ইলন মাস্কের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ ছাড়ল গার্ডিয়ান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:১০

ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য গার্ডিয়ান’ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ কোনো কিছু পোস্ট বা শেয়ার করবে না। ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে তারা এখন থেকে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ কোনো কিছু পোস্ট বা শেয়ার করবে না। গতকাল (১৩ নভেম্বর) এ বিষয়টি জানায় দ্য গার্ডিয়ান।
তবে পাঠকরা চাইলে তাঁদের কোনো কনটেন্ট আগের মতোই এক্স-এ শেয়ার করতে পারবে।
যুক্তরাজ্যের মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গার্ডিয়ানই প্রথম যারা এক্স ছাড়ার ঘোষণা দিল। এক্স প্ল্যাটফর্মে গার্ডিয়ানের অনুসারী (ফলোয়ার) সংখ্যা ১ কোটি ৭ লাখ।
উল্লেখ্য, ‘দ্য গার্ডিয়ান’ নামের এই ব্রিটিশ দৈনিকটি উদারপন্থী সম্পাদকীয় নীতি অনুসরণ করে থাকে।
এখন সবার মনে প্রশ্ন কোটিরও বেশি ফলোয়ার রেখে ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাবার সিদ্ধান্ত কেন নিল দ্য গার্ডিয়ান।
পাঠকদেরকে কারণটা জানাতে গতকালই ‘কেন গার্ডিয়ান আর এক্স-এ পোস্ট করছে না’ শিরোনামে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করে গার্ডিয়ান।
সেখানে দাবি করা হয়, বর্ণবাদী ও ষড়যন্ত্র তত্ত্বের মতো ‘ডিসটার্বিং কনটেন্ট’ এক্স-এ অবাধে প্রকাশিত হয়। একারণে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটিকে ‘টক্সিক প্ল্যাটফর্ম’ (বিষাক্ত প্ল্যাটফর্ম) হিসেবে আখ্যায়িত করেছে গার্ডিয়ান।
এক্স প্ল্যাটফর্মে থাকার ইতিবাচক দিকের চেয়ে নেতিবাচক দিক বেশি বলেই মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি। সে কারণেই এক্স ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানায় গার্ডিয়ান।
গার্ডিয়ান বলছে, ‘আমরা মনে করি যে এক্সে থাকার সুবিধার চেয়ে এর নেচিবাচক প্রভাব অনেক বেশি এবং আমাদের সাংবাদিকতার প্রচারে রিসোর্সগুলো অন্য প্ল্যাটফর্মে আমরা আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারি’।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে টুইটার কিনে নেয় বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। পরবর্তীতে নিজের মালিকানাধীন স্পেসএক্স এর সাথে মিল রেখে তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটির নাম রাখেন ‘এক্স’।
আমেরিকার সদ্যসমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের হয়ে সক্রিয়ভাবে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন ইলন মাস্ক।
শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের হয়ে প্রচারণায় তিনি এক্স প্ল্যাটফর্মটিকেও ব্যবহার করেছেন কোনো রাখঢাক না রেখেই। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারণা চালাতে গিয়ে নিজের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে করার পোস্টে অনেকবার মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন এবং অতি ডানপন্থী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করেছেন।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় ইলন মাস্ক ১৩২ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ করেছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য এর পুরষ্কারও তিনি পেয়েছে। নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের পর পরই প্রথমবারের মতো তাঁর বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার বাজার মূল্য প্রথমবারের মতো ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যায়। নির্বাচনের ট্রাম্পের জয় লাভের পর থেকে গত প্রায় ১০ দিনে মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ৭০ বিলিয়ন ডলার।
তাছাড়া গতকাল ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন তার প্রশাসনে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (সংক্ষেপে ‘ডোগ’) নামে যে নতুন একটি বিভাগ চালু করতে যাচ্ছেন তিনি, সেখানে ভিভেক রামাস্বামীকে সাথে নিয়ে নেতৃত্ব দিবেন ইলন মাস্ক।