Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

উচ্চ রক্তচাপের কারণ ও প্রতিকার

Icon

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২১, ২১:৪২

উচ্চ রক্তচাপের কারণ ও প্রতিকার

জীবনযাত্রা মান উন্নয়নের সাথে হুড়হুড় করে বাড়ছে লাইফস্টাইল জনিত সমস্যা। হাইপারটেনশন অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ এমন এক রোগ যা শুধু নিজে আসে তাই নয়, সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত না হলে ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যাসহ আরো অনেক মারণ রোগকেও সাথে নিয়ে আসে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে 'সাইলেন্ট কিলার' বলে বর্ণনা করে থাকেন। কারণ, চুপিসারে কখন যে এই রোগ আমাদের শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে দেয় আমরা বুঝতেও পারি না। 

গবেষণা বলছে ৪৫ শতাংশ মানুষ জানেনই না যে, তারা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগছেন। তাই এখন ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়ে থাকেন নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষার। আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন তথ্য অনুযায়ী 120/80 mm/Hg কে নরমাল ব্লাড প্রেসার হিসাবে ধরা হয়।

কী কী কারণে ব্লাড প্রেসার বাড়ে?

এর সঠিক কারণ হিসাবে বর্তমানে মনে করা হয়, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড খাওয়া, অতিরিক্ত  লবণের ব্যবহার ও কিছুটা জিনগত কারণ উল্লেখযোগ্য । এ ছাড়াও ধূমপান, মদ্যপান, অতিরিক্ত ওজনকে অনেকাংশে  দায়ী করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন যে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যাগুলোকে শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ করলে ধীরে ধীরে ওষুধের পরিমাণও কমতে থাকবে। 

দেখে নিন নিয়মিত কোন কোন খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকা যাবে :

১. শাকসবজি : সাধারণত শাকসবজিতে প্রচুর নাইট্রেট থাকে, যা ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করে।

২. বেরী: ব্লু বেরী বা স্ট্রবেরিতে রয়েছে অন্থসায়ানইন (এক প্রকার ফ্লাভোনওয়েড)। গবেষণায় দেখা গেছে এই এন্টিঅক্সিডেন্টটির নিয়মিত গ্রহণে হাই ব্লাড প্রেসারের শঙ্কা প্রায় ৮% কমে যায়।

৩. কলা: পাকা কলাতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম যা রক্তচাপ কমাতে বেশ উপযোগী।

৪. বিট: বিট শুধু রংয়েই নয়, পুষ্টিতেও পরিপূর্ণ। এতে রয়েছে প্রচুর ইনোরগানিক নাইট্রেট যৌগ, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই তরকারি হোক বা স্যালাড ডায়েটে রাখতেই হবে বিট।

৫. ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট বর্তমানে হেলদি ডায়েটের একটি অন্যতম পার্ট। প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম ও পলিফেনলের উপস্থিতির জন্য রক্তচাপ কমাতে ডার্ক চকলেট বেশ উপকারী। ভালো ঘুমের জন্যও এর বিকল্প নেই।

৬. কিউই ফল: এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, ও বায়ো এক্টিভ যৌগ যা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে উপযোগী।

৭. তরমুজ: এতে রয়েছে এমাইনো এসিড সিট্রুলিন যা দেহে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে, ফলে ব্লাড প্রেসার ও নিয়ন্ত্রণে থাকে, এছাড়াও এতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় হাইড্রেশনেও সাহায্য করে।

৮. ওটস: এতে রয়েছে ফাইবার বিটা গ্লুক্যান যা দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সর্বোপরি ব্লাড প্রেসার ও নিয়ন্ত্রণ করে।

৯. রসুন: রসুনে উপস্থিত এলিসিন দেহে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বাড়িয়ে সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে। তাই রান্নায় মসলা হিসাবে রসুনের ব্যবহার অপরিসীম।

১০. টক দই: টক দই তে উপস্থিত উপকারী প্রো বায়োটিক ব্যাকটেরিয়া ল্যাকটোব্যাসিলাস শুধু গাট হেলথ ভালো রাখে তাই নয়, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ও রক্তচাপ ও নিয়ন্ত্রণ করে।

১১. বেদানা : বেদানাকে আমরা বলি সুপার ফুড, প্রচুর পলিফেনলের উপস্থিতির জন্য শুধু যে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে তাই নয়, কোলেস্টেটলের মাত্রা কমায় ও হার্টের পাম্পিং ক্ষমতাও ভালো রাখতে সাহায্য করে।

১২. দারচিনি: প্রাচীন ভারতীয় মশলা গুলির মধ্যে দারচিনি অন্যতম। সারাদিনে রান্নায় বা ডিটক্স ওয়াটারে দারুচিনির পর্যাপ্ত ব্যবহার রক্তবাহ গুলির এলাস্টিসিটি বাড়ায়। ফলে দেহে রক্ত সংবহন ভালো হয়।

১৩. নাটস ও সিডস : বিভিন্ন উপকারী নাটস যেমন আমন্ড, আখরোট ইত্যাদিতে রয়েছে উপকারি ফ্যাট, বিভিন্ন সিডস যেমন পাম্পকিন, সানফ্লাওয়ার, ফ্ল্যাক্স সিড ইত্যাদিতে রয়েছে উন্নতমানের প্রোটিন, ও ফাইবার। যা হার্ট ভালো রাখে, অপকারী ফ্যাটের পরিমাণ কমায়, ও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে। তবে শুধু সুষম খাদ্যই নয়, ব্লাড প্রেসারের মতো নিঃশব্দ মরণব্যাধি সমস্যা গুলিকে প্রতিহত করতে যোগাসন এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করা জরুরি। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫