
মডেল শিমু। ছবি: মনজু আলম
শীত শেষে বসন্তে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। এতে ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়, যা ব্রণ ও অ্যালার্জির সমস্যা বাড়াতে পারে। সঠিক পরিচর্যা, প্রাকৃতিক উপাদান ও নিয়মিত যত্নই ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখবে।
ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতা, তৈলাক্ততা ও সংবেদনশীলতা পরিবর্তিত হয়। শীতের শুষ্কতা ত্বককে রুক্ষ করে তোলে, সঙ্গে বসন্তে ধুলাবালি ও আর্দ্রতা ব্রণ ও অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ায়। এ ছাড়া ঘাম ও তেল জমে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা ব্রণের কারণ হতে পারে। তাই প্রতিটি ঋতুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি, যাতে ত্বক সুস্থ, উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে। নিয়মিত পরিচর্যা না করলে ত্বকের শুষ্কতা, র্যাশ, অকাল বলিরেখা ও অন্যান্য সমস্যার শিকার হতে পারে।
ত্বকের আর্দ্রতা ফেরাতে: শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে সবচেয়ে জরুরি হলো ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনা। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা বাদাম তেল রাতে ত্বকে ম্যাসাজ করলে ত্বক গভীর থেকে পুষ্টি পায়। পাশাপাশি মধু ও দইয়ের মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে ওঠে।
মৃদু স্ক্র্যাবিং করতে হবে: শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার ফলে মৃত কোষ জমে ত্বক রুক্ষ দেখাতে পারে। তাই সপ্তাহে দু-তিন দিন স্ক্র্যাবিং করা দরকার। ওটস ও মধুর মিশ্রণ একটি ভালো প্রাকৃতিক স্ক্র্যাবার হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া চালের গুঁড়া ও টক দই মিশিয়ে মুখে লাগালে তা ডেড সেল তুলে ত্বককে উজ্জ্বল করে।
সঠিক ফেসপ্যাক ব্যবহার: বসন্তকালে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক খুব কার্যকর। শুষ্ক ত্বকের জন্য কলা ও মধুর প্যাক ভালো কাজ করে, আর তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মুলতানি মাটি ও গোলাপজলের মিশ্রণ ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বকের যত্ন: যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাদের বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরি। প্রতিদিন মুখ ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে নারকেল তেল, বাদাম তেল বা অলিভ অয়েল প্রতিদিন রাতে ম্যাসাজ করা যেতে পারে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ওটমিল ও দইয়ের প্যাক ভালো কাজ করে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং খসখসে ভাব দূর করে।
নারীদের জন্য যত্ন: নারীদের ত্বক সাধারণত বেশি সংবেদনশীল হয়, তাই ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যত্নেও বাড়তি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিন সকালে ও রাতে মৃদু ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়া, টোনার ব্যবহার করা এবং ময়েশ্চারাইজার লাগানো জরুরি। ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে হলুদ, মধু ও কাঁচা দুধের মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠোঁট ও হাতের যত্নে রাতে ঘুমানোর আগে ভ্যাসলিন বা নারকেল তেল লাগানো ভালো ফল দিতে পারে।
পুরুষদের জন্য যত্ন: পুরুষদের ত্বক সাধারণত মোটা ও বেশি তৈলাক্ত হয়। তাই এ সময় ফেসওয়াশ দিয়ে নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করা দরকার। শেভ করার পর অ্যালোভেরা জেল বা গোলাপজল ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ ও নরম থাকে।
তরুণ-তরুণীদের জন্য টিপস: যাদের ব্রণের সমস্যা বেশি, তারা দিনে দুবার মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। হলুদ ও মধুর মিশ্রণ ব্রণ কমাতে সহায়ক হতে পারে। এ ছাড়া শসার রস মুখে লাগালে এটি ত্বকের জন্য ভালো টোনার হিসেবে কাজ করে। সঙ্গে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলে গেলে চলবে না।
ভেতর থেকে সুস্থ ত্বক: ত্বকের যত্ন শুধু বাইরের যত্নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, শাক-সবজি ও ফলমূল খাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কমলা, লেবু ও টমেটো ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে।