
প্রতীকী ছবি
কথার ট্রেন লাইনচ্যুত হতে সময় লাগে না। দুজনের মধ্যে কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে সৌহার্দপূর্ণ আলাপ শুরু হলেও হঠাৎই বিপরীত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। দু-একটি কথায় পাল্টে যেতে পারে পরিবেশ। তর্ক-বিতর্কে উত্তপ্ত হতে পারে চারপাশ। এমন হঠাৎ বাদানুবাদ কিছুক্ষণ পর থেমে গেলেও তার রেশ থেকে যায়। এর জেরে অনেকের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। এটি হতে পারে বন্ধুদের মধ্যে কিংবা সহকর্মীদের মধ্যে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কথোপকথন বাদানুবাদের দিকে গেলে কী করবেন। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন নাকি অন্যকে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে যেটা করণীয় সেটি হচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার। এ ক্ষেত্রে কিছুটা আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হলেও ওই পরিবেশ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সহকর্মীর সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে কথোপকথন বাদানুবাদের দিকে যাচ্ছে, বোঝা মাত্রই আগে ভাবতে হবে ওই মুহূর্তে কী করবেন। যা বোঝাতে চাচ্ছেন তা কি অপর পক্ষ আদৌ বুঝতে পারছে? বুঝলে কথা বলুন আর না বুঝলে ওখানেই থেমে যান। অযথা কথা বাড়িয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার প্রয়োজন নেই।
যদি আন্দাজ করতে পারেন যে কথোপকথন তর্ক-বিতর্কের দিকে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে নিজ থেকেই সমাপ্তি টানতে পারেন। দৃঢ়ভাবে বা শান্তভাবে অপর পক্ষকে বোঝান- এ বিষয়ে আর কথা বলতে চান না। আলোচনায় বিরতি নিতে পারেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হলে বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে বেরিয়ে আসতে পারেন। উত্তেজনা উপশম হতে চোখে-মুখে ঠান্ডা পানি দিয়ে নিরিবিলি কোথাও বসে বিশ্রাম নিতে পারেন। তাতে আত্মনিয়ন্ত্রণ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। কিংবা প্রতিপক্ষের সঙ্গে করতে পারেন বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ।
বাদানুবাদ ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকলে মাঝপথে থামিয়ে দিতে বলতে পারেন, চলুন, চা খেয়ে আসি। এ ব্যাপারে না হয় পরে আলোচনা করা যাবে। কোনো কিছু নিয়ে কথা বলার আগে ভাবা উচিত বিষয়টি বাদানুবাদ তৈরি করতে কতটা উদ্দীপকের ভূমিকা পালন করবে। তারপরই আলোচনায় যাওয়া উচিত। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করা উচিত।
অনেক সময় দুঃখ প্রকাশ করে তর্ক-বিতর্ক থামিয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আলোচনা উত্তপ্ত পরিবেশের দিকে যাচ্ছে বুঝতে পারলে নিজের ভুল স্বীকার করতে পারেন। তা না হলে স্যরি বলতে পারেন যা আপনার প্রতিপক্ষকে শান্ত করতে সাহায্য করবে। ফলে পরিবেশ আর উত্তপ্ত হবে না।
যদি পরিবেশ শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ না থাকে তবে শেষ চেষ্টাটি করতে পারেন। প্রতিপক্ষকে বোঝাতে পারেন তর্ক-বিতর্ক বা বাদানুবাদ কোনো সমাধান নয়। এ ক্ষেত্রে সমাধানের চেষ্টা করাটাই আসল প্রয়োজন। প্রতিপক্ষকে বোঝান বিরোধ মীমাংসার দিকে গেলেই শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কথোপকথন বাদানুবাদের দিকে গেলে ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের আগে সংযম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি। তবেই কোন পথে যাবেন সে সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন, যা আপনাকে বাদানুবাদ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। একটি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে পারেন।