নতুন মহামারি আসছে। এর নাম স্থুলতা মহামারি ‘Obesity Epidemic’। এই মহামারিতে প্রতি বছর শুধুমাত্র ইউরোপেই ১২ লাখের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। দুই লাখের বেশি মানুষ এই মহামারির কারণে আক্রান্ত হতে পারেন ক্যানসারে। 

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গত ১৫ বছর ধরে এ বিষয় নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ভয়ঙ্কর মহামারির মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব। তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি করে পড়তে চলেছে ইউরোপের উপর। অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার হার মারাত্মক মাত্রায় পৌঁছেছে এবং এখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইউরোপের ৫৯ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যেই ওবেসিটির সমস্যায় আক্রান্ত। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মধ্যে ৮ শতাংশেরই ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি। 

স্থূলতা সম্পর্কিত ইউরোপীয় কংগ্রেসে উপস্থাপিত প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের অন্য যেকোনো অংশের তুলনায় ইউরোপে স্থূলতার প্রকোপ বেশি।

স্থূলতা যেসব রোগ ডেকে আনে তার মধ্যে রয়েছে পেশীসংক্রান্ত জটিলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কমপক্ষে ১৩ ধরনের ক্যান্সার। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি অকাল মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে এবং এটি অক্ষমতার একটি প্রধান কারণ।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ইউরোপীয় অঞ্চল জুড়ে স্থূলতা বছরে কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ ক্যানসার আক্রান্তের ক্ষেত্রে সরাসরি দায়ী হতে পারে এবং এই সংখ্যাটি আগামী দশকগুলোতে আরো বাড়তে পারে। এই অঞ্চলের কিছু দেশের জন্য ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে- স্থূলতা প্রতিরোধযোগ্য ক্যানসারের প্রধান ঝুঁকির কারণ হিসাবে ধূমপানকে ছাড়িয়ে যাবে।

সমীক্ষা অনুসারে, সবচেয়ে বেশি ওজন ও স্থূল প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তালিকায় ইউরোপ দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। শুধুমাত্র স্থূলতার হারে মাল্টার পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার চেয়ে স্থূলতার কারণগুলো আরো জটিল। আধুনিক ইউরোপের উচ্চ ডিজিটালাইজড সমাজে বসবাসের জন্য অনন্য পরিবেশগত কারণগুলোও স্থূলতার কারণ। উদাহরণস্বরূপ- অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয়ের মার্কেটিংসহ ডিজিটাল পরিবেশের দ্বারা শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জীবন বেশি প্রভাবিত হয়। -গার্ডিয়ান