
প্রতীকী ছবি
ভ্রমণে মানুষ নিরুপায়; বিশেষ করে বাসে। এর বাইরেও অনেক সময় আমরা বাধ্য হয়ে অথবা আলস্যে প্রস্রাব চেপে রাখি। কিন্তু জানেন কি? এ কারণে মারাত্মক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রস্রাব চেপে রাখলে যে ধরনের সমস্যা হতে পারে এ প্রসঙ্গে বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ও সার্জন ডা. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, আপনি কতক্ষণ নিরাপদে আপনার প্রস্রাব ধরে রাখতে পারবেন এর কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশিকা নেই। যে কোনো সময়ের জন্য প্রস্রাব আটকে রাখা বিপজ্জনক হতে পারে। গর্ভবতী মহিলারা ইতোমধ্যেই মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। ফলে গর্ভবতী হলে প্রস্রাব ধরে রাখা এই ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রস্রাব চেপে রাখার ফলে পাঁচটি সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়:
১। ব্যথা: যারা নিয়মিত প্রস্রাব করার ইচ্ছা উপেক্ষা করেন তারা মূত্রাশয় বা কিডনিতে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন। যখন একজন ব্যক্তি অবশেষে বাথরুমে পৌঁছান, তখন প্রস্রাব করার সময়ও ব্যথা হতে পারে। প্রস্রাব বের হওয়ার পরে পেশীগুলো আংশিকভাবে আটকে থাকতে পারে, যা পেলভিক ক্র্যাম্প হতে পারে।
২। মূত্রনালীর সংক্রমণ: কিছু ক্ষেত্রে, প্রস্রাব বেশিক্ষণ ধরে রাখলে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যেতে পারে। ফলে মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI) হতে পারে। অনেক চিকিৎসক দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব করা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। কারণ এটি ইউটিআই-এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যারা পর্যাপ্ত তরল পান করেন না তাদের ইউটিআই হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
ইউটিআই-এর লক্ষণ হলো-
* প্রস্রাবের সময় জ্বলে যাওয়া বা দমকা অনুভূতি
* পেলভিস বা তলপেটে ব্যথা
* মূত্রাশয় খালি করার জন্য অবিরাম তাগিদ
* তীব্র বা দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব
* প্রস্রাবের রং বদলে যাওয়া
* ধারাবাহিকভাবে গাঢ় প্রস্রাব
* এমনকি প্রস্রাবে রক্ত যেতে পারে
৩। মূত্রাশয় প্রসারিত হওয়া: দীর্ঘমেয়াদে নিয়মিত প্রস্রাব ধরে রাখলে মূত্রাশয় প্রসারিত হতে পারে। এটি মূত্রাশয়ের পক্ষে সাধারণত সংকুচিত হওয়া এবং প্রস্রাব ছেড়ে দেওয়া কঠিন বা অসম্ভব করে তুলতে পারে। যদি একজন ব্যক্তির প্রসারিত মূত্রাশয় থাকে, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যবস্থা যেমন একটি ক্যাথেটারের প্রয়োজন হতে পারে।
৪। পেলভিক ফ্লোর পেশীর ক্ষতি: ঘন ঘন প্রস্রাব ধরে রাখলে পেলভিক ফ্লোরের পেশীর ক্ষতি হতে পারে। এই পেশীগুলোর মধ্যে একটি হলো ইউরেথ্রাল স্ফিঙ্কটার, যা মূত্রনালীকে বন্ধ রাখে যাতে প্রস্রাব বেরিয়ে না যায়। এই পেশী ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূত্রনালীর অসংযম হতে পারে।
৫। কিডনিতে পাথর: প্রস্রাব আটকে রাখলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে।