
প্রতীকী ছবি।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই শিশুর নিরাপদ জীবনের জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। পিতা-মাতা কিংবা সকল অভিভাবকই তাদের সন্তানদের নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় থাকেন। প্রায়ই শিশুর ওপর নির্যাতনের ঘটনা সংবাদপত্রের পাতায় দেখতে পাই। আমাদের দেশে শিশুর বিকাশের জন্য যে পরিবেশ এবং পারিবারিক ও সামাজিক আবহ দরকার তার যেমন অভাব, তেমনি শিশুর প্রতি নির্মমতাও সব শ্রেণির মধ্যেই দেখা যায়। অনেকের ভাবনা সন্তান যখন মা-বাবা জন্ম দিয়েছে তখন তার লালন-পালনের দায়িত্ব পরিবারের। সব মিলিয়ে ভালো নেই আমাদের শিশুরা, তাদের ভালো থাকতে দিচ্ছি না।
সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এমন অনেক কিছুই আমরা প্রায়ই এড়িয়ে যাই। কিন্তু যদি প্রত্যেকটি শিশুকে নিজেদের পরিবারের একটি অংশ হিসেবে মেনে নিতে পারি তাহলে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যেতে পারব। গবেষণায় প্রমাণিত যে শিশুর শারীরিক বিকাশের মতো মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে তার জীবনের প্রথম বছরগুলো। যে শিশুটি জীবনের প্রথম সাত-আট বছর তার বিকাশের জন্য সহায়ক পরিবেশ পায়, সে যারা সহায়ক পরিবেশ পায়নি তাদের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান, সামাজিক ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।
শিশু মনোবিদ ও গবেষক আফসানা ইয়াসমিন অর্থী বলেন, ‘শিশুর নিরাপত্তা দিতে মা-বাবার কিছু করণীয় আছে। শিশুর সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে, স্কুলে কী হলো, বন্ধুর সঙ্গে কীভাবে সময় কাটছে- এসব জানতে হবে। শিশু যেন মা-বাবার সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। ছোট শিশু যেন রান্নাঘর, বাথরুমে একা না যায় তা নজরে রাখতে হবে। শিশুকে সবসময় আগুন, পানি, কীটনাশক থেকে দূরে রাখতে হবে। শিশুর কাছ থেকে ওষুধ জাতীয় সকল জিনিস দূরে ও উঁচু স্থানে রাখতে হবে। শিশুর জন্য বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে পারেন। কাজের লোক কিংবা আত্মীয়- সবার ওপরেই নজর রাখতে হবে। শিশুকে সব ধরনের সমস্যা সম্পর্কে মা-বাবাকে জানতে ও পরামর্শ দিতে হবে। যাতে শিশু নিরাপদে থাকে।’
শিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। নিজের পায়ে না দাঁড়ানো পর্যন্ত শিশুর সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে মা-বাবা, অভিভাবক, রাষ্ট্র সর্বোপরি সমাজের সবার। শিশুদের জন্য নিশ্চিত করতে হবে নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ, মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা এবং নির্যাতন ও নিপীড়নমুক্ত সমাজ।