
বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড বেড়ে চলার ফলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত
বায়ুদূষণের দিক থেকে প্রথমেই চলে আসে ঢাকা শহরের নাম। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকাবাসীর যে ফুসফুসের রোগ বাড়বে- এটাই স্বাভাবিক; আর হচ্ছেও তাই।
এ ছাড়া বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন এবং বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড বেড়ে চলার ফলে গত কয়েক দশকে শিশু থেকে বয়স্ক- সব বয়সীদের মধ্যেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বায়ুদূষণ ছাড়া আরও নানা কারণে এই রোগ হতে পারে। যেমন- ফুসফুসে সংক্রমণ, ওয়েদার কন্ডিশন, খাবার ও অ্যালার্জি প্রভৃতি।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে- সাধারণ কিছু ঘরোয়া খাবার দ্রুত অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট কমাতে দারুণ কাজ করে। যখনই দেখবেন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, তখনই উল্লিখিত খাবারগুলোর কোনো একটি খেয়ে নেবেন, দ্রুত ফল মিলবে।
যে খাবরগুলো শ্বাসকষ্ট নিবারণে বিশেষ ভূমিকা রাখে-
আদা: গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি শরীরে থাকা বেশ কিছু উপকারী উপাদান শ্বাসনালির প্রদাহ কমিয়ে ঠিকমতো অক্সিজেন প্রবেশে সহায়তায় ভূমিকা রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসকষ্ট কমতে শুরু করে। এক্ষেত্রে সমপরিমাণ আদার রস, বেদানার রস ও মধু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণটি দিনে ২-৩ বার খেলে উপকার মিলবে।
রসুন: এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। হাঁপানি হলে শ্বাসনালির আশপাশে ফুলে যায়। রসুন শ্বাসনালির প্রদাহ হ্রাস করতে সাহায্য করে এবং হাঁপানির লক্ষণগুলো কমায়। আধা কাপ দুধে দুই-তিন কোয়া রসুন ফেলে ভালো করে ফুটিয়ে হালকা ঠাণ্ডা করে দুধটা খেয়ে ফেলুন। এটি খাওয়ার পর শ্বাসকষ্ট কমে যাবে দ্রুত।
পেঁয়াজ: এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা শ্বাসনালির প্রদাহ কমিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে কাঁচা পেঁয়াজ খেলেই বেশি উপকার মেলে।
সরিষার তেল: শ্বাসকষ্ট কমাতে বাস্তবিকই সরিষার তেল দারুণ কাজ করে। এটি রেসপিরেটারি প্যাসেজ খুলে দেয়। এর ফলে শ্বাস নেওয়ার কষ্ট কমে আসে। অ্যাজমা অ্যাটাক হলেই অল্প করে সরিষার তেল গরম করার পর সেটি অল্প ঠাণ্ডা করে বুকে-পিঠে ভালো করে মালিশ করতে হবে। এতে ধীরে ধীরে লক্ষণ কমে যাবে; সঙ্গে কমবে শ্বাসকষ্ট।
ক্যাফেইন: অ্যাজমার প্রকোপ কমাতে সহায়তা করে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয়। উষ্ণ ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন- কোকো, কফি, ব্ল্যাক টি বা গ্রিন টি শ্বাসনালির মুখ খুলে দেয়। ফলে অক্সিজেন খুব সহজেই ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। থিওফাইলিনের সঙ্গে ক্যাফেইনের অনেক মিল রয়েছে। থিওফিলিন হলো একটি ব্রঙ্কোডিলিটর ড্রাগ, যা হাঁপানির রোগীদের শ্বাসনালি চালু করতে ব্যববহার করা হয়।
মধু: অ্যাজমার চিকিৎসায় মধুর ব্যবহার বহুকাল ধরে হয়ে আসছে। এতে রয়েছে বেশ কিছু উপকারী উপাদান, যা এ রোগের প্রকোপ কমাতে কাজ করে। এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে দিনে তিনবার পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
ডুমুর: এ ফলে এমন একাধিক উপকারী উপাদান রয়েছে, যা ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তিনটি ডুমুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে খালি পেটে ডুমুর ভেজানো পানি ও ডুমুর তিনটি খেলে শ্বাসকষ্ট থেকে আরাম মিলবে।