Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

ঘুরে আসুন পর্যটন স্বর্গ সিলেটে

Icon

আজহার মাহমুদ

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১২:২৩

ঘুরে আসুন পর্যটন স্বর্গ সিলেটে

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শহর সিলেট।

নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শহর সিলেট। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি প্রাচীন জনপদ সিলেট। বনজ, খনিজ ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিতের জন্য এ জেলা খ্যাত। পর্যটকদের কাছে এক অপার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু সিলেট। পাহাড়, চা-বাগান, নদী এবং হাওর-বাঁওড়সহ এখানকার অনন্য ভূ-প্রকৃতি যেকোনো প্রকৃতি প্রেমিককে মুগ্ধ করে তুলতে পারে। সিলেটে বেড়াতে গেলে আশপাশের যেসব দর্শনীয় স্থান দেখবেন।


জাফলং: সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে অন্যতম সিলেটের জাফলং। সিলেট নগরী থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলংয়ের অবস্থান। এখানকার পাহাড়, ঝর্ণা ও চা-বাগান ঘুরে দেখার মতো। জাফলংয়ের প্রধান আকর্ষণ মেঘালয় পাহাড়ের কোলে পিয়াইন নদ। সীমান্তের ওপারে ভারতীয় পাহাড় টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরামধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও সুনসান নীরবতা পর্যটকদের মোহাবিষ্ট করে রাখে। এখানে রং-বেরঙের পাথর পর্যটকদের বিশেষভাবে নজর কাড়ে।


লালাখাল: লালাখাল সিলেট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর দুই ধারের অপরূপ সৌন্দর্য, দীর্ঘ নৌপথ ভ্রমণের সাধ যেকোনো পর্যটকের কাছে এক দুর্লভ আকর্ষণ। লালাখাল বেড়ানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল। বর্ষার স্রোত থাকে না তখন; পানি শান্ত, স্বচ্ছ। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের স্থান এই লালাখাল। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। পথে পাবেন ভারতীয় সীমান্তের জিরো পয়েন্ট, লালাখাল টি-গার্ডেন।


সাদা পাথর: সিলেটের আরেকটি অসাধারণ গন্তব্য হলো ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, যা দেশের বৃহত্তম পাথর কোয়ারি এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই এলাকা তার অপরূপ নৈসর্গিক দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত। সাদা পাথর, পাহাড়ি নদীর স্ফটিক স্বচ্ছ পানি আর মেঘালয়ের মেঘলা পাহাড় ভোলাগঞ্জকে করে তুলেছে অনন্য। এখানে ঘুরে বেড়ানোর সময় মনে হয় যেন এক ভিন্ন গ্রহ।


মাধবপুর লেক: পর্যটকদের আকর্ষণ হলো মাধবপুর লেক। এই লেকটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা-বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত। ছবির মতো সুন্দর এই মনোরম লেকের জলে ফুটে রয়েছে পদ্মফুল। একেক ঋতুতে মাধবপুর লেকের যেন একেক রূপ।


পাথারিয়া পাহাড়: পাথারিয়া পাহাড় মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত। মৌলভীবাজারের কাঁঠালতলী বাজার থেকে আট কিলোমিটার পূর্বে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও পাথারিয়া বনভূমির অবস্থান। মনোমুগ্ধকর মাধবকু- জলপ্রপাত হলো প্রায় ২০০ ফুট ওপর থেকে আছড়ে পড়া জলের স্রোত। সে এক অপূর্ব দৃশ্য। জলপ্রপাত ও আশপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এ ছাড়া এই পাহাড়ের বুকজুড়ে রয়েছে আরো অসংখ্য ছোট ছোট ঝরনা।


একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল: সিলেটের রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন (সোয়াম্প ফরেস্ট)। বর্ষা মৌসুমে এই বন পানিতে ডুবে থাকে এবং এখানে নৌকা ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা চিরস্মরণীয়। শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রাতারগুল প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এক চমৎকার স্থান। পাখির কলরব, জলজ উদ্ভিদের সবুজ আভা এবং ঠান্ডা হাওয়া  মনকে নিমিষেই শান্ত করে।


চা-বাগান: সমতল ভূমি থেকে উঁচু পাহাড়ের ঢালে বিস্তৃত সবুজাভ চা-বাগানগুলো মনে এক অনাবিল শান্তির অনুভূতি তৈরি করে। জাফলং, মালনীছড়া এবং লাক্কাতুরা চা-বাগান ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি চা-শিল্পের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে এবং প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে সিলেটের চা-বাগানগুলো নিঃসন্দেহে এক চমৎকার গন্তব্য।

শ্রীমঙ্গল: ঘুরে বেড়ানোর জন্য চমৎকার জায়গা সিলেটের পাশের জেলা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। চা-বাগানের সারি সারি টিলা, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ আর ঘন সবুজ অরণ্যের অপরূপ সৌন্দর্য। এখানে যেমন বনভূমি রয়েছে, তেমনি রয়েছে হাওর আর বিল। পাশাপাশি আদিবাসী খাসিয়া, মণিপুরী, গারো, ত্রিপুরা- এদের বাড়িঘরও রয়েছে। চা, রাবার, লেবু, পান, আনারস ও মূল্যবান কাঠের জন্য শ্রীমঙ্গলের খ্যাতি ব্যাপক। শুধু চায়ের জন্য নয়, শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এবং সাত রঙের চা দিয়ে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত। দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদভারে সারা বছর মুখরিত থাকে। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫