রবিবার (১৩ আগস্ট) পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের এক সিনিয়র সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। প্রদেশটির শুক্কুর জেলার কুইন্স রোডে অবস্থিত সেইন্ট সেভিয়র স্কুলের কাছে মোটরসাইকেলেযোগে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি তার ওপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এ সময় মেহের তার গাড়িতে ছিলেন। তার মাথা ও চোখের কাছে বেশ কয়েকটি বুলেট বিদ্ধ হয়।

এদিকে এ ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে) ও পাকিস্তান ফেডারেল অউনিয়ন অব জার্নালিস্টস (পিএফইউজে) সাংবাদিক মেহের হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শিগগির শাস্তির ব্যাপারে দাবি জানিয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, জান মোহাম্মদ মেহের কাউইশ টেলেভিশন নেটওয়ার্কের (কেটিএন)  শুক্কুর জেলার ব্যুরো প্রধান ছিলেন। ঘটনার দিন রাত ৯ টায় নিজ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার এক সহকর্মী জানান, হামলার সময় মেহের তার নিজ গাড়িএ ভেতরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় পাশ থেকে এক মোটর সাইকেলে থাকা সন্ত্রাসীরা মেহেরের গাড়ি লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউণ্ড গুলি ছোঁড়ে। এ সময় মেহেরকে প্রাথমিকভাবে নিকটস্থ সিভিল হাসপাতালে নেয় হলেও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওখানেই অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। 

এদিকে এখনও ঘটনার বিষয়ে পুলিশ কোনো এফ আই আর করতে পারেনি বলে জনিয়েছে শুক্কুর জেলা পুলিশের সিনিয়র এসপি সিংহার মালিক। এক সাক্ষাৎকারে পুলিশের ওই এসপি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। 

মালিক বলেন, ঘটনার পর পুরো এলকা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহে কাজ শুরু করেছে আইন শৃংখলা বাহিনী। 

এদিকে পিএফইউজে হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে তাদের তদন্ত শুরু করেছে। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ বলছেন, আমরা সিন্ধ প্রদেশের সরকার ও পুলিশ প্রধানের কাছে অনতিবিলম্বে হামলাকারীর গ্রেপ্তার ও ক্ষতিগ্রস্তের পরিবারের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। 

অন্যদিকে আইএফজে’র জেনারেল সেক্রেটারি অ্যান্টনি বেলাংগার বলেন,  এমন ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও বিচারসহ আর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। 

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দ্যা আইএফএজে সাউথ এশিয়া প্রেস ফ্রিডম ২০২২-২৩ এ প্রকাশিত সংস্থাটির এক রিপোর্টে পাকিস্তানে অন্তত ১০১ জন সাংবাদিক নিহত হওয়ার তথ্য প্রকাশ করে।  ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচজন সাংবাদিক ২০২২ সালের ১ মে হতে ২০২৩ সালের ৩১ এপ্রিলের মধ্যে নিহত হন। এরপর আরও ৩০ টি হামলার ঘটনা ঘটে মেট্রোপলিটন ও পল্লী অঞ্চলে।  

সূত্র: ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে)