
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ছয় ঋতুর মধ্যে শীত থেকে বসন্তের পরিবর্তনটাই সব থেকে চোখে পড়ার মতো। সারা বছরই বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ফুল দেখা গেলেও বসন্তকালেই এর সংখ্যা সব থেকে বেশি। বসন্তকালের কিছু প্রধান ফুলের বর্ণনা জেনে নিন-
কৃষ্ণচূড়া
নামটা যেমন সুন্দর, তেমনি কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখতেও অসাধারণ। শীতের দিনগুলো শেষ হওয়ার পর যেন হঠাৎ এক দিন দেখা যায় গাছের আগায় যেন আগুন লেগেছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলটা এমনই হয়। একসঙ্গে অনেক ফুল ফোটে দেখে পুরো গাছটাই যেন বসন্তের আগমনী বার্তা জানায়। লাল, কমলা ও হালকা হলুদ রঙের মিশেলে কৃষ্ণচূড়া বসন্তের সব রঙের প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। বর্ষার শেষভাগ পর্যন্ত থাকে এই ফুলের মৌসুম।
চাঁপা
চাঁপা ফুলের নামের উৎস সংস্কৃত চম্পক শব্দ। চম্পক শব্দের অর্থ হচ্ছে চিরসবুজ। এই নামকরণের পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে। চাঁপা গাছে সারাবছরই পাতা থাকে। এমনকি শীতকালেও চাঁপা গাছের সব পাতা ঝরে যায় না। চাঁপা ফুলও হয় বিভিন্ন রঙের, সাদা, সোনালি কিংবা হলুদ। আর সব থেকে আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, চাঁপা ফুলের গন্ধ। চাঁপার গন্ধে মাতাল হয়ে অনেক কবি-সাহিত্যিকই তাদের সাহিত্যকর্মে এই ফুলের কথা তুলে ধরেছেন। সারাবছরই কম-বেশি এই ফুল ফুটতে দেখা যায়। তবে বসন্তকালে চাঁপাফুল সব থেকে বেশি ফোটে। তাই একে বসন্তের ফুল বলেই চেনে সবাই।
কনকচাঁপা
নাম শুনে মনে হতে পারে কনকচাঁপা হয়তো চাঁপা ফুলেরই কোনো জাত; কিন্তু আদতে তা নয়। এই ফুলের গাছ আকারে ছোট হয়, আর ছোট ছোট মঞ্জুরির ফুল একসঙ্গে অনেকগুলো করে ফোটে। নতুন পাতার রঙ হয় তামাটে; কিন্তু পরিণত পাতার রঙ একদম সবুজ হয়। বসন্ত আসতে না আসতেই কড়া হলুদ রঙয়ের পাপড়ি আর তামাটে রঙের নতুন পাতায় তা একদমই নতুন রূপে দেখা দেয়।
নয়নতারা
এই ফুলের নামও অদ্ভুত সুন্দর, আর ফুলগুলো দেখতেও কিছুটা অদ্ভুত রঙের হয়ে থাকে। ফুলের আকার পয়সার মতো গোলাকার হওয়ার কারণে গ্রামের দিকে একে অনেকে পয়সাফুল বলেও চেনে। নয়নতারা ফুল মানেই রঙের বাহার। সাদা, গোলাপি, হালকা নীল ইত্যাদিসহ আরও অনেক রকমের নয়নতারা ফুল দেখা যায়।
পলাশ
অরণ্যের অগ্নিশিখা বলে পরিচিত এই ফুল একদম রক্তলাল রঙয়ের হয়ে থাকে। শীতকালে এর সব পাতা ঝরে যায়, আর বসন্ত আসতেই লাল ফুলে ভরে যায় পুরো বাগান। রূপের পাশাপাশি এই ফুলের ঔষধি গুণও কিন্তু অনেক।