
টিভি সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথন। ছবি: সংগৃহীত
শনিবার দিল্লি আদালত এক রায়ে ২০০৮ সালে ২৫ বছর বয়সী টিভি সাংবাদিক সৌম্যা বিশ্বনাথনকে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন ও অপর এক আসামিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, রাভি কাপুর, অমিত শুক্লা, বালজিত মালিক ও অজয় কুমার। তারা সকলেই ভিকটিমকে সরাসরি হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে অপর পঞ্চম আসামি হত্যার সময় সাহায্য করার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ৩০২ ও ৩৪ ধারা এবং মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অব অরগানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট (মোকা)’র অধীনে এ রায় প্রদান করেন আদালত।
এ সময় আদালত জানিয়েছে, যেহেতু অপরাধটি ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ নয়, তাই অপরাধীদের ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হলো। রায় দেওয়ার সময় আদালত আরো জানিয়েছেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, সৌম্যার মতো তরুণ, গতিবান ও কঠোর পরিশ্রমী এক সাংবাদিককে প্রাণ হারাতে হয়েছে। ভারতে নারীদের কাজে অংশগ্রহণের পরিমাণ কমার অন্যতম একটি কারণ হলো নিগ্রহ।
এ সময় যাবজ্জীবন প্রাপ্ত চার আসামিকে আদালত ১ লাখ ২৫ হাজার রুপি করে জরিমানা আদায়েরও আদেশ দেন।
অন্যদিকে অপর পঞ্চম আসামি অজয় শেঠিকে আইপিসি ৪১১ ধারা মোতাবেক তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশপাশি ৭ লাখ ২৫ হাজার রুপি জরিমানা আদায়ের আদেশ দেন। আদালত শেঠির বিষয়ে বলেন, বিচার শুরু হওয়ার সময় থেকেই তিনি ইতোমধ্যে ১৪ বছরেরও বেশি সাজাভোগ করেছেন। এদিকে আদালত আসামির পরিবারদের সৌম্যার পরিবারকে মোট ১২ লাখ রুপি ক্ষতিপূরন দিতে আদেশ দিয়েছেন।
বিশ্বনাথন বর্তমানের ‘নাউ ইন্ডিয়া টুডে’ (সাবেক হেডলাইন্স)’এ কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার দিন ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে দক্ষিণ দিল্লির নেলসন ম্যান্ডেলা রোডে তার নিজ গাড়িতে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সেসময় অফিস থেকে কাজ শেষে আনুমানিক রাত ৩ টা ২৫ মিনিট থেকে ৩ টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে বাসায় ফিরছিলেন বিশ্বনাথন।
পরে পুলিশ তদন্ত করে জানায় মূলত তার গাড়িটি ডাকাতি করতেই আসামিরা হামলা চালিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে। পুলিশ জানায়, মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে হাতের ট্যাটু ও এক পুলিশ কর্মীর চুরি যাওয়া ওয়্যারলেস সেট। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজও দোষীদের খুঁজে পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এদিক রায় ঘোষণার পর বিশ্বনাথনের মা মাধাবি বিশ্বনাথন এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর অপেক্ষা করেছিলাম এই দিনটার জন্য। আমি এ রায়ে সন্তুষ্ট কিন্তু আনন্দিত নই। এসবের কোনও কিছুই আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের কৌসূলি অমিত কুমার এ রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চআদালতে আপিল করবেন বলে গণমাধ্যমকে জানান।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস