
আক্কেল দাঁতে ব্যথা। ছবি: ইন্টারনেট
মানুষের মুখগহ্বরের ওপরের ও নিচের চোয়ালের সবচেয়ে পেছনে বা শেষে উভয় দিকে একটি করে মোট চারটি দাঁত ওঠে। আর এই দাঁতগুলোকে আক্কেল বা উইজডম টিথ বলে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে এই দাঁত উঠে থাকে। কারো এই দাঁত আংশিকভাবে ওঠে। অনেকের মাড়ির নিচেই থেকে যায়।
যখন আক্কেল দাঁত ওঠে তখন প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ব্যথায় মুখের ভেতরসহ গালও ফুলে যায়। মানুষের দুধ দাঁতগুলো পড়ে যাওয়ার পর ফাঁকা জায়গায় স্থায়ী দাঁতগুলো আসতে থাকে। অর্থাৎ স্থায়ী দাঁতগুলোর জন্য ফাঁকা জায়গা থাকে; কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আক্কেল দাঁতের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে না। আক্কেল দাঁত তখন আংশিকভাবে এবং আঁকাবাঁকা হয়ে ওঠে, কখনো উঠতেই পারে না; মাড়ির নিচে লুকিয়ে থাকে। ফলে আক্কেল দাঁতের মাড়ির টিস্যুর নিচে খাবার জমে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের কারণে মাড়িতে ইনফেকশন হতে পারে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে পেরিকরোনাইটিস বলে। এই ইনফেকশনের ফলে মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হয়। মুখে দুর্গন্ধ হয় এবং কারো কারো জ্বরও হতে পারে। ভেতরের দিকে এই দাঁতের অবস্থান হওয়ায় ব্রাশ ঠিকমতো পৌঁছে না। এতে আক্কেল দাঁত ও তার পাশের দাঁত দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আক্কেলদাঁত ব্যথা কমাতে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। যেমন:
১. দাঁত ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো লবণ। এটি মুখের ভেতরে যে কোনো ইনফেকশন সারাতেও কার্যকরী। একগ্লাস কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে নিন। তারপর সেই পানি দিয়ে কুলি করুন। দিনে অন্তত ৩/৪ বার কুলি করলে আপনার আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমবে।
২. পেঁয়াজে আছে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিমাইক্রবিয়াল উপাদান। আর এগুলো দাঁতের ব্যথা, জীবাণু সারাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজের কোয়া নিয়ে আক্রান্ত দাঁতে দিয়ে রাখুন। ব্যথা অনেকটাই কমবে।
৩. যে দাঁতে ব্যথা, সেখানে একটি লবঙ্গ রেখে দিন। এটি চিবোনোর দরকার নেই। ব্যথা না কমা পর্যন্ত মুখে রাখুন। তাছাড়া হাতে কয়েক ফোঁটা লবঙ্গের তেল নিয়ে দাঁতে ম্যাসাজ করুন।
৪. দাঁত ব্যথা কমাতে রসুনের জুড়ি নেই। রসুনের কোয়া ব্যথায় আক্রান্ত দাঁতে চেপে ধরে রাখুন। উপকার পাবেন।
৫. এক কাপ গরম পানিতে হাফ চা চামচ হলুদের গুঁড়া, দুটি লবঙ্গ ও দুটি শুকনো পেয়ারা পাতা নিন। কুলকুচি করুন। মাড়ির ক্ষত ও দাঁতের ব্যথা অনেকটাই কমবে।
শুধু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যথা না কমলে ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত।