
মেহেরুন রুনি ও সাগর সারোয়ার। ফাইল ছবি
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তের আরও ছয় মাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সকে আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে বিভিন্ন এজেন্সির অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তদন্ত শেষে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
আদালতে বাদীপক্ষে ছিলেন শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।
পরে শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন কোর্টে উপস্থাপন করা হলে আমাকেও সে প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে। অগ্রগতি প্রতিবেদন দেখে আমারও মনে হয়েছে এ মামলার তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সব তথ্য গণমাধ্যমের সঙ্গে এখনই শেয়ার করা যাবে না। তারা ৯ মাস সময় চেয়েছিল, আদালত ছয় মাস সময় দিয়ে আগামী ২২ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করে দিয়েছেন।
নথি পুড়ে গেছে আদালতে এমন বক্তব্য দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নথি পোড়ানোর কথা বলেনি। নথি পোড়েনি, গায়েবও হয়নি। আমি কোর্টে পোড়ানো বিষয়ে কোনো শব্দই উচ্চারণ করেননি। কোনো নথি হারায়নি, নথি আছে। তদন্ত চলছে। কিন্তু তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব কিছু বলা সম্ভব নয়।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের দেওয়া এক আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। তদন্তের জন্য মামলাটি র্যাবের কাছে পাঠানোর এই আদেশ সংশোধন চেয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের পক্ষে গত সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। এর শুনানি নিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিষয়টি আদেশের জন্য ওঠে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি। সাগর সে সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছিল র্যাব।
তদন্ত প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা নিহত সাংবাদিক দম্পতির পরিবার এবং পেশাজীবীদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এ মামলার দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
বর্তমানে মামলাটি উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স তদন্ত করছে।