
প্রতীকী ছবি
শরীর অসুখ আমরা সহজেই বুঝে যাই কিন্তু মনের অসুখ বোঝা অতটাও সহজ নয়। নানা ধরনের পারিপার্শ্বিক কারণে একজন মানুষের জীবনে একাকীত্ব, নিঃসঙ্গতা জেঁকে বসে।
আমাদের জীবনে চলার পথে আমরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হই। সমস্যার সমাধান যখন করতে পারি না, তখন নিজেকে একা মনে হয়, তুচ্ছ মনে হয় নিজের কাছে নিজেকে। বাঁচার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
আর এভাবেই জমতে জমতে গড়ে ওঠে মনের মধ্যে একাকীত্বের পাহাড়। একাকীত্ব যখন গ্রাস করে তখন আমাদের কর্মক্ষমতা কমে যায়। মনোযোগ কমে যায়। কোনো কাজ সুন্দর করে করা হয় না। আত্মবিশ্বাস কমতে কমতে আমাদের জীবনের আনন্দগুলোও ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে। এরপর একসময় এটি মানসিক সমস্যায় পরিণত হয়। ধীরে ধীরে সমস্যাটি অনেক বড় রূপ ধারণ করে। এটি তখনই আশংকার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
একাকীত্ব মানুষের সামাজিক দক্ষতা কমিয়ে দেয়। ব্যক্তিত্বের সমস্যা তৈরি করে। তাতে সে আরো একা হয়ে পড়ে। মনের মধ্যে একাকীত্বের পাহাড় যখন জমতে থাকে তখন ক্রোধও তৈরি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার পর ডিজিস কন্ট্রোল বা সিডিসি বলছে, এখন বেশ শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমাণাদি রয়েছে যে একাকীত্ব নানা অসুখের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
সংস্থাটি বলছে, একাকীত্বের কারণে হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে ২৯ শতাংশ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়েয ৩২ শতাংশ।
দীর্ঘদিনের একাকীত্ব মস্তিষ্কের কিছু মনে রাখতে না পারার মারাত্মক অসুখ ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
একাকীত্বের কারণে হতে পারে হার্টের অসুখ।
নিঃসঙ্গ ব্যক্তিদের মধ্যে বিষাদ, উদ্বেগ এবং আত্মহত্যা প্রবণতা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি থাকে।
এসব কারণে নিঃসঙ্গ ব্যক্তিদের তাড়াতাড়ি মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন বলছেন, অনেক মানুষ আছে যারা বাধ্য হয়ে একা থাকে। তাদের অনেকের জন্য একাকীত্ব একটা কারাগারের মতো। নিঃসঙ্গ মানুষ অনেক কিছু নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগে।
তার মনে বেশি উদ্বেগ ও মানসিক চাপ তৈরি হয়। যা শরীরে কিছু স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোন উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, হার্টের উপর চাপ বৃদ্ধি করে, ডায়াবেটিস বাড়াতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ কিডনির অসুখও বাড়িয়ে দেয়।