
হাবিবুর রহমান খানের অকাল প্রয়াণে দোয়া ও স্মরণসভা। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার হাবিবুর রহমান খানের অকাল প্রয়াণে দোয়া ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় যুগান্তর কার্যালয়ের বোর্ড রুমে এ সভার আয়োজন করা হয়।
এতে হাবিবুর রহমান খানের নানা স্মৃতি স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তার সহকর্মীরা। দৈনিক যুগান্তরের প্রতি তার প্রতিজ্ঞা, কাজের প্রতি আগ্রহ ও ডেডিকেশনের কথা স্মরণ করে অনেক সহকর্মী চোখের পানি ছেড়ে দেন।
হাবিবের কর্ম ও মানবিক গুণাবলীগুলো তাকে বহু দিন বাঁচিয়ে রাখবে—এমনটিই ফুটে উঠেছে স্মরণসভায় বক্তাদের বক্তব্যে।
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান, যুগান্তরের প্রকাশক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালাম ইসলাম এমপি। হাবিুর রহমানের পেশাদারিত্ব, সাহসী সাংবাদিকতা, সততা ও অনন্য মানবিক গুণাবলীর প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম।
হাবিবুর রহমান খানের স্মৃতিচারণ করে যুগান্তর প্রকাশক সালমা ইসলাম বলেন, হাবিব একজন কর্মনিষ্ঠ সাংবাদিক ছিলেন। শুধু তাই নয়; তার প্রতিটি প্রতিবেদনে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া ছিল। কোনো পক্ষপাতিত্ব ছিল না। যেটি সত্যি সেটিই তার প্রতিবেদনে উঠে আসত। এত বছর তিনি যুগান্তরে কাজ করেছেন কোনোদিন ব্যক্তিগত কোনো সুপারিশ নিয়ে আমার কাছে আসেননি। যুগান্তরের প্রতি তার আলাদা ভালোবাসা ও টান ছিল। তার মৃত্যুতে যুগান্তর পরিবার আজ শোকাহত। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। তার পরিবারের সঙ্গে আমরা সমব্যাথী। যুগান্তর হাবিবের পরিবারের পাশে থাকবে। তার স্ত্রী সন্তানদের পাশে থাকবে।
যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, একজন মানুষ কোনো রাজনৈতিক আদর্শ ধারণ করলে কাজের ক্ষেত্রে সেটির প্রতিফলন ঘটে। হাবিব ছিলেন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তার প্রতিবেদনগুলো ছিল পক্ষপাতমুক্ত। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চর্চা আমৃত্যু করে গেছেন হাবিব। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি যুগান্তরের সঙ্গে ছিলেন। মারা যাওয়ার দিন তার শেষ যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে সেটি পড়লে যে কেউ বুঝবেন কাজের প্রতি কতটা সততা ও ডেডিকেশন ছিল তার।
যুগান্তর সম্পাদক বলেন, হাবিবের প্রতিবেদন সম্পাদনা করা লাগত না। তার যে কোনো প্রতিবেদনে আস্থা রাখা যেত। কাজের প্রতি দরদ না থাকলে এমনটি হওয়া সম্ভব না। সে ছিল যুগান্তরের প্রতি অন্তপ্রাণ একজন মানুষ। সে সপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিসে আসত, মিটিংয়ে অংশ নিত।
সাইফুল আলম বলেন, ৪২ বছর সাংবাদিকতায় আমি অনেক মৃত্যু দেখেছি। আমাকে অনেক মৃত্যু কাঁদিয়েছে। তবে হাবিবের মৃত্যু আমাকে অনেক বেশি ব্যাথিত করেছে। হাবিব একজন ভালো মানুষ ছিলেন, পাশাপাশি ভালো সাংবাদিক ছিলেন। এর প্রমাণ হচ্ছে- তার মৃত্যুর পর পুরো অফিসে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। এখনো সেই শোকের রেশ কাটেনি। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিমের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় হাবিবুর রহমান খানের স্মৃতি স্মরণ করে আরও বক্তৃতা করেন দৈনিক যুগান্তরের যুগ্মসম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, উপসম্পাদক আহমেদ দীপু, এহসানুল হক ও বিএম জাহাঙ্গীর, প্রধান বার্তা সম্পাদক আবদুর রহমান, নগর সম্পাদক মিজান মালিক।
যুগান্তরের সিনিয়র সাংবাদিক, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও হাবিবুর রহমান খানের সহকর্মী প্রতিবেদকরা তার স্মৃতি স্মরণ করেন। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
২২ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টায় হাবিবুর রহমান খান হার্টঅ্যাটাক করে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪২ বছর।