
বাড়ির দেয়ালে পেইন্টিং করছে এক শিশু। ছবি: সংগৃহীত
বর্ষায় ঘর-বাড়ির দেয়াল স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। গ্রামে কিংবা বিভিন্ন জেলায় অনেকে এই স্যাঁতসেঁতে ভাবকে নোনা ধরা বলে থাকেন। দেয়াল স্যাঁতসেঁতে বা নোনা ধরা হোক কখনোই সেটা ভালো বিষয় নয়। এটা নিয়ে বাড়তি দুশ্চিন্তা থাকে অনেকের। কারণ দেয়াল স্যাঁতসেঁতে কিংবা নোনা ধরলে বাড়ির সৌন্দর্য নষ্ট হয়। তাই বাড়ির দেয়ালের যত্ন নিতে প্রয়োজন অতিরিক্ত মুনশিয়ানার।
প্রথমত বাড়ির দেয়াল কিংবা এর আশেপাশে কোনো ফাটল আছে কিনা নিশ্চিত হতে হবে। বিশেষ করে দুই দেয়ালের সংযোগস্থলগুলো ভালো করে দেখে নিন। দেয়ালে সামান্যতম ফাটল থাকলেও তা দেয়াল ও দেয়ালের রং নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। তাই দেয়ালে ফাটল থাকলে সেটা ঠিক করে নিতে হবে। এরপর দেয়াল করে তুলুন প্রাণবন্ত ও সুন্দর।
রং : বাড়ির দেয়ালে একবার রং লাগিয়েই যে সারা জীবনের মতো স্যাঁতসেঁতে ভাব থেকে মুক্তি পাবেন তা কিন্তু নয়। তাই প্রতি এক থেকে দুই বছর অন্তর একবার করে বাড়ির দেয়াল রং করানো উচিত। এতে দেয়ালের স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর হয় এবং দেয়াল থাকে চকচকে।
প্রাইমার : দেয়াল স্যাঁতসেঁতে ভাব থেকে রক্ষা করতে পারে একমাত্র প্রাইমার। তাই দেয়াল রং করতে চাইলে সেটা বর্ষার আগেই সেরে ফেলুন। ভালো প্রাইমার ব্যবহার করুন। রং করার উপায় না থাকলে অন্তত প্রাইমার কিংবা হোয়াইটওয়াশ করাতে পারেন। এতেও দেয়াল থাকে প্রাণবন্ত।
ওয়াল পেইন্টিং : দেয়ালে রং করার চেয়ে যদি পেইন্টিং পছন্দ করেন তাহলে সেটাও করতে পারেন। পছন্দমতো ছবি আঁকিয়ে নিতে পারেন দেয়ালে। এতে বাড়ির সৌন্দর্যও বাড়িয়ে দেবে দ্বিগুণ।
কাঠের দেয়াল : কাঠ অতিরিক্ত আর্দ্রতা শোষণ করে নিতে পারে। তাই কংক্রিটের দেয়ালে কাঠের আবরণ দিয়ে আরও একটি দেয়াল লাগাতে পারেন। এর ফলে নোনা ধরা কমবে, পাশাপাশি বাড়ির সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে।
পেপার ওয়াল হ্যাঙ্গিং : কাগজ এবং কাগজের বর্জ্য ব্যবহার করে আকর্ষণীয় কাগজের ওয়াল হ্যাঙ্গিং তৈরি করা যায়। এ ছাড়া আকর্ষণীয় ওয়াল হ্যাঙ্গিং বাজারে পাওয়া যায়। রঙিন ও আলংকারিক ওয়াল হ্যাঙ্গিংগুলো দেখতে আনন্দদায়ক এবং দেয়ালে প্রাণ এনে দেবে নিশ্চিত।
ওয়াল স্টিকার : যারা দেয়ালে রং করাতে চান না তারা ওয়াল স্টিকার লাগিয়ে নিতে পারেন। বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ওয়াল স্টিকার পাওয়া যায়। সেখান থেকে পছন্দমতো ওয়াল স্টিকার কিনে লাগিয়ে নিতে পারেন।
কার্পেট : কয়েক টুকরা কার্পেট জোড়া দিয়ে পুরো একটি দেয়াল সাজিয়ে নিতে পারেন। এতে দেয়ালে নতুন করে রং করার ঝামেলা পোহাতে হবে না, খরচ বাঁচবে, রঙের গন্ধ সইতে হবে না। বরং পাবেন রঙিন একটি দেয়াল। আবার প্রয়োজনে খুলেও ফেলতে পারবেন যখন তখন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং ও পেইন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী সৌহাত রাশেদিন সৌখিন বলেন, ‘একটি বাড়ির দেয়ালে পেইন্টিং করতে হলে প্রথমত ইন্টেরিয়র ডিজাইন করতে হবে। এরপর কোথায় কোন পেইন্ট হবে সেটা ডিজাইন অনুযায়ী হবে। এতে করে বাড়ির দেয়ালের নান্দনিকতা ফুটে উঠবে। নান্দনিকতা কিংবা প্রিমিয়ামভাবে বাড়ির দেয়াল ফুটিয়ে তুলতে চাইলে অবশ্যই ইন্টেরিয়র ডিজাইনের পরামর্শ দেব আমি।’