
গরুর মাংস রান্না। ছবি- সংগৃহীত
ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদে খাবারের মেন্যুতে মাংসের আধিক্য থাকে। তাই সতর্কতাও অবলম্বন করতে হয় বেশি। এই সতর্কতা শুরু হয় পশু ক্রয় করা থেকে শুরু করে পশু জবাই, রান্নার মেন্যু নির্বাচন, রান্নার পদ্ধতি, মাংস সংরক্ষণ সবকিছুতেই। ঈদের পর কয়েক দিন পর্যন্ত চলে মাংসের বিভিন্ন রেসিপি। মাংস তো খেতেই হবে; কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চললে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব এবং পরিপূর্ণ ঈদ আনন্দ উপভোগ করা যাবে কিছু নিয়ম মেনে চললেই।
ঈদের দিন গরু,
ছাগল, ভেড়া, মহিষ, দুম্বা, উটের মাংসের বিভিন্ন পদের রান্না করা হয়। এই সব
মাংস পুষ্টিকর; কিন্তু বেশি
চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়ায় সচেতন না হলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা থাকে। বিশেষ
করে দীর্ঘমেয়াদি রোগে যারা ভুগছেন, তাদের আরও সচেতন
হতে হবে। এ ক্ষেত্রে ২-৩ দিন পরিমিত পরিমাণে মাংস খেতে পারেন। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত
মাংস খাওয়া ঠিক না। কোরবানির গরু-খাসিতে বেশ চর্বি থাকে এবং রান্নাতেও অনেকে এই
চর্বি ব্যবহার করে থাকেন। এটা ঠিক না। মাংসের গায়ে লেগে থাকা চর্বি ফেলে দিয়ে
রান্না করতে হবে। কলিজা রান্নার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কলিজা ভিনেগার দিয়ে
ধুয়ে সেদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে রান্না করতে হবে।
একসঙ্গে প্রচুর
মাংস খেলে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পেট ফাঁপা, জ্বালাপোড়া থেকে শুরু করে ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে
পারে। ঈদের দিন সকালে মেন্যুতে হালকা নাশতা রাখতে হবে। সেই সঙ্গে ফলের রস রাখা
যেতে পারে। লেবুর শরবতও রাখতে পারেন। দুপুরে ভারী খাবার থাকে, তাই সকালবেলা
একটু পায়েস, রুটি ও সবজি
রাখতে পারেন। অথবা স্যুপ রাখতে পারেন।
দুপুরে সাধারণত
বিরিয়ানি, মাংসের রেজালা,
কালা ভুনা, কাবাব, কলিজা রান্না থাকে, এর সঙ্গে থাকে
রুটি, খিচুড়ি, পোলাও। এসব খাবার মুখরোচক হলেও পরিমাণে অল্প খেতে
হবে, কারণ বেশি খেলে বদ হজম
হতে পারে। আবার যারা হৃদরোগ, ডায়বেটিস,
উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল
আছে তারা এসব মুখরোচক খাবার খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাই তাদের খাবার
হবে পরিমিত পরিমাণে।
দুপুরে খাবারের
সঙ্গে সালাদ ও লেবু রাখতে হবে, যেন খাবার হজমে
কোনো সমস্যা না হয়। সেই সঙ্গে একটু ইসপগুলের পানি রাখা যেতে পারে। বিকেলে ব্ল্যাক
কফি, গ্রিন টি, লেবু পানি রাখা যেতে পারে।
রাতের বেলা
অন্যান্য খাবারের সঙ্গে ভাত ও রুটি সঙ্গে সবজি ও ডাল রাখা যেতে পারে। রাতে অবশ্যই
ইসপগুল বা তোকমা দানা ভেজানো পানি খাওয়া উচিত। এ ছাড়া সারা দিন বেশি করে পানি পান
করতে হবে।
লেখক : পুষ্টিবিদ