বসুন্ধরার মিডিয়া থেকে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৫৮

ছবি: সংগৃহীত
পাওনা টাকার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে বসুন্ধরার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান দৈনিক কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান-এর চাকরিচ্যুতরা। পাওনার দাবিতে এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ‘চেক প্রতারণার’ প্রতিবাদে আজ বুধবার (৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন দেড় শতাধিক সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী।
কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন।
সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা তাদের বক্তব্যে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পাওনা পরিশোধের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, আর একাধিক চেক নয়; এখন এক চেকেই প্রতিজনের পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে।
অন্যথায় আগামী দিনে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা। এর অংশ হিসেবে আগামী রবিবার (৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে।
মানববন্ধনে পাওনা আদায় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক আলিমুজ্জামান বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়ার প্রতিষ্ঠান দৈনিক কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান-এ দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলাম আমরা। এই চাকরিচ্যুতদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাদের হাত দিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটি আলোর মুখ দেখেছে। অথচ বিনা নোটিশে কোনো কারণ না দর্শিয়েই বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ আমাদের কাউকে চাকরিচ্যুত এবং কাউকে অব্যাহতি দিয়েছে।
‘বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি আমাদের যথাযথ সম্মান রয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে পাওনা বুঝে পেতে। কিন্তু তারা যে চেক দিয়েছে তা বাউন্স হয়েছে। এ নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কোনো সদুত্তর দিচ্ছেন না, বিষয়টির সুরাহাও করছেন না। এ অবস্থায় রাজপথে দাঁড়িয়ে বিষয়টি রাষ্ট্রকে জানান দেয়া ছাড়া আমাদের সামনে বিকল্প ছিল না।’
গ্রুপটির সংশ্লিষ্টরা চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পাওনা অতি দ্রুত পরিশোধ করে বসুন্ধরার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই কর্মসূচিতে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকরা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকাধীন দৈনিক কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান পত্রিকা কর্তৃপক্ষ গত বছরের অক্টোবর মাসে শতাধিক সংবাদকর্মীকে বিনা নোটিশে ছাঁটাই করে। এর আগে অনেক সাংবাদিককে কোনো ধরনের আগাম নোটিশ ছাড়াই চাকরিতে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়।
বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ সে সময় আশ্বস্ত করেছিল যে সার্ভিস বেনিফিটের অর্থ অতি দ্রুত পরিশোধ করা হবে। কিন্তু তারা সে কথা রাখেনি। চাকরি হারানো সাংবাদিকদের কেউ কেউ তিন বছরেরও বেশি সময় বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষের কাছে পাওনা চেয়ে প্রতিকার পাননি।
বক্তারা বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় শ’ সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিলে বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। এরই ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ নিজেদের ইচ্ছামতো হিসাব দাঁড় করিয়ে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের প্রত্যেকের পাওনা দশ ভাগে বিভক্ত করে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে দশ মাসে পরিশোধযোগ্য দশটি চেক দেয়।
চেকগুলো ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য প্রতি মাসের বিভিন্ন তারিখ উল্লেখ করে দেয়া হয়। সে অনুযায়ী ব্যাংকে চেক জমা দিলে ওই একাউন্টে টাকা না থাকায় জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের চেক ডিজঅনার হয়।
বিষয়টি নিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক পক্ষের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সদুত্তর মেলেনি।