
ব্যাচেলরদের সব বিড়ম্বনা কাটিয়ে একহাতে সামলাতে হয় সবকিছু। প্রতীকী ছবি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ব্যাচেলর ডিগ্রি দিয়ে থাকে। এতে ‘ব্যাচেলর’ শব্দটি সম্মানজনক। তবে তা একাডেমিক সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে। এর বাইরে ‘ব্যাচেলর’ শব্দটির মতো বিড়ম্বনার আর কিছু নেই। পরিবার-পরিজন ছেড়ে এসে শহরে যারা একাকী জীবন বেছে নিয়েছেন তারা হাড়ে হাড়ে জানেন। বাড়ি খোঁজা থেকে সাহায্যকারী পাওয়া-সব কিছুতেই ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয় তাদের। সেসব বিড়ম্বনা কাটিয়ে একহাতে সামলাতে হয় সবকিছু। ওই জায়গা থেকে প্রত্যেক ব্যাচেলরই একজন সংগ্রামী। কেউ লেখাপড়া করতে কিংবা কেউ কর্মস্থলে যোগ দিতে এসে মেসে ওঠেন। বেছে নেন ব্যাচেলর জীবন।
তাদের সবার জীবনযাপনের চিত্র প্রায় একই। ব্যাচেলরদের এই শহরে থিতুর শুরুতেই সামলাতে হয় বাড়িওয়ালাকে। ব্যাচেলর শুনলেই নানা ধরনের দাবিদাওয়া মামা বাড়ির আবদারের মতো চাপিয়ে দেন বাড়িওয়ালারা। বাসায় বন্ধু আনা যাবে না, বেশি রাতে ফেরা যাবে না, আর বিপরীত লিঙ্গের কেউ তো একেবারেই নিষিদ্ধ। উনিশ থেকে বিশ হলেই আসে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ। বাসাও যে তাদের খুব আহামরি গোছের হয় তা কিন্তু না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাচেলরদের জন্য নিচতলা কিংবা ছাদের চিলেকোঠা বরাদ্দ রাখা হয়। ফলে পরিবেশগত অত্যাচার যেমন সহ্য করতে হয় তেমনি থাকে পারিপার্শ্বিক চাপ। এসবের মাঝেও একহাতে সব সামলে চলতে হয় তাদের।
সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে কাপড় ধোয়া, বাজার করা, ঘরদোর পরিষ্কার, সাহায্যকারী না থাকলে হেঁশেল সামলানো সবই একহাতে করতে হয়। অর্থাৎ একই সঙ্গে ঘরে-বাইরে পটু হতে হয় ব্যাচেলরকে। এ ছাড়া ছারপোকার অত্যাচার তো আছেই। কেউ কেউ তো মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে ওঠেন। তাদের জন্য রইল কিছু পরামর্শ।
ব্যাচেলর জীবনের সবচেয়ে বিড়ম্বনার কাজ কাপড় ধোয়া ও বাজার করা। কিন্তু এ দুটি না করলেই নয়। তাই বাজার করার জন্য সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলো বেছে নিতে পারেন। অথবা নির্ধারিত দিনের আগের দিন অফিস থেকে আসার সময় ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে ফিরতে পারেন ঘরে। কাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রেও সাপ্তাহিক বন্ধের দিনটি বেছে নিতে পারেন। তবে সপ্তাহের কাপড় একদিনে ধোয়াটা অনেক সময় বিরক্তির কারণ হতে পারে। তা এড়াতে রোজ গোসলের সময় একটি বা দুটি করে ধুয়ে নিতে পারেন। এতে চাপও কমবে, বিরক্তিও আসবে না।
ব্যাচেলর জীবনে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বাস না করলেও ছারপোকার সঙ্গে ঠিকই বাস করতে হয়। অনেক সময় কর্মস্থলে শার্ট বা প্যান্টের ভাঁজ থেকে ছারপোকা উঁকি দিয়ে ইজ্জতের বারোটা বাজিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে কারণে সময় করে নিয়মিত নিজের বিছানা ও ঘরের আনাচ-কানাচ পরিষ্কার রাখায় মন দেওয়াটা জরুরি। সেই সঙ্গে মাসে দু-এক বার সময় বের করে ছারপোকা নাশক ওষুধও দিতে পারেন। প্রয়োজনীয় এই জিনিসগুলো হাতের কাছেই রাখা উচিত।
ব্যাচেলর বাসায় রাজত্ব সাহায্যকারীর হাতে। কিছু হলেই আর আসবে না বলে হুমকি দেয়। মাঝে মাঝে নিজ দায়িত্বে লাপাত্তা হয়ে যায় কয়েক দিনের জন্য। এ সময়টা রান্নার দায়িত্বটা নিজেদেরই সামলাতে হয়। তবে অফিস শেষে হেঁশেল ঘর সামলানো ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়ায়। একজনের ওপর না চাপিয়ে মেসের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কাজ ভাগ করে নিন এ সময়। তবেই দেখবেন খুব সহজেই রান্নার কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। এভাবেই ব্যাচেলর লাইফ শত ঝক্কিঝামেলার মাঝেও অন্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে উপভোগ্য করে তুলতে পারেন।