
এবার করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্য দিয়েই শুরু হলো রমজান মাস। এসময় করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত ও সুস্থ থাকা খুব জরুরি। রমজানে সুস্থ থাকতে চাইলে প্রয়োজন সঠিক খাদ্যভ্যাস।
এসময় ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার বাদ দিয়ে আঁশ জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। সেই সাথে প্রোটিন ও ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে গুরুত্ব দিতে হবে।
রমজানে খাদ্যাভ্যাস কেমন হলে সুস্থ থাকবেন তা আলোচনা করা হলো:
সেহরির খাদ্যাভ্যাস
অনেকে ডায়েট করার কারণে সেহেরিতে খাবার খায় না, বা খুব কম খায়। এটি অনেক সময় বিপদের কারণ হতে পারে। আবার বেশি খাওয়াও ঠিক নয়।
সেহরিতে খাবার না খেলে দুর্বলতা কাজ করে। ক্যালরির ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া সেহরি না করলে গ্লুকোজ ক্ষয় বেশি হলে ক্লান্তি আসে।
রোজায় দীর্ঘ সময় উপবাস থাকতে হয় বলে সেহরিতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট বা জটিল শর্করা গ্রহণ করা উচিত। এই জটিল শর্করা ধীরগতিতে হজম হয়। ফলে দিনের বেলায় ক্ষুধা কম অনুভূত হয়।
সেহরিতে ভাতই খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। রুটি, পরোটা, দুধ, সেমাই ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। তবে এ সময় মাংস ও ডিম খাওয়া সুবিধাজনক। এছাড়া ঘন ডাল খাওয়া যেতে পারে।
ছোট-বড় যে কারো জন্যই এক কাপ দুধ খাবারে প্রোটিন বা আমিষের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। এটি শরীরে বাড়তি শক্তির যোগান দিবে।
সেহরির পর অনেকেই চা পান করে থাকেন। কিন্তু সেহরির পর চা পান থেকে বিরত থাকা উচিত। গবেষকরা বলেছেন, চায়ের মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন যা প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরে খনিজ লবণ ও পানিস্বল্পতা দেখা দিয়ে থাকে।
ইফতারের খাদ্যাভ্যাস
ইফতারে অধিকাংশরা তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খায়। ফলে অনেক রোজাদার শারীরিক অস্বস্তিতে ভোগেন। ভাজা-পোড়া খাবার, অতি মসলাযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার গ্রহণের কারণে অনেকেই রোজা রেখে অবশেষে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এছাড়াও ইফতারে হঠাৎ করে একসাথে এসব খাবার খেলে বদহজম, বুকজ্বালা এবং ওজন বৃদ্ধির সমস্যা দেখা দেয়।
তাই যেসব খাবার হজমে কম সময় নেয় এ ধরনের খাবার ইফতারে গ্রহণ করা উচিত। পরিশোধিত শর্করা দ্রুত হজম হয়ে যায় এবং রক্তে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে।
ইফতারে খেজুর হতে পারে একটি অন্যতম খাবার। খেজুর হচ্ছে চিনি, তন্তু বা ফাইবার, শর্করা, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের উৎস। ইফতারে পুষ্টিকর স্যুপ খেতে পারেন। এটি এনার্জি ফিরিয়ে আনবে।
ইফতারে খেতে হবে শরবত বা ডাবের পানি, কাঁচা ছোলা, কম তেলে ভাজা ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, মুড়ি, চিড়া ও ফল।
তবে প্রতিদিনের ইফতারে পেঁয়াজু, বেগুনি না রেখে ভিন্ন আইটেম রাখতে পারেন।
ছোলার সঙ্গে আদা কুচি, লবণ ও পুদিনা পাতা কুচি দিয়ে খাওয়া যায়। এটা হজমে যেমন সহায়ক, তেমনি ভিটামিন ও খনিজ লবণের ঘাটতি দূর করে।
এছাড়াও সেহেরি ও ইফতার মেন্যুতে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফল রাখুন। এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম ও ফাইবার যা সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এছাড়া ইসুবগুলের ভুসি, তোকমার দানা এবং প্রচুর পানি পান করুন।