Logo
×

Follow Us

মিডিয়া

‘হাকিম নড়ানো আর হুকুম পাল্টানো সম্পর্কিত ইস্যু’

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২০, ১৪:২৩

‘হাকিম নড়ানো আর হুকুম পাল্টানো সম্পর্কিত ইস্যু’

আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ।

(১)

হাকিম হুকুম এইসব নিয়ে নাড়াচাড়া বিষয়ে ফেসবুকে কোন পোস্ট দিতে চাচ্ছিলাম না। আপনারা সবই জানেন সবই বুঝেন। এরপর এখানে বলার কি আছে! বুনেছেন ডুমুরের গাছ, সেখানে কি চাল কুমড়া ফলবে? 'বিকল্প নাই' যেহেতু, এখন বরং আপনারা ডুমুর গাছ শেওড়া গাছের চেয়ে কত ভালো এবং কেন ভাল সেই নিয়ে মিষ্টি সুবাসিত বাণী প্রদান করতে থাকেন।

আমি বরং আমাদের সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে যারা ভোট দিবেন সেইসব বিজ্ঞ বন্ধুদের উদ্দেশ্যে দুইটা অনুরোধ জানিয়ে রাখি। প্রথম অনুরোধটা হচ্ছে নেতিবাচক অনুরোধ, আর দ্বিতীয়টা হবে ইতিবাচক।

নেতিবাচক অনুরোধ হচ্ছে: যদি জানেন যে প্রার্থী একজন চোর দুর্নীতিবাজ লাইনবাজ তস্কর, তাকে ভোট দিবেন না। আইনজীবীকে ভোট দিবেন, লাইনজীবীকে নয়। কথা কি স্পষ্ট হয়েছে? রাজনৈতিক এলাইনমেন্ট সেটাও জরুরি। কিন্তু প্রার্থীর রাজনৈতিক লাইন আমার পছন্দ বলে আমি একজন লাইনজীবীকে সুপ্রিম কোর্টের বারের নেতা বানাবো? ভেবে দেখুন।

ইতিবাচক অনুরোধ হচ্ছে: সভাপতি পদে এ এম আমিন উদ্দিনকে ভোট দিন। আমিন ভাই ভাল মানুষ, হাসিখুশি সহজ সরল ভদ্রলোক মানুষ। রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে তিনি আপনাকে শত্রু বিবেচনা করবেন না। ভাল প্রার্থী। আমি আমিনভাইকে সমর্থন করি। উনাকে যদি আরেকবার বারের সভাপতি নির্বাচিত করেন তাইলে আমাদের বারের জন্যে ভাল হয়।

(২)

হাকিম নড়ানো আর হুকুম পাল্টানো সম্পর্কিত ইস্যুটাতে আরেকবার ফেরত আসি।

এইরকম কেন হয়? হুকুম পছন্দ হয়নি বলে হাকিমকে চেয়ার থেকে তুলে দিচ্ছে ওরা- এইরকম কাজ করার সাহস পায় কি করে? কারণ আপনারা, মানে কিনা নাগরিকরা গণতন্ত্র চর্চা করেন না। আপনারা যদি গণতন্ত্র চর্চা করেন, তাইলে দেশে গণতান্ত্রিক বিধান কার্যকর থাকবে। আর নাগরিকগণ যদি বিচি বন্ধক দিয়ে রাখেন একজন বা একদল নেতার কাছে তাইলে দেশে গণতন্ত্র থাকবে না। পিরিয়ড।

গণতন্ত্র চর্চার মানে কি? একটা তো হচ্ছে ভোট দেওয়া। ভোট হবে, কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন। এইটা গণতন্ত্রের একটা অংশ বটে। কিন্তু এই ভোটাভোটিটাই গণতন্ত্র নয়। আরও আছে। খালি খালি মাংস দিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানি হয়না, চাল লাগে আলু লাগে মশলা লাগে আরও কত উপাদান। আর সব উপাদানের একসাথে করলেও হবে না- আগুন লাগে। আগুন।

গণতন্ত্রে ভোটটাকে ধরতে পারেন খাসীর মাংসের টুকরা। অন্যান্য উপাদান মিলাতে হয়। মিলাতে হয় সুষম পরিমিত হারে। তারপর আগুনে পাকাতে হয়। কিন্তু এমনিতে জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো বলে আগুন জ্বালিয়ে দিলেই হয় না। আগুন হতে হয় ওয়েল ডাইরেক্টেড। নাইলে আধা খেঁচড়া হয়ে যাবে।

আপনারা বুদ্ধিমান। সবকিছু ব্যাখ্যা করার দরকার নাই।

(৩)

অধিকার পাহারা দিতে হয়। ন্যায় বিচারও আপনার অধিকার। সেটাকেও পাহারা দিতে হয়। চৈত্র মাস এসে গেল বলে। আপনার কাঁঠাল গাছ থেকে একটা মুছি পারলে তো আপনি লাথি নিয়ে তাড়া করবেন। করবেন না? অধিকারের গুরুত্ব কি কাঁঠালের মুছির চেয়ে কম কিছু?

এনিওয়ে। আপনারা ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন, নিন্দা ফিন্দা করছেন। সেগুলিও গুরুত্বপূর্ণ। এইরকম কাণ্ড কারখানা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছেন, সেটাও ভালো। কিন্তু এইগুলি ততক্ষণই কার্যকর যতক্ষণ পর্যন্ত চোরদের চক্ষুলজ্জা থাকে। চোর যদি দুই কান কাটা হয় তাইলে উনাদের জন্যে তো এইসব তীব্র নিন্দা আর রঙ্গ রসিকতা কার্যকর হবে না। উনারা চুরি করে বীর দর্পে সমাজের মাঝখানে এসে বসবেন। তখন কি দরকার?

থাক, এখানেই থামি। মুখ দিয়ে মোটা কথা চলে আসছে। আবার কখন কি কথা বলে কোন ঝামেলায় পড়ি। ভাল থাকবেন সকলে।


লেখাটি আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া হয়েছে। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫