
শিশুর জীবনে পথ পরিচালনায় ভূমিকা সব থেকে বেশি মা-বাবার। ছবি: সংগৃহীত
শিশু যা দেখে তা-ই শেখে। তাই বলা হয়ে থাকে শিশুর প্রথম শিক্ষক মা-বাবা। আর মা-বাবারা অনেক সময় সন্তানের সামনে এমন আচরণ করেন যা শিশুর জন্য বেশ ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। মনে রাখবেন শিশু বেড়ে ওঠার সময় পরিবার থেকেই সব থেকে বেশি শেখে; যা তার জীবনে বড় প্রভাব রাখে। তাই শিশুর জীবনে পথ পরিচালনায় ভূমিকা সব থেকে বেশি মা-বাবার।
এ বিষয়ে শিশু মনোবিদ ও গবেষক আফসানা ইয়াসমিন জানান, শিশুকে বকা দেওয়া এবং শিশুর ওপর রাগ দেখিয়ে বকা দেওয়ার মধ্যে পার্থক্যটা মা-বাবাকে আগে বুঝতে হবে। শিশুর ওপর কখনোই রাগ প্রকাশ করা যাবে না। সেটা যত কষ্ট হোক। সেই সঙ্গে শিশুকে বকা দেওয়ার পর বোঝাতে হবে, কেন বকা দেওয়া হয়েছে।
শিশুর কোনো আচরণ পছন্দ না হলে বা তা ঠিক না হলে মা-বাবার কর্তব্য তাকে সাবধান করা। সেটি চিৎকার করে না বলে শান্ত গলায় বলতে হবে। সন্তানের ওপর রাগ হলে হাত তুলে আত্মসমর্পণের মতো করে থাকুন। বড় করে নিঃশ্বাস নিন। অথবা অদ্ভুত ও হাস্যকর কিছু করুন। এতে করে রাগ কমবেই। সঙ্গে সঙ্গে হয়তো শিশুও তার বিরক্তিকর কাজ বন্ধ করে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মা-বাবা সন্তানকে সময় বেশি দিলে শিশুদের মধ্যে আচরণগত সমস্যা কম হয়। আবার মা ও সন্তানের সঙ্গে বাবা যদি খেলায় অংশ নেয়, তখন শিশুরা ভালোভাবে আবেগ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে এবং আক্রমণাত্মক ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
শিশুকে কিছু বললেই সে শিখে নেবে এমন নয়। তাই মা-বাবাকে বারবার বলে যেতে হবে, চেষ্টা করে যেতে হবে। আর বারবার চেষ্টা করার পরও শিশুর কথা না শোনার অর্থ এই নয়, যে মা-বাবা হিসেবে আপনি ব্যর্থ। তবে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
শিশুকে একটি চারাগাছ বলা যেতে পারে। তাই ভালো ফল পেতে যত বেশি চারাগাছের যত্ন নেবেন ফল তত ভালো হবে। শিশু নৈতিকতা শেখে পরিবার থেকেই। তাই নিজের আচরণ সংযত করতে হবে সন্তানের জন্য। নিজের জীবনে হাজার ভুল কাজ করে থাকলেও সন্তানের জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে।