
ফাইল ছবি
গরমের সময়ে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। কারণ এ সময় বিদ্যুৎ খরচ অন্য সময়ে চেয়ে বেশি হয়। গরমে ফ্যান, এসি, কুলার বেশি ব্যবহার করা হয়। যে কারণে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিলও আসে বড় অঙ্কের। আমাদের শুধু বিদ্যুতের বিল বাঁচাতে হবে এমন নয়, বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করতে হবে। বিদ্যুৎ বেশি খরচ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো কিছু উপায় না জানা। আরেকটু কৌশলী হলেই বিদ্যুৎ খরচ বাঁচানো যাবে অনেকটাই।
আসুন জেনে নিই গরমে বিদ্যুৎ বিল কমানোর কৌশল-
সুইচ বন্ধ রাখা
ফ্যান, বাতি, ইস্ত্রি বা কোনো মেশিন ব্যবহার না করলে সব সময় এগুলোর সুইচ বন্ধ করে রাখা অথবা প্লাগ খুলে রাখা উচিত। কম্পিউটার বা টিভি ব্যবহার না করলে স্লিপ মুডে বা বন্ধ করে রাখুন। এ বিষয় গুলো খেয়াল রাখা হলে বিদ্যুৎ বিল বেশ খানিকটা কমে আসে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার
প্রচলিত বাতির তুলনায় এনার্জি বাল্ব বা এলইডি বাতি ব্যবহার করা হলে বিদ্যুতের ব্যবহার অনেক কমে আসে। যেখানে প্রচলিত একটি বাতি একশো ওয়াট ব্যবহার করে, সেখানে একটি এনার্জি বাতি ব্যবহার করে মাত্র ২৫ ওয়াট। এতে অনেক বেশি সাশ্রয়ী হয়। এছাড়াও এখন ইনভার্টারযুক্ত ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায়। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ বিল দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। আবার যে কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র কেনার সময় স্টার রেটিংয়ে ভরসা রাখুন। কোনো যন্ত্রের স্টার রেটিং বেশি হলে তার ইউনিট বাঁচানোর ক্ষমতাও ততোধিক।
এসির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার
যাদের বাড়িতে এসি আছে, গরমে তাদের বিদ্যুৎ খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। কারণ এসময় গরম তাড়াতে এসি বেশি ব্যবহার করা হয়। যেমনটা শীতের দিনে প্রয়োজন পড়ে না। এরকম ক্ষেত্রে এসি ব্যবহারের আগে ভালোভাবে সার্ভিসিং করিয়ে এবং তাপমাত্রা সেট করে নিন। এতে বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় হবে অনেকটাই। পাশাপাশি এসিতে টাইমার লাগিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করতে পারেন। কারণ এসি চালিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার কিছু সময় পর ঘর শীতল হয়ে যায়। সেজন্য টাইমার সেট করে নিতে পারেন। এতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল থেকে মুক্তি পাবেন।
ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা
অনেক সময় ঘরে ঠিকভাবে আলো প্রবেশ করতে না পারলে দিনের বেলাতেও বাতি জ্বালিয়ে রাখতে হয়। এতে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায় বিদ্যুৎ খরচ। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত যাতে ঘরে ঠিকভাবে আলো প্রবেশ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করুন। সন্ধ্যার পরে জানালা খুলে রাখলে বাইরে থেকে ঠান্ডা বাতাস আসে। এতে এসি বা কুলার ব্যবহারের প্রয়োজন কম হয়।
মানসম্মত তার ব্যবহার
বিদ্যুতের সংযোগ ও তারের ওপর বিদ্যুতের বিল অনেক সময় নির্ভর করে। খারাপ মানের তার হলে, সংযোগ দুর্বল বা নড়বড়ে হলে সেটি লো ভোল্টেজের সৃষ্টি করে, ফলে বিলও বেড়ে যায়। বহুতল ভবনের সাব-স্টেশন পুরাতন হলে সেটি বেশি বিলের কারণ হতে পারে। বছরে অন্তত একবার এসব যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করতে হবে। বাসার এসি ও ফ্রিজের ফিল্টার নিয়মিত সময় পরপর পরিষ্কার করানো হলে সেটি কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।
বিদ্যুতের ইউনিট গুনে রাখুন
প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল দেয়ার পরে বিলের কাগজটি সংরক্ষণ করুন। কত ইউনিট খরচ হয়েছে তা দেখুন। এরপর কোনো মাসে এর থেকে বেশি বা কম ইউনিট খরচ হলে তার কারণ খুঁজে দেখুন। যদি পুরো মাস বাড়িতে থাকার পরেও বিল কম আসে তবে খেয়াল করুন কোন কোন ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়েছে। সেভাবেই বিদ্যুৎ খরচের চেষ্টা করুন।
প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহার
এখন বহুতল ভবনে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলো। যেখানে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে বা বেশি লোডশেডিং হয়, তারাও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি দিনের বেলায় ঘরের ভেতর বাতি না জ্বালিয়ে সূর্যের আলোর সুবিধা নেয়ার প্রবণতা তৈরি করা ভালো। সেটি আবাসিক বিদ্যুতের ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে।