-642425fe0df37.jpg)
দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া (৩৬) নামের এক ব্যক্তি।
থানায় নথিভুক্ত হওয়া এজাহার অনুযায়ী বাদীর পরিচয়ে লেখা হয়েছে তিনি ঢাকার কল্যাণপুরের বাসিন্দা। তিনি যুবলীগের ঢাকা মহনগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
এজাহারে লিখা হয়েছে, ‘আমি গত ২৯/০৩/২০২৩ তারিখ রাত (মঙ্গলবার দিবাগত রাত) অনুমান ০১.৩২ ঘটিকার সময় ব্যক্তিগত কাজে তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেটস্থ আল রাজী হাসপাতালের সামনে অবস্থানকালে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ব্রাউজ করার সময় দেখতে পাই যে, গত ২৬ মার্চ (২০২৩) মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। একই সাথে উক্ত সংবাদটি প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজে প্রথম আলো পত্রিকা অফিস থেকে শেয়ার করে। উক্ত সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি, সেই শিশুটির নাম জাকির হোসেন। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলেছে, ‘‘পেটে ভাত না ফুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।” সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়।’
বাদীর অভিযোগ করে লিখেন, উক্ত সংবাদটি দেশে–বিদেশে হাজার হাজার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এই ঘটনায় মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের গৌরবউজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে জনগণসহ বহিঃবিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে একাত্তর টেলিভিশন চ্যানেল ও তাদের অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। যে শিশুটির কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। নাম পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রথম আলোর এই খবর বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাদী মামলাটি করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (২৬ মার্চ) দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশের সময় দিনমজুর জাকির হোসেনের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি ‘কার্ড’ প্রকাশ করা হয়। সেখানে উদ্ধৃতিদাতা হিসেবে দিনমজুর জাকির হোসেনের নাম থাকলেও ছবি দেওয়া হয় একটি শিশুর।
তবে অসঙ্গতির বিষয়টি নজরে আসলে তা প্রত্যাহার করে নেয় প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি প্রতিবেদন সংশোধন করে সংশোধনীর বিষয়টি উল্লেখসহ আবারও অনলাইনে প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনটির প্রতিবেদক ছিলেন শামসুজ্জামান। তাকে আজ বুধবার ভোর ৪টার দিকে তার সাভারের বাসা থেকে সিআইডির পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়।