স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা থাকলেও মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। 

তিনি বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিল না। কারণ তিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে স্যারেন্ডার করেন। পরবর্তী সময়ে তার পরিবারকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী খাইয়েছে, পরিয়েছে; তাদের দেখভাল করেছে। কাজেই মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো ভূমিকা ছিল- এটা ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে আমি মানতে রাজি না।’

আজ রবিবার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ডায়লগ ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদী বয়ান নির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা : একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা শুরু হয়। সবাইকে বাদ দিয়ে এক ব্যক্তির বন্দনা শুরু হয়। যে ব্যক্তির স্বাধীনতাসংগ্রামের যে স্টেজ সেখানে ভূমিকা ছিল, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিল না, সেই ব্যক্তির নাম শেখ মুজিবুর রহমান।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের যে চরিত্রগুলো তাদের আস্তে আস্তে মেরে ফেলা হলো। যেমন মুক্তিযুদ্ধের চরিত্র যদি আমি বলি, জিয়াউর রহমান, তিনিই প্রথমে যুদ্ধটা শুরু করেছিলেন। যেটাকে মুক্তিযুদ্ধ বলি। মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র জেনারেল ওসমানী। তিনি প্রধান সেনাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র মওলানা ভাসানী। মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র তাজউদ্দীন আহমদ। কারণ তিনি প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র সৈয়দ নজরুল, তিনি অস্থায়ী সরকারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাদের নাম কিন্তু মুছে গেল। মুছে গিয়ে ১৯৭২ সালে একটা নামের বন্দনা শুরু হয়ে গেল- শেখ মুজিবুর রহমান।’

গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পুরো আমলে বেশির ভাগ গণমাধ্যম ও সংবাদপত্র ফ্যাসিবাদী সরকারের লক্ষ্যে কাজ করেছে। কিছু মূলধারার মিডিয়া ফ্যাসিবাদের পক্ষে ন্যারেটিভ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের দেশে ভারতীয় আধিপত্যের সমর্থনে মিডিয়াও ভূমিকা পালন করেছে। মিডিয়া ফ্যাসিবাদী সরকারের অনেক অপরাধের বৈধতা দিয়েছে।’