Logo
×

Follow Us

লাইফস্টাইল

ঢাকায় ৪৪ শতাংশ মানুষ বিষণ্ণতায় ভুগছে

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৫৩

ঢাকায় ৪৪ শতাংশ মানুষ বিষণ্ণতায় ভুগছে

নগরীর ট্রাফিক জ্যাম, বাতাসের মান, বিশুদ্ধ পানির অভাব, ইভিটিজিংসহ আরো কিছু সমস্যা বিষণ্ণতার কারণ হিসেবে গবেষণায় উঠে এসেছে।

রাজধানী ঢাকায় বসবাসকারী ৬৮ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে অসুস্থ। এছাড়া এছাড়া মোট জনগোষ্ঠীর ৪৪ শতাংশই বিষণ্ণতায় ভুগছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসে ঢাকার প্রায় সাড়ে বার হাজার মানুষের ওপর এ সমীক্ষা চালায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

বিবিসি বাংলার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে মানুষের বিষণ্ণতায় ভোগার কারণ হিসেবে নগরীর ট্রাফিক জ্যাম, বাতাসের মান, বিশুদ্ধ পানির অভাব, ইভিটিজিংসহ আরো কিছু সমস্যা বিষণ্ণতার কারণ হিসেবে গবেষণায় উঠে এসেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড: এসএম জুলফিকার আলী বলেন, এ বিষণ্ণতার বড় কারণই হতে পারে অসুস্থতা। এছাড়া ১৭% দরিদ্র। অর্থনৈতিক কারণে তাদের অনেকে বস্তিতে থাকে। বসবাসের সংস্থান নেই অনেকের। এছাড়া নগরীর ট্রাফিক জ্যাম, বাতাসের মান, বিশুদ্ধ পানির অভাব, ইভিটিজিং বিষণ্ণতার কারণ হিসেবে গবেষণায় উঠে এসেছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, মূলত চারটি প্রধান কারণ পাওয়া গেছে যেগুলো মানুষের ওপর চরম মানসিক চাপ তৈরি করছে। এগুলো হলো- অসুস্থতায় ভোগা, দারিদ্র্য, জীবনযাত্রার মান ও দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা ও সব কিছু মিলিয়ে সৃষ্ট সমস্যা।

বিষণ্ণতা থেকে মুক্তির উপায়ের ব্যাপারে ড: জুলফিকার আলী বলেন, সাধারণত বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ থাকে এবং অনেকেই এজন্য চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু সেটি আক্রান্ত হওয়ার পর কিভাবে সুস্থ হওয়া যায় তার একটি উপায়।

তবে মানুষ যেনো বিষণ্ণতার মতো সমস্যায় আক্রান্ত না হয় সেটিও তারা তাদের গবেষণায় দেখার চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এটি ঠিক শহরে মানুষ যেসব কারণে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হচ্ছে সেগুলোর সব রাতারাতি সমাধান সম্ভব না, তবে এমন কিছু পদক্ষেপ নেয়া যায় যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলবে।যেমন, যানজট প্রতিনিয়ত মানুষকে মানসিক চাপে ফেলছে কিন্তু রাতারাতি রাস্তাঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল করে এ সমস্যার সমাধান করা যাবে না।

বিষণ্ণতা কমিয়ে আনতে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করে তিনি। এগুলো হলো-
১. প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে বা যাতে কার্যকর হয় তা নিশ্চিত করতে হবে যেমন ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম খুবই দুর্বল, এটা ঠিক হলে যানজট অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে।
২. নীচের দিকে জনগোষ্ঠী অর্থাৎ দরিদ্র বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী- তারা যাতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশি সুযোগ পায়। এখন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ কম। এই বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. টার্গেটেড ইন্টারভেনশন- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি শহরেও থাকা উচিত। যেমন বায়ু দূষণের মতো সমস্যা ব্যবস্থাপনা ও রেগুলেশনের মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। ইটভাটার ক্ষেত্রে কিংবা যেসব গাড়ীতে কালো ধোঁয়া বা শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ জরুরি।

গবেষণায় উঠে আসা বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য-
১. ঢাকায় অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে বেশি থাকা সত্ত্বেও এখানেও অনেক দরিদ্র আছে।
২. ঢাকার মাত্র চার ভাগের একভাগের নিজস্ব বসবাসের জায়গা আছে।
৩. ক্ষুদ্র পেশাজীবী বা বেতনভুক্ত চাকুরেরাই পেশাজীবী গ্রুপগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
৪. অভিবাসন প্রবণতায় পরিবর্তন এসেছে। এখন উত্তরাঞ্চল থেকে বেশি লোক ঢাকায় আসছে।
৫. ট্রাফিক জ্যাম, বায়ু দূষণ, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও বাজে রাস্তাঘাট নগরবাসীর বড় সমস্যা।
৬. আবার এসব অনেক অসুবিধা সত্ত্বেও মানুষ তেমন অসুখী নয় কারণ কাজের সুযোগের পাশাপাশি ঢাকাতেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা বেশি আছে।
৭. অন্যদিকে শিক্ষা নিয়েও উদ্বেগ আছে।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫