Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

রোজায় ত্বকের যত্ন

Icon

সুবর্ণা মেহজাবীন

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৫৪

রোজায় ত্বকের যত্ন

ছবি: মডেল মিম।

রমজান মাস মানেই ইবাদত, সংযম ও সুস্থতার প্রতিশ্রুতি। তবে দীর্ঘ সময় ধরে রোজা থাকার কারণে শরীরের পাশাপাশি ত্বকের ওপরও এর প্রভাব পড়ে। সারা দিন পানি না খাওয়া, অনিয়মিত ঘুম ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের ফলে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক, নিস্তেজ ও প্রাণহীন। কেউ ভুগছেন ব্রণের সমস্যায়, কেউবা অতিরিক্ত তেলতেলে ত্বকের যন্ত্রণায়। চোখের নিচে কালো দাগ, ফাটা ঠোঁট কিংবা মলিন চেহারা যেন অনেকের জন্যই রোজার সময়ের চিরচেনা সমস্যা। তবে সঠিক যত্ন ও কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। রোজার সময় শরীরের পাশাপাশি ত্বকেরও যত্ন নিন, যাতে ঈদে ত্বক থাকে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। কীভাবে রোজায় ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখবেন।

পানিশূন্যতা ও ত্বকের শুষ্কতা: দিনের দীর্ঘ সময় পানি পান করা সম্ভব হয় না বলে শরীরের মতো ত্বকেও পানিশূন্যতা দেখা দেয়। ফলে ত্বক খসখসে ও মলিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যাদের শুষ্ক ত্বক, তাদের সমস্যা আরো বেশি হয়।

ব্রণ ও অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব: রোজার সময় খাদ্যাভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন আসে। ইফতারে ভাজাপোড়া ও মসলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হয়, যা শরীরে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন করে। এই তেল যখন ত্বকে জমে, তখন লোমকূপ বন্ধ হয়ে ব্রণের সৃষ্টি হয়। 

চোখের নিচে কালো দাগ: অনিয়মিত ঘুম, পানিশূন্যতা ও পরিশ্রান্ত শরীরের প্রভাব পড়ে চোখের আশপাশের ত্বকে। রোজায় অনেকেই রাতে দেরি করে ঘুমান এবং  সেহরিতে ওঠেন, আবার অফিসের কারণে ভোরে ওঠেন। এতে ঘুমের ঘাটতি হয়। এতে চোখের নিচে কালি পড়ে যায়, যা মুখের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে দেয় এবং ত্বকও প্রাণহীন ও মলিন দেখায়।

ফাটা ঠোঁট ও শুষ্ক ত্বক: রোজার সময় সারা দিন পানি না খাওয়ার কারণে ঠোঁট ফাটতে পারে এবং ত্বক আরো বেশি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যারা সারা দিন শুষ্ক আবহাওয়ায় বা এসির মধ্যে থাকেন, তাদের ত্বক দ্রুত রুক্ষ হয়ে যায়।

ঘরোয়া সমাধান 

১. ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
২. শসা, তরমুজ, কমলা, ডাবের পানি, টক দই এবং অন্যান্য জুস খেলে ত্বক ভেতর থেকে আর্দ্র থাকবে।
৩. রাতে শোবার আগে মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগান, এতে ত্বক নরম ও হাইড্রেটেড থাকবে।
৪. অ্যালোভেরা জেল ত্বকে লাগালে শুষ্কতা কমবে এবং ত্বক সতেজ থাকবে।
৫. ব্রণ প্রতিরোধে ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
৬. দিনে অন্তত দুইবার মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন, যাতে লোমকূপে ময়লা জমতে না পারে।
৭. মুলতানি মাটি ও গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগান, এটি অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে এবং ব্রণ কমায়।
৮. ঠান্ডা টি-ব্যাগ, শসার রস বা আলুর রস চোখের নিচে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন, এটি ডার্ক সার্কেল দূর করতে সাহায্য করবে।
৯. চোখের চারপাশে বাদাম তেল বা নারকেল তেল হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন, এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং কালো দাগ হালকা হবে।
১০. সারা দিন পানি না খাওয়ার কারণে ঠোঁট যাতে ফেটে না যায়, সে জন্য রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল লাগান।
১১. মধু ও চিনি মিশিয়ে ঠোঁটে হালকা স্ক্রাব করুন, এটি মৃত চামড়া দূর করে ঠোঁট নরম রাখবে। গ্লিসারিন ও গোলাপজল মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হবে।
১২. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ইফতার ও সেহরিতে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কমলা, লেবু, পেয়ারা ও আমলকী খান, যা ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখে।
১৩. দই, মধু ও বেসন মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন, এটি ত্বককে উজ্জ্বল করে।
১৪. প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট ফেস ম্যাসাজ করুন নারকেল তেল বা অ্যালোভেরা জেল দিয়ে, এটি ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখবে।

টিপস

১. প্রতিদিন অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট ত্বকের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করুন।
২. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, বিশেষ করে দিনের বেলায় বাইরে গেলে।
৩. অ্যালকোহল ও পারফিউমযুক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ত্বক আরো শুষ্ক করতে পারে।
৪. ক্যাফেইন ও অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার কম খান, কারণ এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫