
খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর চিন্তার সৃজনশীল বিকাশ ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ অপরিহার্য। কারণ সঠিক পরিচর্যা না হলে তারা হবে অপরিপূর্ণ, অপরিপক্ক। খেলাধুলা ও শরীরচর্চা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। খেলাধুলা সময় নষ্ট করা না বরং খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর চিন্তার সৃজনশীল বিকাশ ঘটে, নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জিত হয়, জয়-পরাজয় মেনে নেওয়ার সাহস বাড়ে, দেশপ্রেম জাগ্রত হয় এবং নৈতিক চরিত্রের বিকাশ ঘটে। শুধু তাই নয়, অপরাধ প্রবণতাও কমে যায়।
শিশুর স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্ব বিকাশে খেলাধুলা অত্যন্ত জরুরি। অন্য কোনো কার্যাবলি যা না পারে খেলাধুলা তা-ই করতে পারে। যে শিশুরা খেলাধুলা করে, তারা যাদের খেলাধুলা করার সুযোগ কম তাদের চেয়ে পরবর্তী জীবনে ভালোভাবে খাপ খাওয়াতে পারে। এতে করে শরীরের বিভিন্ন অংশের বিকাশ হয় যেমন-হাড়, পেশি এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গ, ব্যায়াম হয়, ফলে ক্ষুধা বাড়ে এবং ঘুম ভালো হয়। শরীরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে শেখায়। সৃজনশীলতার জন্য অনুপ্রেরণা দেয়। অন্য শিশুর সঙ্গে কীভাবে মিশবে তা শেখার সুযোগ হয়।
গুরুত্ব অনুসারে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়-শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখে, সামাজিকতা শিক্ষা দেয়, নৈতিকতার সুষ্ঠু বিকাশ হয় এবং জ্ঞান অর্জন করে।
শারীরিক সুস্থতা : শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়াচড়ার ফলে ভালো ব্যায়াম হয়, রক্ত চলাচল ভালো হয়, মাংসপেশি সতেজ ও সবল হয় এবং দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিপক্ব হয়। খেলাধুলা মাংসপেশির সমন্বয় সাধনে সাহায্য করে, এতে মাংসপেশি শক্ত হয়। যেমন-ছবি আঁকার সময় শিশুর হাত, বাহু, চোখ ও মাংসপেশির সমন্বয় হয়। এতে হাতের সঞ্চালন প্রক্রিয়া ভালো হয়, মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে।
মানসিক সুস্থতা : খেলাধুলা মনের জড়তা, দুঃখ ও বেদনা কমিয়ে দেয়। মানসিক অবসাদ দূর করে এবং কাজের জন্য মনকে সবল ও সতেজ করে। ক্লান্তি ও হতাশা দূর করতে যেমন বিশ্রাম ও ঘুমের প্রয়োজন তেমনি জড়তা দূর করে শরীরকে সবল ও সতেজ করার জন্য খেলাধুলা প্রয়োজন।
সামাজিকতা : খেলাধুলায় দলীয় অংশগ্রহণের ফলে শিশু সামাজিকতা শেখে। শিশু শেখে কীভাবে অন্যের সঙ্গে মিশতে হয়, সহযোগিতা করতে হয়। খেলার মাধ্যমে ভাবের আদান প্রদান হয়, দলের রীতিনীতি শেখে। গঠনমূলক খেলায় শিশুরা নিজেদের সমালোচনা করতে শেখে। নাটকীয় খেলার মাধ্যমে সামাজিক বোধের সৃষ্টি হয়।
নৈতিক শিক্ষা : সাধারণত শিশুরা পরিবার থেকেই নৈতিক শিক্ষা পায়। খেলাধুলায় রীতিনীতি খুব কঠোর। তাই শিশুকে দলে গ্রহণযোগ্য হতে হলে তাকে হতে হবে সত্যবাদী, সৎ, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং থাকতে হবে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব। এভাবেই শিশুর নৈতিক চরিত্র গড়ে ওঠে।
সৃজনশীলতা : খেলাধুলা শিশুর সৃজনশীলতা ও কল্পনা বিকাশে সহায়তা করে। এটি তাদের বিভিন্ন ভূমিকা এবং পরিস্থিতি অন্বেষণ করতে এবং নতুন ধারণা তৈরিতে সাহায্য করে।