
উপভোগ্য ঋতুগুলোর মধ্যে অন্যতম বর্ষা। তবে একটু অসতর্কতায় বর্ষাই হয়ে উঠতে পারে বিপত্তির কারণ। এই ঋতুতে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বেশি। কারণ পানিতে মিশে থাকা নানা রোগ-জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন রোগ তৈরি করে। আবহাওয়ায় আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে হজমশক্তি কমে যায় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটাই কমে যায়। তবে এ সময় পেটের রোগই বেশি হয়। তাই এ রোগ থেকে বাঁচতে খাবার খাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে।
সবুজ শাকসবজি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু এই বর্ষায় তা হয়ে উঠতে পারে ক্ষতির কারণ। শাকসবজির গায়ে লেগে থাকা জীবাণু পেটে গিয়ে ডায়রিয়া কিংবা পেটের পীড়ার কারণ হতে পারে। তবে কেউ যদি খেতেই চান তবে গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে শাকসবজি ধুয়ে তবেই খেতে পারেন। এ ছাড়া কাঁচা সবজি খাওয়া যাবে না।
এ সময় সামুদ্রিক মাছ খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি চিংড়ি, কাঁকড়াও খাওয়া যাবে না। আর যদি খেতেই হয় তাহলে টাটকা অবস্থায় খেতে হবে এসব। ঠান্ডা, বাসি হয়ে গেলে তা পেটের রোগকে উসকে দিতে যথেষ্ট।
বাইরের মুখরোচক খাবার খুবই লোভনীয়। তবে বর্ষাকালে তা এড়িয়ে চলাই ভালো। পেট ভালো রাখতে চাইলে তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ এ সময় শরীর অতিরিক্ত পানি ধরে রাখে। তৈলাক্ত খাবার খেলে অতিরিক্ত তেল পানির সঙ্গে মিশতে পারে না। আর এই চাপ থেকে তৈরি হতে পারে পেটের রোগ।
তবে বেশকিছু খাবার আছে যেগুলো বর্ষায় খাওয়া বারণ নেই। এ সময়ে স্যুপ খুব উপকারী। গরম সবজির স্যুপ জ্বর কমানোর পাশাপাশি পেটের অসুখও ভালো করে দেয়। এ ছাড়া শরীরে পানির মাত্রা বজায় রেখে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
বর্ষাকালে শুকনো খাবার বেশ উপকারী। এতে স্বাস্থ্য ও মন থাকে ঝরঝরে। বর্ষায় জীবাণু ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম পানি। তাই এ সময় পানি ব্যবহার ও পানি পানের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানির বিকল্প নেই। হারবাল চা খেতে পারেন। এটি হজমের জন্য উপকারী এবং পেটও ভালো থাকে।
বর্ষাকালে প্রতিদিন মৌসুমি ফল খেতে হবে। আনারস, বেদানা, পেয়ারা, লটকন খেতে পারেন। আমও পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। তা না হলে ওজন বৃদ্ধি, ব্রণ ও ফুসকুড়ির সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ‘সি’যুক্ত ফল ও সবজি খেতে হবে, এতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
হজমশক্তি বাড়ায় এমন মসলা যেমন-আদা, রসুন, জিরা, ধনিয়া, হলুদ ব্যবহার করুন রান্নায়। মাছ-মাংস অত্যধিক তেল-মসলা দিয়ে না কষিয়ে হালকা স্টু করে রান্না করুন।