রয়োজন পড়ে তখন আবার উঠিয়ে নেওয়া যায়। আবার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি-বাড়ি, এমনকি বিয়ে পর্যন্ত করেন অনেকে। এবার টাকার মতো সময়কেও ব্যাংকে জমা রাখা যাচ্ছে। সেই সময়কে পরে যখন ইচ্ছা ব্যবহার করা যাবে- এ ধারণা থেকেই টাইম ব্যাংকের উৎপত্তি। এ ধারণাই কাজে লাগিয়ে সুইজারল্যান্ডে প্রতিষ্ঠা হয়েছে ‘টাইম ব্যাংক’।
চীনের এক তরুণ পড়ালেখা করতে গিয়েছিলেন সুইজারল্যান্ড। থাকার জন্য বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ক্রিশ্চিনার কাছ থেকে। বিশ্বের এ ধনী রাষ্ট্রটিতে অবসর ভাতা বেশ ভালো, যা পেলে আর চলার জন্য অর্থের চিন্তা করতে হয় না। এর পরও ৬৭ বছর বয়সের ক্রিশ্চিনা অন্যের বাড়িতে গিয়ে কাজ করেন! দেখাশোনা ও সেবা-শুশ্রুষা করেন তার থেকে বছর কুড়ি বড় এক বৃদ্ধের, যিনি একাই থাকতেন। ক্রিশ্চিনা মূলত সপ্তাহে দুইবার তার কাছে যেতেন এবং প্রতিবার দুই ঘণ্টা করে ব্যয় করতেন। এ সময় তিনি ওই বৃদ্ধের সঙ্গে গল্প করতেন, হাঁটাহাঁটি করাতেন, এমনকি ঘরও পরিষ্কার করে দিতেন। এ দৃশ্য দেখে রীতিমতো অবাক সেই চীনা তরুণ। বাড়িওয়ালিকে কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘আমি আসলে অর্থের জন্য এগুলো করছি না। নিজের সময়টাকে মূলত ব্যাংকে জমাতেই এ কাজ করছি। যখন বৃদ্ধ বা অক্ষম হয়ে যাব তখন এ সময় ব্যবহার করতে পারব!’
ক্রিশ্চিনা আরও জানান, চুক্তি অনুসারে ব্যাংক এক বছরের সময় হিসাব করে তাকে একটা টাইম ব্যাংক কার্ড দিয়েছে। যখন তারও সাহায্যের প্রয়োজন হবে, ব্যাংককে বললে তারা যাচাই-বাছাই করে তার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেবে। এ টাইম ব্যাংক মূলত একটা অবসরকালীন প্রকল্প, যা সুইচ ফেডারেল মিনিস্টারি অব সোশ্যাল ইনস্যুরেন্সের মাধ্যমে পরিচালিত।
একদিন চীনা ওই তরুণটির কাছে ক্রিশ্চিনার ফোন আসে। জানতে পারেন, টুলে দাঁড়িয়ে জানালা পরিষ্কার করার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন ক্রিশ্চিনা। ছেলেটি খুব দ্রুতই বাড়ি পৌঁছে ক্রিশ্চিনাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান, ক্রিশ্চিনা তার গোড়ালিতে আঘাত পেয়েছেন। এ জন্য তাকে কিছু দিন বেডরেস্টে থাকতে হবে। এ সময়টায় পাশে থেকে ক্রিশ্চিনার একাকিত্ব ঘোচাতে ও সাহায্য করার জন্য তরুণটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটির আবেদন জানায়; কিন্তু ক্রিশ্চিনা তাকে আশ্বস্ত করে বলেন, এসবের প্রয়োজন নেই। তিনি এরই মধ্যে টাইম ব্যাংক থেকে নিজের জমানো সময় উত্তোলনের জন্য আবেদন ফরম পূরণ করে দিয়েছেন। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই ব্যাংক থেকে স্বেচ্ছাসেবক চলে আসে তাকে সেবা দেওয়ার জন্য। এক মাস ধরে ওই স্বেচ্ছাসেবক প্রতিদিন সেবা ছাড়াও ক্রিশ্চিনার সঙ্গে গল্প করা, ঘর পরিষ্কার, পুষ্টিকর খাবার বানানো- সবই করতেন। নিখুঁত এ সেবায় ক্রিশ্চিনা ভালোভাবেই সেরে ওঠেন। আবার পূর্বের কাজে যোগ দিয়ে বললেন, দেহে বল থাকা অবস্থায় তিনি আরও কিছু সময় টাইম ব্যাংকে জমা করে ফেলতে চান।
আমাদের দেশে অবশ্য সমাজের অনেক মানুষ আপনজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশীদের জন্য স্বপ্রোণোদিত হয়ে আর্থিক সুবিধা ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের কাজ করে দেন। মূলত এমন ধারণাকে সুইজারল্যান্ড একটি অবাণিজ্যিক সামাজিক সেভিং প্রকল্প হিসেবে ব্যাংকিং কার্যক্রমে রূপ দিয়েছে। যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন মূলত তাদের সেবা করাই টাইম ব্যাংকের উদ্দেশ্য। অর্থাৎ আপনি যখন সুস্থ-সবল থাকবেন, তখন একটা নির্দিষ্ট সময় বৃদ্ধদের সেবা করবেন। আর সেই সময়টা যোগ হবে আপনার টাইম ব্যাংকে। যখন অক্ষম বা বৃদ্ধ হয়ে যাবেন, তখন ওই সময়ের বিনিময়ে আপনাকেও অন্য কেউ সেবা দেবে। আবার আপনাকে সেবা দেওয়ার মাধ্যমে অন্য কেউ টাইম ব্যাংকে তার সময়কে সঞ্চয় করে রাখবে, যেটা তিনি পরে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন। অবসরে যাওয়া মানুষদেরকে এ কার্যক্রম উদ্বেগমুক্ত করে তোলে, তারা কাজের ভেতর থেকে নিজেদের সুস্থও রাখতে পারেন।
বর্তমানে টাইম ব্যাংকিং বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে সুইজারল্যান্ডে। এতে অবসরকালীন খরচ কমার পাশাপাশি নানা সামাজিক সমস্যারও সমাধান হচ্ছে। এ প্রকল্পে আবেদনকারীদের হতে হয় স্বাস্থ্যবান, ভালোবাসাপ্রবণ, বিনয়ী ও বয়স্কদের সেবা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকা। একই সঙ্গে তাদের খাবার তৈরি, ওষুধ খাওয়ানো, গল্প করা, ঘর পরিষ্কার করার মতো কাজ করারও মানসিকতা থাকতে হবে। এক বছর সেবা করার পর স্বেচ্ছাসেবকদের একটি কার্ড দেওয়া হয়। আর সেই কার্ডের সাহায্যে সে তার প্রয়োজনে ব্যাংকে আবেদন করে জমিয়ে রাখা সময় ব্যয় করতে পারবেন বৃদ্ধ বয়সে। প্রয়োজনে চাইলে যে কোনো মুহূর্তে ব্যাংক থেকে উঠানো যায় সময়কে।
সুইসরা তাদের বয়স্কদের প্রতি অনেক যত্নশীল। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আল্পস পর্বতমালার দেশটিতে তরুণ-তরুণীদের প্রায় অর্ধেক এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সুইজারল্যান্ডের সরকারও এ উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করতে পদ্ধতিটিকে আইনের আওতায় এনেছে।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়েও টাইম ব্যাংকের মাধ্যমে সময় জমানোর এ সুবিধা চালু রয়েছে। চীনের পদ্ধতি যদিও একটু ভিন্ন। বেইজিংয়ে বৃদ্ধ ও অসহায় ব্যক্তিদের সেবা করার জন্য ঘণ্টাপ্রতি একটি করে নির্দিষ্ট মূল্যের কয়েন জমা হয় স্বেচ্ছাসেবকের অ্যাকাউন্টে। বিশেষ এ কয়েন পরে দুইভাবে তিনি খরচ করতে পারেন। কেউ চাইলে সেটি নিজের জন্যও খরচ করতে পারেন। আবার তার আত্মীয়-স্বজন বা নিকটস্থ বন্ধুবান্ধবের পেছনেও খরচ করতে পারবেন। তবে কোনো ব্যক্তি বৃদ্ধদের সেবা করে ১০ হাজার কয়েন জমাতে পারলে, নিজের বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর সম্পূর্ণ সরকারি খরচে সব সুযোগ-সুবিধাসংবলিত সেবাকেন্দ্রে বাকি জীবনটা আরাম-আয়েশেই কাটিয়ে দিতে পারেন।
এক সমীক্ষা থেকে দেখা যায়, বিশ্বজুড়েই বার্ধক্যের হার ক্রমাগত বাড়ছে। বর্তমানে প্রতি ১০ জনে একজন বৃদ্ধ। ২০৩০ সালের পর সে হার প্রতি ছয়জনে একজন দাঁড়াবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রক্ষেপণ। অর্থাৎ খুব শিগগিরই পৃথিবীতে আরও বেশি মানুষের সেবা-শুশ্রুষার প্রয়োজন হবে। আর সে কথা মাথায় রেখেই সময় ও অর্থ বাঁচানোর অভিনব এ পদ্ধতি বেছে নিয়েছে দুই দেশ। বাংলাদেশের জনমিতি বিশ্লেষণ করেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দশক থেকেই দেশে বয়স্ক বা প্রবীণদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকবে এবং ২৫ বছর পরেই বাংলাদেশ পরিণত হবে একটি বয়স্ক সোসাইটিতে।
যে সন্তান তার মা-বাবাকে দেখেছে পরিবারের বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ সদস্যের দায়িত্ব নিতে, সেবা করতে; সে অবচেতনেই বুঝে যায় তার দায়িত্ব। নিজের জীবনেও একই ভূমিকা পালন করে সে। তবে বস্তুবাদী আর ভোগবাদী এ সমাজে ভীষণ রকম আত্মকেন্দ্রিক এবং স্বার্থপর হয়ে উঠেছি আমরা। এ সমাজ প্রতিনিয়তই বুঝিয়ে দেয় ছুটে চলাই আমাদের নিয়তি। টাকাই যেখানে মুখ্য, হোক সেটা সৎ কিংবা অসৎ। মা-বাবারাও আজ সন্তানকে উসকে দেন যে কোনো মূল্যে ‘উন্নতি’ করার পথে। দুই হাতে টাকা কামাতে হবে, দামি গাড়িতে চড়তে হবে, বাস করতে হবে অভিজাত ফ্ল্যাটে। আর এসবের পেছনে ছুটতে গিয়ে সন্তান তার মা-বাবার কাছ থেকেই দূরে সরে যায়।
দেশের প্রবীণদের নিয়ে ১৯৮১ সাল থেকে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এএসএম আতিকুর রহমান। তার মতে, নিজের বার্ধক্য নিয়ে এ দেশের মানুষ সবচেয়ে কম চিন্তা করেন। আবার সরকারের দিক থেকেও কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নেই, যাতে একজন প্রবীণ তার সামর্থ্য অনুযায়ী থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, সমবয়সীদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারেন। প্রবীণরা সব সময়ই অভিযোগ করে থাকেন- সমাজ ও পরিবার তাদের বোঝা মনে করছে। আসলে একজন মানুষ অবসরজীবন কীভাবে কাটাবে, তার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হবে- এগুলো নিয়ে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশের বয়স্ক যারা আছেন, তাদের অনেককে নিজ সন্তানের হাতে নিগ্রহের শিকার হতে দেখা যায়। এমনকি প্রাণ হারানোর ঘটনাও নেহাত কম নয়। এ স্বার্থপর সমাজে টাইম ব্যাংকের মতো প্রকল্প থাকলে হয়তো বৃদ্ধদের সাহায্যের দুয়ার খুলে যেত। বয়স্কদের সেবা করে সময় জমাতে পারত কোমল হৃদয়ের তরুণ প্রজন্ম। তা ছাড়া এমন কাজে তারাই সংযুক্ত হন, যারা এটাকে সেবা মনে করেন। অন্যের জন্য দেওয়া এ সময়টাকে কেবল ঘণ্টা হিসেবে জমানোর জন্যই নয় বরং আনন্দ লাভের উৎস হিসেবে নেন। সেবাটাও হয় নিখুঁত ও আনন্দদায়ক; কিন্তু এটি অর্থের বিনিময়ে গ্রহণ করলে এর জন্য অনেক বেশি ব্যয় করতে হতে পারে। তাই টাইম ব্যাংকের এ উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক, ছোঁয়া লাগুক আমাদের প্রিয় জন্মভূমিতেও। নতুন প্রজন্ম হোক আরও সুন্দর ও মানবিক।