Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

আয়নাকাহন

Icon

সাফওয়ানা জাবীন

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১০:০৭

আয়নাকাহন

আয়না সাজের এক অপরিহার্য অংশ। আয়না ছাড়া কি আর সাজ হয়? তবে নিজেকে দেখার পাশাপাশি ঘর সাজাতেও আয়নার ব্যবহার হচ্ছে। 

ঘরে প্রবেশের সময় অতিথি যেখানে দাঁড়িয়ে কলিংবেল বাজান, সুন্দর একটি আয়না সেখানেও রাখতে পারেন। রাখতে পারেন সুন্দর একটি আয়না। এতে ঘরে প্রবেশের সময় নিজেকে কেমন লাগছে, তা দেখে নেয়ার সুযোগ থাকে। বাড়ির প্রবেশ পথটিকে গাছ, শোপিস আর মোমবাতি দিয়ে সাজানো যেতে পারে। একটি আয়নাকে কেন্দ্র করেই এসব উপকরণ সাজিয়ে নিন।

আয়না নিয়ে অনেক মিথ রয়েছে। প্রাচীন গ্রিসে আয়না ব্যবহার করত ডাইনিরা। খ্রিস্ট জন্মের প্রায় ৩০০ বছর আগে মিথগুলোতে রয়েছে, ডাইনিরা নিজেদের দৈবাদেশ ও বাণীগুলো লিখে রাখতো আয়নার মাধ্যমে। প্রাচীন রোমেও আয়নার প্রচলন ছিল। সেখানে ধর্মগুরুরা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বর্ণনা করার জন্যে আয়না ব্যবহার করতেন। প্রাচীন চীনে চাঁদের স্বর্গীয় শক্তি ধরে রাখার জন্য আয়না ব্যবহারের চল ছিল। কথিত আছে, চীনের এক সম্রাট যাদুকরী এক আয়না বসিয়েই নিজের সাফল্য পেয়েছিলেন। 

বর্তমানে আয়না তৈরিতে অ্যালুমিনিয়ামের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়। তবে প্রাচীন মিসরীয়রা ব্যবহার করতো তাম্রচূর্ণ। তামার সাথে দেবী হাথোরের সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করত মিসরীয়রা। হাথোর ছিলেন সৌন্দর্য, প্রেম, কাম, সমৃদ্ধি ও জাদুর দেবী। প্রাচীন অ্যাজটেকরা আয়না বানানোতে ব্যবহার করত অবসেডিয়ান যা মূলত কাচের মতো দেখতে একজাতীয় কালো আগ্নেয়শিলা। অ্যাজটেকরা বিশ্বাস করত তারা দেবতা তেজকেটলিপোকার সাথে সম্পৃক্ত। রাত্রি, সময় ও বংশ পরিক্রমায় পাওয়া স্মৃতির দেবতা ছিলেন এই তেজকাটলিপোকা। স্বর্গলোক থেকে এই মাটির পৃথিবীতে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে শক্তিধর এই দেবতা আয়নাকে তার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতেন।

এইতো হলো আয়না নিয়ে প্রাচীন মিথের কথা। কিন্তু বর্তমান সময়ে আয়নার ব্যবহার নানা আঙ্গিকে হয়ে থাকে। ঘরের একটা দেয়ালজুড়ে আয়না থাকলে ঘরটিকে বেশ বড় দেখায়। আবার ঘরের দেয়ালে নানান আকৃতির আয়না ব্যবহার করা হলে দেয়ালটাকে বেশ অন্যরকম লাগে। কাঠ ও বেতের পাশাপাশি এখন নানা উপাদানে তৈরি হচ্ছে আয়নার ফ্রেম। কোনো কোনো আয়নায় ফ্রেমজুড়ে আবার বসানো থাকে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি আয়না। ত্রিকোণ, চৌকো, লম্বা, গোল এমন নানা আকৃতির ছোট-বড় বেশ কয়েকটি আয়না দিয়ে সাজাতে পারেন আপনার ঘরের দেয়ালগুলো। আয়নাগুলোর ফাঁকে ফাঁকে রঙ করে সাজিয়ে নিতে পারেন দেয়ালটি।

ফলস সিলিং তৈরিতে অনেক সময় কাচ ব্যবহার করা হয়। চাইলে সেখানে আয়নাও ব্যবহার করতে পারেন। অলঙ্কারের দোকানের ছাদ আর একপাশের দেয়ালে আয়না লাগানো থাকে। এতে আলো প্রতিফলিত হয়ে পুরো দোকানটিকে সুন্দর আর বড় দেখায়। বাড়িতেও এভাবে আয়না ব্যবহার করা যেতে পারে।

শোবার ঘরের একপাশের দেয়ালে আয়না লাগিয়ে নিলে সেখানে ড্রেসিং টেবিল না রাখলেও চলে। এতে করে ড্রেসিং টেবিলের জন্য আলাদা জায়গা লাগবে না। ফলে ঘরটিতে অন্য আসবাব রাখার জন্য যথেষ্ট জায়গা পাওয়া যাবে।

শিশুদের ঘরের দেয়ালে আয়না লাগাতে চাইলে তাদের পছন্দমতো কার্টুন চরিত্রের ডিজাইনে তৈরি ফ্রেম ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া রঙিন ফ্রেমে বাঁধানো কোনো আয়নাও কিনতে পারেন শিশুর জন্য। লিভিং রুম বা ডাইনিং রুমেও লাগানো যেতে পারে কারুকার্যময় আয়না।

কোথায় পবেন: আড়ং, যাত্রাসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে পাবেন বিভিন্ন ডিজাইনের দারুণ সব আয়না। যেসব দোকানে শুধু শিশুদের সামগ্রী কিনতে পাওয়া যায়, সেসব দোকানেও পেয়ে যেতে পারেন ফ্রেমে বাঁধানো আয়না। এসব স্থান ছাড়াও বিভিন্ন আয়নার দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। এমন দোকান থেকে পছন্দসই নকশায় আয়নাও বানিয়ে নিতে পারেন। আকার ও ডিজাইনভেদে এসব আয়না ৫০০ থেকে ২৪ হাজার টাকার মধ্যেই কিনতে পাবেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫