
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে বাধ্য হয়ে লকডাউন করে দিতে হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আর এলাকা। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সংযমের সঙ্গে জীবনযাপন করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে খুব খারাপ সময় এলেও যাতে আমরা পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারি।
এমন সংকটময় মুহূর্তে কীভাবে খরচ কমিয়ে সঞ্চয় করা যায় তার পরিকল্পনা করতে হবে। আয়ের সঙ্গে মিল রেখে সাপ্তাহিক, মাসিক, বার্ষিক বাজেট তৈরি করে ফেলুন পরিবারের সবাই বসে। সবার মতামত নিয়ে সংসারের আয় বাড়ানো এবং ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করে ফেলুন।
জরুরি তহবিল তৈরি করুন
আর্থিক পরিস্থিতি কেমন, সঞ্চয়ের অর্থ দিয়ে কতদিন চলবে, হিসাব করে ফেলুন ঝটপট। আয় যাই হোক সঞ্চয় প্রথমে এই নীতি নিন। হাতে টাকা রাখুন। অপ্রয়োজনীয়-বাড়তি খরচকে ‘না’ বলুন। এখন যতোটুকু না হলেই নয়, ততোটুকু খরচ করুন ও সঞ্চয়ে মনোযোগ দিন। যদি নিয়মিত সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখা টাকা দ্রুতই খরচ হয়ে যায় তাহলে আলাদা অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে জমা রাখুন। সঞ্চয়ের পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখবেন। বছর শেষে এই খাতের টাকা বেঁচে গেলে তা সঞ্চয়ে যুক্ত রাখুন।
ঋণ পরিশোধ করতে হবে
ঋণ মানেই অতিরিক্ত বোঝা। অর্থনৈতিক মন্দার সময় চাকরির সমস্যা, হাতে টাকা না থাকা হবে একটি সাধারণ সমস্যা। এমন অবস্থায় ঋণ শোধ করা হবে অতিরিক্ত চাপের। তাই সময় সুযোগ থাকতেই সব ঋণ পরিশোধ করুন। ক্রেডিট কার্ডের সুদ, ব্যাংকের ডিপিএস, ব্যাংক লোন, ফ্ল্যাটের লোন পরিশোধের হিসাবটিও তালিকায় রাখুন।
মেনে চলতে হবে বাজেট
এমন সময় প্রতিদিনের খরচ মেটানো দুঃসাধ্য হয়ে যেতে পারে। তাই দীর্ঘমেয়াদি খরচের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। চেষ্টা করতে হবে কড়াভাবে সেই বাজেট মেনে চলতে। অনেক সময় শিশুরা বায়না করে এটা সেটার। তাই প্রয়োজনে নির্দিষ্ট খরচে চলার বিষয়টি তাদের বুঝিয়ে বলুন।
আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য ধরে রাখুন। অর্থনৈতিক মন্দায় ঋণ পাওয়া কঠিন। দুঃসময়ের শেষ কবে, জানা নেই বলে কষ্ট হলেও ঋণ করবেন না। বরং ঝুঁকতে হবে মাসের খরচ কমিয়ে সঞ্চয়ের দিকে। প্রতিদিন ৫/১০ টাকা জমালেও একসময় অনেক হবে। জমানো টাকার কথা ভুলে যান। মনের ভুলেও তাতে হাত দেবেন না। সন্তানকে সঞ্চয় করতে শেখান।
খাদ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন
বিষয়টি হয়তো আপনার জন্য নতুন। এতদিন যখন যা ইচ্ছা করেছে খেয়ে অভ্যস্ত ছিলেন; কিন্তু হিসেব করে চলার এই সময়ে আপনাকে খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে। খাবারের পেছনে সপ্তাহে কত টাকা ব্যয় করবেন সেটি ঠিক করে ফেলুন। খাবারের বিষয়ে সর্বোচ্চ কৃচ্ছ্রতা সাধন করুন। খাবার অপচয় করবেন না। তেল-মসলা ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন। সন্তানকে প্রতিবেলা মাংস দেয়া বন্ধ করুন।
খাবার টেবিলে, বিকেলের নাস্তায় খাদ্যগুণও পাবেন আবার মুখরোচকও হবে তেমন কিছু পরিবেশন করুন। ইউটিউবে পুষ্টিবিদদের থেকেও পরামর্শ নিতে পারেন। কিছু কেনার আগে ভেবে দেখুন এই সময়ে সেটা কতটা দরকারি। এর বিকল্প কিছু বাড়িতে আছে কিনা! ওর চেয়ে কম দামের বিকল্প কিছু বাজারে আছে কিনা। থাকলে কম দামেরটাই কিনুন। কেনার চেয়ে ঘরেই কম খরচে বানিয়ে ফেলা যায় কিনা দেখুন। বাজারে যাবার আগে ঘরে কি আছে, কোনটা কতটুকু লাগবে দেখে তালিকা করুন। অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা থেকে বাঁচবেন।