
প্রতীকী ছবি
শিশু যদি নিজে কিছু এক্সপেরিমেন্ট করে শিখতে চায়, তাহলে উৎসাহ দিন। হয়তো ও প্রশ্ন করল, গাছ কীভাবে বড় হয়? চাইলে বীজ বা গাছের চারা পুঁতে ওকেই খেয়াল করতে বলুন। দেখবেন, এভাবে শিখলে কোনোদিন এই শেখাটা ভুলে যাবে না। শুধু এখানেই শেষ নয়। চাইলে ওকে হটিকালচার বা নার্সারিতে নিয়ে যেতে পারেন-
বড় হয়ে ওঠার প্রত্যেকটা ধাপে শিশুরা নতুন কিছু শেখে। আর শেখার জন্য এই বয়সটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ে শিশুরা যা শেখে, তারপর ওদের পছন্দ-অপছন্দ, ভাবনা-চিন্তার ওপর প্রভাব ফেলে। তাই শিশুদের সামনে মুখ গোমড়া করে রাখবেন না, কিংবা মারধর করে কিছু শেখাতে যাবেন না। খেয়াল রাখবেন ওদের শেখাটা যেন আনন্দের হয়।
আনন্দ নিয়ে কোনো কিছু শিখলে সেটা দীর্ঘদিন মনে থাকে। তাই মা-বাবা যদি ঠিকমতো গাইড করতে পারেন, উৎসাহ দেন তাহলে মজার সঙ্গে শেখার এই ব্যাপারটা ওদের জন্য আরও সহজ হয়ে যায়। এজন্য শিশুকে ওর নিজের মতো করে চলতে দিন।
অভিভাবকদের ভুলে গেলে চলবে না, একজন শিশু সব বিষয়ে সমান তুখোড় হবে না। তাই ওর মতো করেই শিখতে দিন। আর মূল কথা হলো শিশুদের শেখার শুরুর দিকে একটা ছন্দ থাকে। শুধু শুধু বাধা দিয়ে সেই ছন্দ নষ্ট করবেন না। তাই শিশুকে তার পছন্দের কাজ দিয়ে শুরু করতে দিন। যদি না পারে চেষ্টা করতে থাকুক। চেষ্টা করতে করতে একদিন ঠিকই শিখে নেবে। কিন্তু যদি জোর করে শেখাতে যান, তাহলে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
আরেকটা করণীয় হলো, জোর করে শিশুকে কিছু না দেখানো। বরং খেয়াল রাখতে হবে ও কোন জিনিসটায় আগ্রহ দেখাচ্ছে। হয়তো ওকে বাগানের গাছের পাতা বা কোনো প্রাণী দেখাচ্ছেন। কিন্তু ওর ভালো লাগছে না। ও হয়তো প্রজাপতি দেখছে, কিংবা আকাশে উড়ে যাওয়া উড়োজাহাজ দেখছে। তখন উচিত হবে, ওর আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে গাইড করা। এতে ওর নিজস্ব চিন্তার জগৎ তৈরি হবে। ওর চিন্তাশক্তি বাড়বে, অনেক কিছু ভাবতে শিখবে।
মনে রাখতে হবে, হাসি ও ভালোবাসায় যত সহজে শিশুকে শেখানো যায়, উৎসাহ দেওয়া যায়, আর কোনোভাবে সেটা সম্ভব হয় না। এমনও হতে পারে পাজল সমাধান করতে পারছে না, তখন তাকে সাহায্য করুন। তবে ও যতটুকু করেছে তার জন্য অবশ্যই প্রশংসা করবেন। তাহলে সে খুশি হবে, আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়বে।
সব ব্যাপারে নাক গলাচ্ছেন বা ওর দ্বারা কিছুই হয় না- এই ধরনের মনোভাব শিশুর মধ্যে তৈরি হবে না। আর শিশুর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তো আছেনই।
শিশু যদি নিজে কিছু এক্সপেরিমেন্ট করে শিখতে চায়, তাহলে উৎসাহ দিন। হয়তো ও প্রশ্ন করল, গাছ কীভাবে বড় হয়? চাইলে বীজ বা গাছের চারা পুঁতে ওকেই খেয়াল করতে বলুন। দেখবেন, এভাবে শিখলে কোনোদিন এই শেখাটা ভুলে যাবে না। শুধু এখানেই শেষ নয়। চাইলে ওকে হটিকালচার বা নার্সারিতে নিয়ে যেতে পারেন। তাহলে ওর আগ্রহের ব্যাপারে আরও কিছু জানতে পারবে।
অনেক সময় শিশুরা খুব সহজে বিরক্ত হয়ে যায়। হয়তো দোকানে গেলেন, সেখানে লম্বা লাইন। দেখবেন সে আর কিছুতেই স্থির থাকছে না। তখন লম্বা লাইনে কতজন দাঁড়িয়ে আছে তা গুনতে বলুন। তাহলে ও গুনতে শিখবে, আবার আনন্দও পাবে।
শেষ কথা যেটা বাস্তবে করা সম্ভব শিশুকে সেটাই করতে দিন। প্রথমে ক্রেয়ন বা মার্কার ধরতে শেখান। তারপর ওকে আঁকতে দিন। ও যখন পারবে তখন সেই আনন্দে আরও শিখতে চাইবে। দেখবেন এভাবেই শিশুরা নতুন নতুন অনেক কিছু শিখবে।