
ছবি: সংগৃহীত
কমবেশি আমরা সবাই পেটের সমস্যায় ভুগি। যতই বেছে খাবার খাওয়া হোক না কেন পেটের সমস্যা দেখা দিতেই পারে। সাধারণত আমরা পেটের সমস্যা বলতে বুঝি আমাশয়, ডায়রিয়া, পেটের ব্যথা, বমি ভাব কিংবা হজমের অসুবিধা।
এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি পেটের সমস্যাগুলো সারা বছর হয়ে থাকে। যেমন গ্যাস্ট্রিক আলসার, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম, খাদ্য হজম না হওয়া, বৃহদন্ত্রের প্রদাহজনিত পেটের সমস্যা ইত্যাদি। আর স্বল্পমেয়াদি পেটের সমস্যা আমাশয়, রক্ত আমাশয়, ডায়রিয়া ইত্যাদি।
নানা কারণে এইসব সমস্যা দেখা দিতে পারে। রাস্তার পাশের খোলা বা বাসি খাবার খেলে, খাওয়া-দাওয়াই অনিয়ম করলে, তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার খেলে, দূষিত পানি পান করলে বা পানি ঠিকমতো না খেলেও এ রোগ হয়।
তবে একটু সচেতন হলেই ঘরোয়া কিছু উপায়ে এসব সমস্যা থেকে ভালো থাকা যায়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
কলা: কলায় থাকে ভিটামিন বি-৬, পটাসিয়াম, এবং ফোলেট। এই পুষ্টি উপাদানগুলো পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও বদহজমের ফলে হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া উপশম করে কলা।
দই: দই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার ঝামেলা দূর হয়।
ডাবের পানি: ডাবের পানিতে আছে প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইট যা শরীর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এই ইলেক্ট্রোলাইট প্রাকৃতিকভাবেই মানব শরীরে পাওয়া যায় কিন্তু শরীর পানিশূন্য হলে বা অসুস্থ হলে শরীর থেকে এর পরিমাণ কমে যায়। ডাবের পানি এটা প্রাকৃতিকভাবে পূরণ করতে সাহায্য করে।
শসা: শসা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকরী খাদ্য। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।
পেঁপে: পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।
আদা: আদা সবচাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান, দেখবেন গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।
ঠাণ্ডা দুধ: পাকস্থলির গ্যাসট্রিক এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় ঠাণ্ডা দুধ। এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করলে অ্যাসিডিটি দূরে থাকে।
দারুচিনি: হজমের জন্য খুবই ভালো। এক গ্লাস পানিতে আধ চামচ দারুচিনির গুঁড়ো দিয়ে ফুটিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার খেলে গ্যাস দূরে থাকবে।
জিরা: জিরা পেটের গ্যাস নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক কাজ করে। পাকস্থলীর এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে পেটের ব্যথা দূর করতে এবং হজমক্রিয়া উন্নত করে জিরায় থাকা পুষ্টিগুণ। এক গ্লাস পানিতে সামান্য জিরার গুঁড়ো মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন।
লবঙ্গ: ২/৩টি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষলে একদিকে বুক জ্বালা, বমিবমিভাব, গ্যাস দূর হয়। সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
এলাচ: লবঙ্গের মতো এলাচ গুঁড়ো খেলে অম্বল দূরে থাকে।
মৌরির পানি: মৌরি ভিজিয়ে সেই পানি খেলে গ্যাস থাকে না।
পুদিনা পাতার পানি: এক কাপ পানিতে ৫টা পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূরে রাখতে এর বিকল্প নেই।
তুলসি: তুলসিতে এমন পদার্থ আছে, যা গ্যাসের সমস্যা কমাতে পারে। এ ছাড়াও ক্ষুধা বাড়ায়, পেটে ব্যথা, অস্বস্তি, ফোলাভাব কমায় এবং সামগ্রিক হজমে উন্নতি করে। তুলসিতে থাকে ইউজেনল। যা পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ হ্রাস করতে পারে।
কাঁচা হলুদ: কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে দ্রুত পেট ফাঁপার সমস্যার সমাধান হবে। যদি কাঁচা খেতে না পারেন, তাহলে হলুদ ছেঁচে নিয়ে পানিতে জ্বাল দিয়ে চা তৈরি করে পান করে নিন।