
পূজার ফ্যাশন। ছবি: সংগৃহীত
শরৎ মানেই প্রকৃতির এক রঙে সেজে ওঠার গল্প। আকাশজুড়ে হাঁসের পালকের মতো সাদা মেঘ। তার থেকে কয়েক ফোটা মেঘ যেন বনে বনে ছড়িয়ে পড়ে সাদা কাশফুল হয়ে। শ্বেত শুভ্র রূপ দেখে সহজেই বোঝা যায় শরৎ এসেছে। আর শরৎ মানেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। চারদিকে ‘মা আসছেন’ রব। সেইসঙ্গে শুরু হয় কেনাকাটার ধুম। অভিজাত শপিংমলসহ পোশাকের দোকান সেজে ওঠে নতুন করে।
এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। কেমন হতে পারে পূজার ফ্যাশন। এখনো যেহেতু গরমের প্রভাব কমেনি তাই আরামদায়ক পোশাক বেছে নিতে হবে। দেশের পোশাক হাউসগুলোও আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে পোশাক ডিজাইন করেছে। ওই জায়গা থেকে পোশাক তৈরিতে সুতির ওপরই নির্ভর করেছেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা। একুয়া সিল্ক, সুতি কোটা, সুইস কটন- এসব ম্যাটেরিয়ালেও পোশাক প্রস্তুত করছেন তারা।
পূজায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা শাড়ি-পাঞ্জাবির। তাই দুই ঘরানার পোশাক পর্যাপ্ত পরিমাণে এনেছে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো। শাড়ি আবার সব বয়সীর নারীর চাহিদার শীর্ষে থাকে। তাই সবার কথা মাথায় রেখে জমকালো পোশাক থেকে শুরু করে অপেক্ষাকৃত সরল, ছিমছাম নকশা রাখা হয়েছে। তবে শাড়ির পাশাপাশি এবার কুর্তা, সালোয়ার-কামিজের বেশ কদর রয়েছে। সেই সঙ্গে বরাবরের মতো আছে পাশ্চাত্যের সঙ্গে দেশি পোশাকের মিশেলে তৈরি ফিউশন পোশাক; এগুলোর যথেষ্ট চাহিদা।
পূজা কয়েক দিনব্যাপী চলে। তাই সময় ভেদে পোশাক বদলে যেতে পারে। অতিথি আপ্যায়ন বা মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরার জন্য বেছে নিতে পারেন কুর্তা বা টপস। দাওয়াত কিংবা পার্টির জন্য বেছে নেওয়া যেতে পারে শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ। তবে দশমী কিন্তু শাড়িতেই ফুটে ওঠে। রঙয়ের ক্ষেত্রে এদিন লাল-সাদার বিকল্প নেই। আজকাল বাহারি ব্লাউজের বেশ চল। ফ্যাশন হাউসগুলোতে পূজার পোশাকের কর্নারে তা শোভা পাচ্ছে। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন পছন্দসই ব্লাউজ। টিনএজারদের মাঝে এই বাহারি ডিজাইনের ব্লাউজ বেশ জনপ্রিয়।
পূজায় নারীর জন্য যেমন শাড়ি তেমনই পুরুষের জন্য পাঞ্জাবির বিকল্প নেই। তাই পূজা উপলক্ষে বিপণীবিতানগুলো সেজে ওঠে নানা রঙ ও ঢঙের পাঞ্জাবিতে। আট থেকে আশি- সবার উপযোগী পাঞ্জাবি সাজিয়ে রেখেছে ফ্যাশন হাউসগুলো, যেন কেউ না ফেরে খালি হাতে। নিজেকে স্টাইলিশ করে উপস্থাপন করতে চাইলে পাঞ্জাবির সঙ্গে পরতে পারেন প্রিন্স কোট; পছন্দ মাফিক ধুতি বা পায়জামা বেছে নিতে পারেন।
পাঞ্জাবির পাশাপাশি ফতুয়া-শার্টও রয়েছে সাধ্যের মধ্যে। বেছে নিতে পারেন নিজের স্বাচ্ছন্দ্যমতো। বিজেন্সের সহ-উদ্যোক্তা ও নকশাকার জিনাত জাহান নিশার কথায়- বিজেন্সের এডামস কালেকশনে পাঞ্জাবি, ফতুয়া, হারেম প্যান্ট, বেলবটম প্যান্ট, কটি, গলার লকেট; সব আয়োজনই রয়েছে।
এবার পূজায় কাপল পোশাকেরও বেশ আধিপত্য। যদিও কয়েক বছর ধরেই এর বেশ প্রচলন। সে কারণেই ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে অধিকাংশ ফ্যাশন হাউসে জায়গা করে নিয়েছে কাপল ড্রেস। এতদিন কাপল ড্রেস বলতে শাড়ি আর পাঞ্জাবি বোঝালেও সম্প্রতি একই ডিজাইনের শার্ট-থ্রিপিসেও ঘুরতে দেখা যায় দম্পতিদের। ফলে কাপল পোশাকও হতে পারে পরিবার নিয়ে পূজা উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ। এ ছাড়া বাঙালি হিন্দু নারীদের জন্য
শাঁখা-পলাও এখন জায়গা করে নিয়েছে ফ্যাশনে। বাহারি পলা পাওয়া যায় বাজারে। পোশাকের মতো অনলাইন থেকেও সংগ্রহ করা যেতে পারে এগুলো। তবে আর দেরি কেন?