
গিজার। ছবি: সংগৃহীত
শীতকাল এলেই গোসল করা নিয়ে মিম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। শীত উপভোগের হলেও ঠান্ডা পানি কেউই উপভোগ করতে পারেন না। সম্ভাব্য সব রকম উপায়ে পানির স্পর্শ থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে চলেন এ ধরনের আতঙ্কিত মানুষরা। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে অনেকেই গরম পানির সাহায্য নেন। আর পানি গরমের সহজ সমাধান হচ্ছে ইলেকট্রিক গিজার। তা ছাড়া পানি গরম করতে যে পরিমাণ গ্যাস খরচ হয় তার চেয়ে গিজার ব্যবহার করা সাশ্রয়ী। জেনে নিই গিজার সম্পর্কে কিছু খুঁটিনাটি তথ্য...
গিজারের প্রকারভেদ: গিজার মূলত দুই পদের হয়ে থাকে। একটি একিউট ইন্সট্যান্ট টাইপ, অন্যটি ট্যাংক টাইপ। ইন্সট্যান্ট টাইপে গরম পানির যন্ত্রটি আসলে একটি কল। এর সঙ্গে পানি গরম করার ছোট একটি যন্ত্র বসানো থাকে। বাড়ির পানির লাইন থেকে আসা ঠান্ডা পানি ওই যন্ত্র হয়ে কল দিয়ে বাইরে আসবে। আর যন্ত্রটি চালু থাকলে পানি তাৎক্ষণিক গরম হবে। এ ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো শুধু ওই কলটি থেকেই গরম পানি পাওয়া যাবে। আর ট্যাংক টাইপ হলো একটি আলাদা পানির ট্যাংক। যেখানে জমে থাকা পানি হিটারের মাধ্যমে গরম হবে। সেই গরম পানি বাড়ির যে কোনো কলেই আনা সম্ভব। বাসাবাড়িতে যে ট্যাংক টাইপ গিজারগুলো সাধারণত ব্যবহার হয় সেগুলোর পানি ধারণক্ষমতা হয় ৩০, ৪৫, ৬৭ কিংবা ৯০ লিটার।
ব্র্যান্ড ও দরদাম: ৩০ থেকে ৯০ লিটারের গিজারগুলোর দাম ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। ধারণক্ষমতা যা-ই হোক না কেন এতে থাকা হিটার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই ট্যাংকের পুরো পানি গরম করতে সক্ষম। বাজারে পরিচিত ব্র্যান্ডের নামের মধ্যে আছে শামিম, ভিশন, মেলানো, ওয়ালটন ইত্যাদি। বিদ্যুৎ খরচের দিক থেকে এই গিজারগুলো ব্যবহার করলে মাসিক খরচ প্রায় ২শ থেকে ৩শ টাকা বাড়তে পারে। এ ছাড়া আরএফএলের আছে রিমোট কন্ট্রোলড গিজার।
কেনার আগে: অনেকেই গিজার কেনার আগে দ্বিধায় ভোগেন। গিজার কেনার আগে কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। গিজারে অটোকাট-অফ, কপার হিটিং এলিমেন্ট, থার্মাল কাটআউট, টু ইন ওয়ান প্রেশার কাম রিলিজ বাল্ব আছে কিনা এসব যাচাই করে নেবেন। সাধারণত চারজনের পরিবারের জন্য ২৫ বা ৩৫ লিটারের গিজার হলে চলে যায়। তাই পরিবারের সদস্যদের কথা মাথায় রেখে গিজার নির্ধারণ করবেন। গিজারের ওয়ারেন্টি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই ওয়ারেন্টি সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে গিজার কেনা উচিত নয়।
গিজার লাগানোর সময় বৈদ্যুতিক সংযোগ ঠিকমতো পেয়েছে কিনা ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। পানি গরম হয়ে যাওয়ার পর গিজার বন্ধ রাখুন। এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। এতে যেমন বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, তেমনই দীর্ঘদিন যন্ত্রটি ভালো থাকবে। পানি গরম হয়ে গেলে গিজার থেকে পুরো পানি বের করে নিন। পানি ভেতরে জমে থাকলে গিজারে আয়রন জমে যায়।
দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে গিজারের ভেতরে আয়রনের আস্তরণ বাড়তে থাকে। আয়রন গিজারের সেন্সর খারাপ করে দেয়। তাতে অটো-কাট নষ্ট হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে তার সেফটি বাল্বকে। তাই প্রয়োজন না থাকলেও কিছুদিন পর পর গিজার ব্যবহার করতে হবে।